অস্ট্রেলিয়ার আগুনে ঝলসে ছাই হলো ইংল্যান্ড। সেই ছাই সাজিয়ে নিজেদের শোকেসেই রেখে দিলো অস্ট্রেলিয়া। মেলবোর্নে অ্যাশেজের তৃতীয় টেস্টের চতুর্থ দিনে সকালের চিত্র।
অস্ট্রেলিয়ার মাত্র ৮২ রানের লিডও পেরোতে পারলো না ইংল্যান্ড। পাঁচদিনের টেস্টে চতুর্থ দিন সকালেই ইংল্যান্ডের হার ইনিংস ও ১৪ রানে। নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ইংলিশরা যে অলআউট মাত্র ৬৮ রানেই। ব্রিসবেনের পর অ্যাডিলেড হয়ে মেলবোর্ন, অ্যাশেজের চিত্র আর বদলালো না। তিন টেস্টেই একচেটিয়া আধিপত্যে ৩-০ তে সিরিজ জিতে নিলো ক্যাঙ্গারুরা।
ঠিক অস্ট্রেলিয়া যেমন তেমন, ইংল্যান্ড ছাই হয়েছে এক স্কট বোল্যান্ডের কাছেই। অভিষিক্ত এই পেসার প্রথম ইনিংসে নিয়েছিলেন মাত্র ১ উইকেট। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে একাই তুলে নিলেন ৬ উইকেট। ইংলিশদের সিলেবাসে ছিলো কামিন্স-স্টার্ক। কিন্তু সিলেবাসের বাইরে থেকে আসা বোল্যান্ডের বোলিংয়ের কোনো উত্তরই ছিলো না ইংলিশ ব্যাটসম্যানদের কাছে।
প্রথম দুই টেস্টে ব্যাটিং-বোলিং দুই বিভাগেই ভরাডুবি হওয়া ইংল্যান্ডের এই টেস্টের শুরুটাও হয়েছিলো সেই একই চিত্রের ইঙ্গিত দিয়েই। মেলবোর্ন টেস্টের আগে বরং ইংল্যান্ড অধিনায়ক দুষেছিলেন দলের বোলারদের। রুটের কথার জবাব দিতেও দেরি করেননি ইংলিশ পেসারদের অভিভাবক জেমস অ্যান্ডারসন। মেলবোর্ন টেস্টের শুরুতে ব্যর্থতার শুরু ব্যাটিং দিয়েই। এদিনও অজি পেসারদের সামনে দাড়াতেই পারেনি ইংলিশ ব্যাটিং লাইনআপ। প্রথম ইনিংসে অলআউট হয়েছিলো ১৮৫ রানেই।
মেলবোর্নে আশার আলো হয়ে দেখা দিয়েছিলেন নিজেদের ক্যাপ্টেনের কাছে দুয়ো শোনা ইংল্যান্ডের বোলাররাই, মূল কাজটা করেছিলেন সেই অ্যান্ডারসনই। অস্ট্রেলিয়াকে অলআউট করে দেয় ২৬৭ রানেই, যা এই সিরিজে এখন পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার সর্বনিম্ন দলীয় ইনিংস।
মাত্র ৮২ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং শুরু করা ইংল্যান্ডের ব্যাটাররা আবারও ব্যর্থ। তৃতীয় দিন বিকেলের শেষ সেশনে মাত্র ৩১ রানেই ইংল্যান্ড হারিয়ে ফেলে ৪ উইকেট। স্টার্ক আর বোল্যান্ড দুজনেই নেন দুটি করে উইকেট। দিনের খেলা শেষে ইংল্যান্ডের হার যেন মনে হচ্ছিলো শুধু সময়ের ব্যবধান। ইংল্যান্ডের চ্যালেঞ্জ ছিলো অজিদের মাত্র ৮২ রানের লিড পার করে ইনিংস ব্যবধানে হার এড়ানো।
চতুর্থ দিন সকালে সেই শঙ্কাকে সত্যি করে ইংল্যান্ড হেরে বসলো ইনিংস আর ১৪ রানে। সকালে ব্যাটিংয়ে নেমে মাত্র ৮১ বলেই শেষ ইংল্যান্ডের বাকি ৬ উইকেট। সকালে বেন স্টোকসের উইকেট নিয়ে শুরুটা করেছিলেন স্টার্ক। এরপর যেন চিত্রটা শুধুই বোল্যান্ডের। আগেরদিন ২ উইকেট নেয়া এই পেসার এদিন নিয়েছেন আরও ৪ উইকেট। ৬৮ রানে ইংলিশদের শেষ উইকেটটা তুলে নিয়েছেন ক্যামেরন গ্রীন।
যেন ইংল্যান্ডের ছাই উড়লো মেলবোর্নের বাতাসে। ইংলিশরা এবার অস্ট্রেলিয়ায় এসেছিলেন অ্যাশেজের বিখ্যাত ছাইদানিটা নিজেদের সাথে করে নিয়ে যেতে। কিন্তু অজিদের কাছে তারা নিজেরাই যে এভাবে অঙ্গার হয়ে ফিরবেন তা হয়তো ভাবেননি কেউই। এখন সিরিজের পরের দুই টেস্ট সিডনি আর হোবার্টে গিয়ে হোয়াইট ওয়াশ যেন না হতে হয় সেটিই হয়তো চাইবেন ইংল্যান্ডের সমর্থকেরা।