রেলযাত্রীদের জন্য বড়সড় বদল, ট্রেন ছাড়ার ২৪ ঘণ্টা আগেই তৈরি হবে চার্ট, পাইলট প্রজেক্টে শুরু বিকানে।
নতুন যুগে পদার্পণ করছে ভারতীয় রেল পরিষেবা। এবার আর ট্রেন ছাড়ার কয়েক ঘণ্টা আগেই নয়, বরং ২৪ ঘণ্টা আগেই তৈরি হবে যাত্রী তালিকা (চার্ট)। ভারতীয় রেলের এই নতুন নীতিগত পদক্ষেপে যাত্রীদের জন্য অপেক্ষা ও অনিশ্চয়তা অনেকটাই কমে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বর্তমানে রেলে দুটি ধাপে চার্ট তৈরি হয়—প্রথমটি ট্রেন ছাড়ার চার ঘণ্টা আগে এবং দ্বিতীয়টি আধ ঘণ্টা আগে। এতে অপেক্ষমান তালিকায় থাকা যাত্রীরা প্রায় শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত টিকিট নিশ্চিত হওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকেন। সেই সমস্যার সমাধান করতেই নতুন করে ভাবা হয়েছে ‘একক চার্টিং সিস্টেম’-এর কথা, যেখানে ট্রেন ছাড়ার ২৪ ঘণ্টা আগেই চার্ট প্রকাশিত হবে।
পাইলট প্রজেক্ট চালু বিকানে
এই নতুন নিয়ম আপাতত পরীক্ষামূলকভাবে চালু হয়েছে রাজস্থানের বিকানের রেল বিভাগে। প্রাথমিকভাবে সফল হলে, ধাপে ধাপে সারা দেশেই এই ব্যবস্থা চালুর পরিকল্পনা রয়েছে রেল দফতরের।
কী সুবিধা পাবেন যাত্রীরা?
চার্ট ২৪ ঘণ্টা আগে প্রকাশিত হলে, যাত্রীরা আগেভাগেই জানতে পারবেন তাঁদের টিকিট কনফার্ম হয়েছে কিনা। কেউ চাইলে সেই তথ্য জানার পর অন্য ট্রেনের বিকল্প ভাবতে পারবেন বা সময়মতো বুকিং বাতিল করতে পারবেন। এছাড়া চার্ট তৈরি হওয়ার পর যাত্রীদের কাছে অটোমেটিক SMS বা ই-মেলের মাধ্যমে জানানো হবে তাঁদের সিট নম্বর ও স্ট্যাটাস।
ডিজিটাল রূপান্তরের পথে রেল
এই পরিবর্তন শুধুই একটি চার্টিং সিস্টেমের আপডেট নয়, বরং রেল ব্যবস্থার বৃহত্তর ডিজিটাল ট্রান্সফর্মেশনের অংশ। এতে যাত্রী পরিষেবা আরও স্বচ্ছ ও আধুনিক হবে বলেই মনে করছে রেল কর্তৃপক্ষ।
চ্যালেঞ্জের কথাও মানছে রেল
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, নতুন ব্যবস্থায় কিছু চ্যালেঞ্জ থাকবেই। শেষ মুহূর্তের বুকিং বা ক্যানসেলেশন পরিচালনা, রিয়েল-টাইম ডেটা সিঙ্ক্রোনাইজেশন, যাত্রী অভিযোগের দ্রুত নিষ্পত্তি—সবকিছুতেই প্রযুক্তির উপর নির্ভর করতে হবে। সেই জন্যই রেলের তথ্যপ্রযুক্তি পরিকাঠামোকে উন্নত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এক নজরে:
• নতুন নিয়ম কবে থেকে?
আপাতত বিকানে পরীক্ষামূলকভাবে শুরু হয়েছে। সফল হলে সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়া হবে।
• পুরনো সিস্টেম পুরোপুরি বন্ধ?
হ্যাঁ, নতুন নিয়ম চালু হলে পুরনো ৪ ঘণ্টা ও ৩০ মিনিট আগে চার্ট তৈরির পদ্ধতি বাতিল হবে।
• SMS বা ই-মেলে নোটিফিকেশন?
হ্যাঁ, চার্ট তৈরি হলেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে পাঠানো হবে নোটিফিকেশন।
• টিকিট কনফার্ম না হলে সুবিধা কী?
আগে থেকেই জানা গেলে বিকল্প ট্রেন বা সফরের পরিকল্পনা করতে পারবেন যাত্রীরা।
• কোন অসুবিধা হতে পারে?
শেষ মুহূর্তের বুকিং ও ক্যানসেলেশনের ম্যানেজমেন্টই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
রেল দফতর আশাবাদী, এই নতুন পদক্ষেপ যাত্রী পরিষেবায় নতুন মাত্রা যোগ করবে এবং ডিজিটাল ইন্ডিয়ার স্বপ্নকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে।