যখন ভ্রমণের কথা আসে, আপনি বসে বা শুয়ে ট্রেনে ভ্রমণ করতে পারেন। ট্রেনে যাতায়াতের সময় বমি বা মাথা ঘোরার কোনো সমস্যাও নেই।
আপনি যদি এমন একটি ট্রেনে ভ্রমণ করেন, যা গভীর সমুদ্রের মধ্য দিয়ে যায়। ট্র্যাকের দুই পাশে রেলিং না থাকলে আপনার প্রতিক্রিয়া কী হবে। নিশ্চয় আপনি চমকে যাবেন।
জানিয়ে রাখি, এই ট্রেন কিন্তু আপনি ভারতেই পাবেন।
মাদুরাই থেকে রামেশ্বরম ট্রেন
সমুদ্রের তরঙ্গের মধ্য দিয়ে যাওয়া এই ট্রেনগুলি তামিলনাড়ুর মাদুরাই থেকে রামেশ্বরম এর মধ্যে চলে। রামেশ্বরম একটি দ্বীপ, যা চারদিক থেকে সমুদ্র দ্বারা বেষ্টিত। এই দ্বীপটিকে মূল ভূখণ্ডের সাথে যুক্ত করার জন্য ব্রিটিশ আমলে একটি রেল ব্রিজ তৈরি করা হয়েছিল, যাকে বলা হয় পাম্বান রেল ব্রিজ। এই সেতুর নির্মাণ কাজ ১৯১১ সালে শুরু হয় এবং ১৯১৪ সালে শেষ হয়।
প্রায় আড়াই কিলোমিটার দীর্ঘ রেল সেতু দিয়ে রেল চলাচল করে।
২০১০ সাল পর্যন্ত পামবান সেতুটি দেশের একমাত্র ও দীর্ঘতম সমুদ্র সেতু ছিল। ২০১০ সালে মুম্বাইতে বান্দ্রা-ওরলি সি-লিংক শুরু হওয়ার সাথে সাথে এই রেকর্ড ব্রেক হয়। ১৯৮৮ সালে পামবান সেতুর সমান্তরালে একটি সড়ক সেতুও নির্মিত হয়েছিল, যা পরে ৮৭ নম্বর জাতীয় সড়ক-এর একটি অংশ হিসাবে ঘোষণা করা হয়।
পামবন সেতুর দৈর্ঘ্য প্রায় আড়াই কিলোমিটার। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১২.৫ মিটার (৪১ ফুট) উচ্চতায় অবস্থিত। এই সেতু নির্মাণের জন্য সমুদ্রে ১৪৩টি মজবুত পিলার স্থাপন করা হয়েছিল। পাশাপাশি, সেতুর মাঝখানে সিজার রোলিং টাইপ লিফট স্প্যান বসানো হয়েছিল, যাতে জাহাজগুলিকে সমুদ্রের মাঝ দিয়ে যেতে পারে। সেতুটিকে ভারতের কয়েকটি বিপজ্জনক সেতুর মধ্যে একটি বলে মনে করা হয়। সমুদ্র উত্তাল হলে তার ঢেউ উঠে আসে ওপরের দিকে।
সমুদ্রের উপর দিয়ে যাওয়ার সময় কিছু মানুষ জ্ঞান হারায়
রেলের জন্য তৈরি এই পামবান সেতুতে, শুধুমাত্র স্তম্ভের উপরে ট্র্যাক স্থাপন করা হয়েছে। নিরাপত্তার জন্য পাশে কোনও রেলিংও দেওয়া নেই। এই ব্রিজটি এতটাই সরু যে মনে হয় সাগরের মধ্যে দিয়েই ট্রেন চলছে। এই রেল রুটে কন্যাকুমারী- রামেশ্বরম সুপার ফাস্ট এক্সপ্রেস, মাদুরাই- রামেশ্বরম এক্সপ্রেস, ওখা- রামেশ্বরম এক্সপ্রেস সহ বেশ কয়েকটি ট্রেন।
ছবিঃ সংগৃহীত