হিসাবরক্ষক থেকে জনপ্রিয় ফ্যাশন ডিজাইনার

Published By: Khabar India Online | Published On:

দক্ষিণ আফ্রিকার শামিরা মুডলি। এক সময় হিসাবরক্ষকের চাকরি করতেন। মাতৃত্বকালীন ছুটি শেষে নিজেকে অন্যভাবে তুলে ধরার চিন্তা মাথায় আসে তার। শুরু করেন পোশাক ডিজাইন করা আর মডেলিং। তিনি এখন পুরোদস্তুর একজন ফ্যাশন জগতের মানুষ। হিসাবরক্ষক থেকে হয়ে গেছেন জনপ্রিয় ফ্যাশন ডিজাইনার। তবে কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নয়, ব্যক্তিগত আগ্রহে শিখেছেন ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রির খুঁটিনাটি বিষয়।

লানিরানি নামে একটি ব্লগ চালু করে শামিরার পথ চলা শুরু। এই ব্লগে তিনি নিজের বিভিন্ন স্টাইল আর পোজ দেওয়া ছবি পোস্ট করেন। ফ্যাশন সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে ব্লগ লেখেন। তিনি বলেন, এগুলো ফ্যাশনেবল ছবি হলেও মূলত আমারই গল্প, আমারই দীর্ঘপথ চলার সংগ্রাম যার মধ্য দিয়ে আমি নিজেকে খুঁজি।

পূর্ব লন্ডনে জন্ম হলেও শামিরার বেড়ে ওঠা দক্ষিণ আফ্রিকার ইস্টার্ন কেপে। তিনি ছোটবেলায় তার ঠাকুমার কে  সেলাই করতে দেখেন। তা থেকে অণুপ্রেরণা পেলেও সেলাই নয় বরং কাটিং আর ডিজাইনেই আগ্রহ ছিল তার। তিনি বলেন, এখন আমি সেটাই করছি।

আরও পড়ুন -  নারকেলের ছোবড়া এবং নারকেলের ছোবড়াজাত পণ্য রপ্তানী ক্ষেত্রে ভারত রেকর্ড করেছে

শামিরা আরও বলেন, সেলাইয়ের নিয়মকানুন আমার পছন্দ না হলেও একে শিল্পের একটি ধরন মনে করি। আমি সব সময় মুক্ত প্রবাহ পছন্দ করি। সে কারণেই হিসাবরক্ষকের চাকরি ছেড়ে দেন ৪০ বছর বয়সী মুডলি। ব্লগ চালু করে এক বছর ধরে লেখালেখির পর জনপ্রিয় হয় তার পোশাকের ব্লগ লানিরানি। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকার একটি ফ্যাশন শোতে আমন্ত্রণ পান শামিরা।

প্রথাগত পোশাকের জগতে তার আনুষ্ঠানিক পরিচয় হয় দুবছর আগে যখন তিনি চটের কাপড় থেকে একটি স্কার্ট এবং একটি পুরানো ব্রা থেকে একটি বডিস তৈরি করেছিলেন। শুধু তাই নয় সেগুলো পড়ে ফ্যাশন শোতেও অংশ নেন। যেটি রানওয়েতে ফ্যাশন আইকন নাওমি ক্যাম্পবেলকে আকৃষ্ট করেছিল।

আরও পড়ুন -  Indian Cricketer: ৫ তারকা ক্রিকেটার ভারতের, যারা ২০২৭ বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পাবেন না

স্ব-শিক্ষিত এই ডিজাইনার আরও জানান, পোশাকটি ব্রিটিশ ফ্যাশন সমালোচক সুজি মেনকেসের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল, যিনি তাকে দক্ষিণ আফ্রিকার ফ্যাশন উদ্যোক্তা মূল্যবান মোলোই-মোটসেপের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, উভয়ই ফ্যাশন শোতে তার আত্মবিশ্বাস বাড়াতে সহায়ক ছিলেন।

২০২০ সালে মুডলি আফ্রিকান ফ্যাশন ইন্টারন্যাশনাল (এএফআই) এর ফাস্টট্র্যাক প্রোগ্রামে ছয়জনের তালিকায় উঠে এসেছিলেন। এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে মুডলির মতো উদীয়মান ডিজাইনারদের ফ্যাশন ব্যবসায় নাম লেখানো এবং তাদের কাজ প্রদর্শনের জন্য প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে দেওয়া হয়।

এই ডিজাইনার, যিনি নিজেকে আইরিশ, ভারতীয় এবং দক্ষিণ আফ্রিকান মিশ্র বংশোদ্ভূত হিসেবে বর্ণনা করেছেন, তিনি তার ফাস্টট্র্যাক সংগ্রহে ভারতীয় ঐতিহ্যেরও আঁচ রেখেছেন। গত অক্টোবরেও জোহানেসবার্গে তার একটি ফ্যাশন শোতে অংশ নেওয়ার সুযোগ হয়।

আরও পড়ুন -  প্রশাসনিক তৎপরতা তুঙ্গে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বীরভূম জেলা সফরকে ঘিরে

মুডলি ইনস্টাগ্রাম পেজেও ডিজাইন করা পোশাক বিক্রি করে আয় করেন। তবে তিনি সিএনএনকে জানান, এখনই তার কারখানা দিয়ে উৎপাদন শুরু করার পরিকল্পনা নেই। হিসাবরক্ষকের চাকরি থেকে এই কাজটি তার যে কারণে পছন্দের বলে তিনি জানান, যখন আমি পোশাক ডিজাইন করি, তখন আমার মাথায় যা খেলে সেটাই প্রকাশ পায়। যখন আমি পোশাক পরে প্রদর্শন করি, এটি আমার কাছে অনেক আনন্দের, এটি অনেক চমৎকার লাগে। আমি কখনই বড় হতে চাই না এবং এটাই সত্যি।

সূত্র: সিএনএন