মঙ্গোলিয়া কানজুর পান্ডুলিপির প্রথম পাঁচটি পুনঃ-মুদ্রিত খন্ড প্রকাশিত হয়েছে

Published By: Khabar India Online | Published On:

খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, নয়াদিল্লিঃ কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রক ‘জাতীয় পান্ডুলিপি প্রকল্প’ (এনএমএম)-এর আওতায় মঙ্গোলিয়া কানজুরের ১০৮টি খন্ড পুনরায় প্রকাশ করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এই এনএমএম প্রকল্পের আওতায় আজ মঙ্গোলিয়া কানজুর পান্ডুলিপির প্রথম ৫টি পুনঃ-মুদ্রিত খন্ড প্রকাশিত হয়েছে। এই খন্ডগুলি গত চৌঠা জুলাই ধর্মচক্র দিবস উপলক্ষ্যে গুরু পুর্ণিমার অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি শ্রী রামনাথ কোবিন্দের হাতে প্রদান করা হয়েছিল। ভারতে নিযুক্ত মঙ্গোলিয়ার রাষ্ট্রদূত মিঃ গনচিং গ্যানবোল্ড এরপর সেই পান্ডুলিপির খন্ডগুলি সংস্কৃতি মন্ত্রকের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী শ্রী প্রহ্লাদ সিং প্যাটেল এবং সংখ্যালঘু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী শ্রী কিরেন রিজিজুকে হস্তান্তর করেন।

আশা করা যাচ্ছে মঙ্গোলিয়া কানজুরের ১০৮টি খন্ড ২০২২ সালের মার্চের মধ্যে প্রকাশিত হবে।

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ধর্মচক্র দিবসের অনুষ্ঠানে তাঁর ভাষণে জানিয়েছিলেন ‘গুরু পূর্ণিমার এই দিনে আমরা ভগবান বুদ্ধকে শ্রদ্ধা জানাই। এই অনুষ্ঠানে মঙ্গোলিয়া কানজুরের পান্ডুলিপিগুলি মঙ্গোলিয়া সরকার উপহার স্বরূপ প্রদান করছে। মঙ্গোলিয়া কানজুরকে মঙ্গোলিয়ায় বিশেষভাবে শ্রদ্ধা জানানো হয়।’

আরও পড়ুন -  কোলাপুরের গৃহবধূ কবিতা চাওলা, KBC 14 এর প্রথম কোটিপতি, কে এই কবিতা চাওলা?

পান্ডুলিপিতে উল্লেখিত জ্ঞানের তথ্য সংরক্ষণ ও প্রচারের উদ্দেশ্যে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি ও পর্যটন মন্ত্রক ২০০৩ সালের ফেব্রুয়ারীতে ‘জাতীয় পান্ডুলিপি প্রকল্প’ চালু করেছিল। এর অন্যতম উদ্দেশ্যই ছিল বিরল ও অপ্রকাশিত পান্ডুলিপি প্রকাশ করা, যাতে সেগুলির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত জ্ঞান গবেষক, পন্ডিত ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। এই প্রকল্পের আওতায় মঙ্গোলিয়া কানজুরের ১০৮টি খন্ড পুনরায় প্রকাশ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। আশা করা যাচ্ছে ২০২২ সালের মার্চের মধ্যে সমস্ত খন্ড প্রকাশিত হবে। বিশিষ্ট পন্ডিত অধ্যাপক লোকেশ চন্দ্রের তত্ত্বাবধানে এই কাজটি করা হচ্ছে।

মঙ্গোলিয়া কানজুরের ১০৮টি খন্ডে বৌদ্ধ ধর্মের বাণীগুলি উল্লেখিত আছে। এই গ্রন্থটি মঙ্গোলিয়ায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় পাঠ হিসেবে বিবেচিত হয়। মঙ্গোলিয় ভাষায় ‘কানজুর’এর অর্থ হল ‘সংক্ষিপ্ত আদেশ’, বিশেষত ভগবান বুদ্ধের বাণী। এটি মঙ্গোলিয়ান বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কাছে অত্যন্ত সম্মানের সঙ্গে রাখা থাকে। তারা মন্দিরে কানজুরের উপাসনাও করে থাকেন। মঙ্গোলিয়া কানজুরটি তিব্বতি থেকে অনুবাদ করা হয়েছে। কানজুরের ভাষাটি হল ধ্রুপদী মঙ্গোলিয়ান। মঙ্গোলিয়া কানজুর মঙ্গোলিয়ার সংস্কৃতির পরিচয় বহন করে নিয়ে চলে।

আরও পড়ুন -  Web Series: বোনের দেওরের সাথে ঘনিষ্ঠ, প্রাইভেসি বজায় রেখে দেখবেন এই সাহসী ওয়েব সিরিজ

সমাজতান্ত্রিক আমলে কাঠের উপর খোদায় করা পান্ডুলিপির চিত্রগুলি আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল এবং সন্ন্যাসীদের মঠগুলি পবিত্র এই ধর্মগ্রন্থকে রক্ষা করতে পারেননি। ১৯৫৬-৫৮ সালে অধ্যাপক রঘু বীরা দুষ্প্রাপ্য কানজুর পান্ডুলিপির মাইক্রোফিল্ম কপি উদ্ধার করেন এবং সেগুলিকে ভারতে নিয়ে আসেন। তারপর রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ অধ্যাপক লোকেশ চন্দ্র ১৯৭০ সালে ভারতে মঙ্গোলিয়া কানজুরের ১০৮টি খন্ড প্রকাশ করেন। এখন এনএমএম প্রকল্পের আওতায় ভারত সরকারের কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রক বর্তমান হস্তান্তরিত সংস্করণটি প্রকাশ করবে। যার প্রতিটি খন্ডে মঙ্গোলিয়া সূত্রের মূল শিরোনাম নির্দেশ করে, এমন সামগ্রীর একটি তালিকা থাকবে।

আরও পড়ুন -  Son-In-Law: টেক্কা দিচ্ছে হিমসাগর ! রাত পেরোলেই জামাই ষষ্ঠী

ভারত এবং মঙ্গোলিয়ার মধ্যে ঐতিহাসিক যোগসূত্র রয়েছে। বৌদ্ধ ধর্মকে ভারত থেকে মঙ্গোলিয়ায় প্রসার লাভ করে এবং খ্রীষ্টীয় যুগের আগে ধর্মীয় রাষ্ট্রদূতও নিয়োগ করা হয়। এর ফলস্বরূপ আজ বৌদ্ধরা মঙ্গোলিয়ায় এক বৃহত্তর ধর্মীয় সম্প্রদায় গঠন করেছে। ১৯৫৫ সালে ভারত মঙ্গোলিয়ার সঙ্গে প্রাথমিকভাবে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে। তখন থেকেই উভয় দেশের মধ্যে এক অপ্রতিরোধ্য সম্পর্ক গড়ে উঠে, যা এখন নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। এখন মঙ্গোলিয়া সরকারের হয়ে ভারত সরকার যে মঙ্গোলিয়া কানজুর প্রকাশিত করছে তা ভারত ও মঙ্গোলিয়ার মধ্যে সাংস্কৃতিক সম্পর্কের প্রতীক হিসেবে কাজ করবে এবং আগামী দিনে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অগ্রগতিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করবে। সূত্র – পিআইবি।