38 C
Kolkata
Saturday, May 18, 2024

২০২১-এর মেরিটাইম ইন্ডিয়া শীর্ষ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

Must Read

খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, নয়াদিল্লিঃ আমার সহকর্মী শ্রী মনসুখ ভাই মাণ্ডবিয়া, শ্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান, বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা, সুধী বিশিষ্ট অতিথিবৃন্দ,

প্রিয় বন্ধুগণ,

মেরিটাইম ইন্ডিয়া শীর্ষ সম্মেলনে আপনাদের সকলকে আমি আমন্ত্রণ জানাই। এই ক্ষেত্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডাররা সম্মেলনে একজোট হয়েছেন। আমি নিশ্চিত যে আপনারা সকলে মিলে সামুদ্রিক অর্থনীতিকে সাফল্যের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেবেন।

বন্ধুগণ,

এই ক্ষেত্রে ভারত স্বাভাবিকভাবেই নেতৃত্বদানের অবস্থায় রয়েছে। আমাদের দেশের সামুদ্রিক বাণিজ্যের সমৃদ্ধশালী ইতিহাস আছে। আমাদের সমুদ্রতটে সভ্যতার বিকাশ হয়েছে। হাজার হাজার বছর ধরে আমাদের বন্দরগুলি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে কাজ করছে। বিশ্বের সঙ্গে আমাদের বন্দরগুলি দেশের যোগাযোগ ঘটিয়েছে।

বন্ধুগণ,

এই মেরিটাইম ইন্ডিয়া শীর্ষ সম্মেলনের মাধ্যমে আমি সারা বিশ্বকে ভারতে আসার আমন্ত্রণ জানাই, আমাদের উন্নয়নের যজ্ঞে আপনারাও অংশীদার হোন। সামুদ্রিক বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে বিকাশের বিষয়টিকে ভারত অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছে এবং বিশ্বে নীল অর্থনীতিতে নেতৃত্বদানের অবস্থায় পৌঁছেছে। আমরা মূলত যে বিষয়গুলি দিকে নজর দিচ্ছি সেগুলি হল : বর্তমান পরিকাঠামোর মানোন্নয়ন, উন্নত পরিকাঠামো তৈরি, সংস্কারের পথে উৎসাহদান – এইসব পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের আত্মনির্ভর ভারত অভিযানকে আরও শক্তিশালী করতে উদ্যোগী হয়েছি।

বন্ধুগণ,

আমি যখন আপনাদের কাছে বর্তমান পরিকাঠামোর মানোন্নয়নের প্রসঙ্গটি নিয়ে আলোচনা করছি তখন দক্ষতা বৃদ্ধির ওপর আমি অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছি। ইতস্তত, বিক্ষিপ্তভাবে উদ্যোগ নেওয়ার বদলে আমরা সামগ্রিকভাবে উন্নয়নের পথে অগ্রসর হচ্ছি।

আর এর প্রভাবগুলি এখনই অনুভব করা যাচ্ছে। বড় বড় বন্দরগুলির ক্ষমতা প্রতি বছরের হিসেবে ২০১৪ সালে ছিল ৮,৭০০ লক্ষ টন, আর এখন এইসব বন্দরে মালপত্র ওঠানো-নামানোর ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে প্রায় ১৫,৫০০ লক্ষ মেট্রিক টন। এই উৎপাদনশীলতার মাধ্যমে শুধুমাত্র আমাদের বন্দরগুলিই যে লাভবান হচ্ছে তা নয়, সার্বিকভাবে আমাদের অর্থনীতি চাঙ্গা হচ্ছে, কারণ আমাদের উৎপাদিত পণ্যগুলি আরও বেশি প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার ক্ষমতা অর্জন করছে। ভারতীয় বন্দরগুলি এখন বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। যেমন ধরুন : সরাসরি বন্দরে মাল সরবরাহ, বন্দরে সরাসরি প্রবেশ, তথ্যের আদান-প্রদানের জন্য বন্দরের জনসংযোগ ব্যবস্থার মানোন্নয়ন। যেসব জাহাজ বন্দরে ঢুকছে এবং যেসব জাহাজ বন্দর থেকে বের হচ্ছে তাদের অপেক্ষা করার সময় এখন কমে গেছে। বন্দরের মধ্যে মালপত্র মজুত রাখার ব্যবস্থার মানোন্নয়নের জন্য আমরা প্রচুর বিনিয়োগ করছি। বিভিন্ন শিল্প সংস্থাকে বন্দর সংলগ্ন জমিতে বিনিয়োগের জন্য আকৃষ্ট করছি আর এই কারণে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামোর মানোন্নয়ন করা হচ্ছে। স্থিতিশীলভাবে পলি তোলা এবং দেশীয় জাহাজগুলিকে পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে তোলার মধ্য দিয়ে বন্দরে ফেলে দেওয়া জিনিসকে আবারও সম্পদে পরিণত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বন্দরগুলিতে আমরা বেসরকারি বিনিয়োগে উৎসাহ দিচ্ছি।

আরও পড়ুন -  বেঙ্গল ইন্টিগ্রিটি রান প্রতিযোগিতা

বন্ধুগণ,

দক্ষতা ছাড়াও বন্দরের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থার মানোন্নয়নের জন্য অনেক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। উপকূলীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক এলাকাগুলির সঙ্গে আমাদের বন্দরগুলিকে যুক্ত করা হচ্ছে। বন্দর-ভিত্তিক স্মার্ট সিটি ও শিল্প তালুক তৈরি করা হচ্ছে। এর ফলে, শিল্প সংস্থার বিনিয়োগ আসবে এবং বন্দর সংলগ্ন এলাকায় আন্তর্জাতিক মানের উৎপাদন কেন্দ্র গড়ে তোলা সম্ভব হবে।

বন্ধুগণ,

নতুন পরিকাঠামো গড়ে তোলার প্রসঙ্গে বলা যায়, বড় বড় বন্দরগুলিতে বিশ্বমানের পরিকাঠামো তৈরি করা হচ্ছে – বাধাবন, পারাদ্বীপ ও কান্ডলার দীনদয়াল বন্দরে এই কাজ চলছে। আমাদের সরকার জলপথে যে পরিমাণ বিনিয়োগ করছে তা আগে কোনদিন হয়নি। অভ্যন্তরীণ জলপথগুলিতে পণ্য পরিবহণের জন্য ব্যয়সাশ্রয়ী ও পরিবেশ-বান্ধব করে তোলা হচ্ছে। আমরা ২০৩০ সালের মধ্যে ২৩টি জলপথকে ব্যবহারের উপযোগী করে তুলব। এ কাজে আমরা : পরিকাঠামোর মানোন্নয়ন, নৌ-চলাচলের সাহায্যের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ এবং নদী সংক্রান্ত তথ্যাবলী প্রদানের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ব্যবস্থা হাতে নিয়েছি। বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান ও মায়ানমারের সঙ্গে আঞ্চলিক ব্যবসা-বাণিজ্য ও সহযোগিতাকে আরও দৃঢ় করার জন্য ইস্টার্ন ওয়াটারওয়েজ কানেক্টিভিটি ট্রান্সপোর্ট গ্রিড ফর রিজিওনাল কানেক্টিভিটি তৈরি করা হয়েছে।

বন্ধুগণ,

সহজ জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের জন্য নতুন সমুদ্র বাণিজ্যের পরিকাঠামোর ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আমাদের নদীগুলিকে আরও ভালোভাবে ব্যবহার করার জন্য রো-রো এবং রো-প্যাক্স প্রকল্প অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। সি-প্লেন চলাচলের ব্যবস্থার জন্য ১৬টি জায়গায় ওয়াটার ড্রোম তৈরি করা হচ্ছে। পাঁচটি জাতীয় জলপথে রিভার ক্রুজ টার্মিনালের পরিকাঠামো ও জেটি তৈরি করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন -  Emiliano Martinez: বিশ্বকাপের গ্লাভস বিক্রি মার্টিনেজের, শিশুদের জন্য ক্যান্সার আক্রান্তের পাশে

বন্ধুগণ,

২০২৩ সালের মধ্যে পরিকাঠামোর মানোন্নয়নের মধ্য দিয়ে কয়েকটি বন্দরে আমরা দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ক্রুজ টার্মিনাল তৈরি করছি। ভারতের বিস্তৃত সমুদ্র সৈকতে ১৮৯টি লাইট হাউজ বা বাতিঘর রয়েছে। এ ধরনের ৭৮টি লাইট হাউজের পাশে পর্যটনের উন্নয়নের জন্য প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। এর মূল উদ্দেশ্য হল, এইসব লাইট হাউজগুলির মানোন্নয়ন এবং লাইট হাউজ সংলগ্ন অঞ্চলে সামুদ্রিক পর্যটনকে উৎসাহ দেওয়া। কোচি, মুম্বাই, গুজরাট এবং গোয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ শহর ও রাজ্যগুলিতে শহরাঞ্চলে জলপথ পরিবহণ ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে।

বন্ধুগণ,

অন্যান্য ক্ষেত্রের মতো সামুদ্রিক বাণিজ্যিক ক্ষেত্রেও আলাদা আলাদা বিক্ষিপ্তভাবে কোনও কাজ করা হচ্ছে না। সম্প্রতি আমরা জাহাজ চলাচল মন্ত্রকের নাম পরিবর্তন করে বন্দর, জাহাজ চলাচল ও জলপথ মন্ত্রক করেছি। এই মন্ত্রক যে বিষয়গুলির ওপর উৎকর্ষতা নিশ্চিত করবে সেগুলি হল : সামুদ্রিক জাহাজ চলাচল ও ব্যবসা-বাণিজ্য, বাণিজ্যিক জাহাজগুলির বিষয়ে শিক্ষাদান ও প্রশিক্ষণ, জাহাজ নির্মাণ ও জাহাজ মেরামতি শিল্প, পুরনো জাহাজ ভাঙা, মাছ ধরার নৌকা তৈরির শিল্প এবং ভাসমান হস্তশিল্প।

বন্ধুগণ,

বন্দর, জাহাজ চলাচল ও জলপথ মন্ত্রক বিনিয়োগের জন্য ৪০০টি প্রকল্পের একটি তালিকা তৈরি করেছে। এই প্রকল্পগুলিতে ৩,১০০ কোটি মার্কিন ডলার অথবা ২ লক্ষ ২৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করা সম্ভব। এর মধ্য দিয়ে সামুদ্রিক ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়নের বিষয়ে আমাদের অঙ্গীকার আরও দৃঢ় হবে।

বন্ধুগণ,

২০৩০-এর মেরিটাইম ইন্ডিয়া ভিশন-এর সূচনা করেছে। এই ভিশনে সরকার বেশ কিছু ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিয়েছে। সাগরমন্থন : আজ সামুদ্রিক বাণিজ্যিক সচেতনতা কেন্দ্রের সূচনা করা হয়েছে। সমুদ্রপথে নিরাপত্তা বৃদ্ধি, নিখোঁজ জাহাজের অনুসন্ধান ও উদ্ধারের ক্ষমতা বৃদ্ধি, সামুদ্রিক পরিবেশ সংরক্ষণের বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য এই কেন্দ্র থেকে পাওয়া যাবে। সরকার ২০১৬ সালে বন্দর-ভিত্তিক উন্নয়নকে উৎসাহদানের জন্য ‘সাগরমালা’ প্রকল্পের সূচনা করেছিল। এই প্রকল্পের আওতায় ২০১৫-৩৫ সালের মধ্যে ৮,২০০ কোটি মার্কিন ডলার বা ৬ লক্ষ কোটি টাকার ৫৭৪টি প্রকল্পকে চিহ্নিত করা হয়েছে।

আরও পড়ুন -  জীবন এখন করোনা আতঙ্কে ঘর বন্দি

বন্ধুগণ,

কেন্দ্র অভ্যন্তরীণ জাহাজ নির্মাণ ও জাহাজ মেরামতি শিল্পের বিষয়ে বিশেষ উদ্যোগী হয়েছে। ভারতীয় জাহাজ তৈরির জন্য বিশেষ আর্থিক সহায়তা নীতি অনুমোদনের মধ্য দিয়ে দেশে জাহাজ নির্মাণ শিল্পে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। ২০২২ সালের মধ্যে সমুদ্র উপকূলে জাহাজ মেরামতির ক্লাস্টার তৈরি করা হবে। বর্জ্য পদার্থ থেকে সম্পদ তৈরির উদ্যোগের আওতায় দেশীয় জাহাজগুলিকে পুনর্ব্যবহারের শিল্পের মাধ্যমে আবার ব্যবহার করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ২০১৯-এর জাহাজ পুনর্ব্যবহার আইন ভারত কার্যকর করেছে এবং এক্ষেত্রে হংকং আন্তর্জাতিক কনভেশনটি মেনে চলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বন্ধুগণ,

আমরা সারা বিশ্বের সঙ্গে সবচাইতে ভালো নিয়মগুলি ভাগ করে নিতে চাই। আমরা সারা পৃথিবীর থেকে ভালো জিনিসগুলি জানতে চাই। ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনীতির যোগাযোগ বজায় রাখার জন্য বিমস্টেক ও আইওআর গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির সঙ্গে ২০২৬ সালের মধ্যে পরিকাঠামোগত ক্ষেত্রে বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং পারস্পরিক সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। দ্বীপভূমির পরিকাঠামো ও বাস্তুতন্ত্রের সর্বাঙ্গীণ উন্নতির জন্য কেন্দ্র উদ্যোগী হয়েছে। সামুদ্রিক ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়াতে আমরা উৎসাহ দিচ্ছি। সৌরশক্তি বা বায়ুশক্তির মাধ্যমে বড় বড় বন্দরগুলির আশপাশের এলাকায় বিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ভারতীয় বন্দরগুলি ২০৩০ সালের মধ্যে মোট ব্যবহৃত জ্বালানির ৬০ শতাংশ যাতে পুনর্নবীকরণযোগ্য বিদ্যুৎ থেকে পেতে পারে , সেই বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

বন্ধুগণ,

ভারতের বিস্তীর্ণ সমুদ্র সৈকত আপনাদের অপেক্ষায়। ভারতের কঠোর পরিশ্রমী জনসাধারণ আপনাদের অপেক্ষায়। আমাদের বন্দরগুলিতে বিনিয়োগ করুন। আমাদের জনসাধারণের মধ্যে বিনিয়োগ করুন। আপনাদের বাণিজ্যিক গন্তব্যের অন্যতম কেন্দ্র হয়ে উঠুক ভারত। ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য ভারতীয় বন্দরগুলি আপনাদের বন্দর হয়ে উঠুক। এই সম্মেলনের আমি সাফল্য কামনা করি। এখানে বিস্তারিতভাবে যে আলোচনা হবে তা ফলপ্রসূ হোক।

ধন্যবাদ।

অনেক অনেক ধন্যবাদ। সূত্র – পিআইবি।

Latest News

Video: শাড়ির ফাঁকে উঁকি দিচ্ছে যৌবন, ঘর বন্ধ করে নাচ দেখিয়ে ভাইরাল মোনালিসা

Video: শাড়ির ফাঁকে উঁকি দিচ্ছে যৌবন, ঘর বন্ধ করে নাচ দেখিয়ে ভাইরাল মোনালিসা। ভোজপুরী সিনেমা: এক ঝলকঃ ভোজপুরী সিনেমা হল ভারতের...
- Advertisement -spot_img

More Articles Like This

- Advertisement -spot_img