সোমবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেন, চীনে করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি বিশ্বের জন্যও উদ্বেগের। তিনি বলেন, চীনে করোনা বিধি প্রত্যাহার করে নেয়ার পর যেকোনো সময় ভাইরাসটি ভয়াবহ মাত্রা ছড়িয়ে পরতে পারে। ধরন পাল্টে এটি মানুষের জন্য হুমকি তৈরি করতে পারে।
তিনি বলেন, চীনে নতুন করে করোনাভাইরাসের প্রকোপ দেখা দেয়ায়, অর্থনীতির ওপরও বাজে প্রভাব পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। যা বিশ্বের বাকি অংশের জন্য উদ্বেগের বিষয়। তবে অনান্য দেশের তুলনায় চীন একটি শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে, এটি বাকি বিশ্বের জন্যও ভাল।
প্রাইস দাবি করেন, আপাত দৃষ্টিতে বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার ফলে করোনা সংক্রমণের হার কম দেখা যাচ্ছে। কারণ হলো, চীনের ব্যপক হারে করোনা পরীক্ষা বন্ধ হয়েছে। তাই সঠিক সংখ্যা জানা যাচ্ছে না।
প্রাইস জানিয়েছেন, নতুন বছরের শুরুতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এন্টনি ব্লিঙ্কেনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল বেইজিং-এ পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, চলতি মাসের শুরুতে কোভিড বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার পর থেকে সোমবার সর্বোচ্চ পাঁচজন মারা গেছে। এই নিয়ে করোনায় মৃতের সংখ্যা ৫২৪২ জনে দাঁড়িয়েছে।
চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সোমবার কোভিড-১৯ এর উপসর্গসহ ২৭২২ জন রোগী শনাক্ত হয়। আগের দিন রবিবার ১৯৯৫ জন রোগী শনাক্ত হয়েছিল। নতুন এসব রোগী নিয়ে ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত চীনের মূলভূখণ্ডে শনাক্ত উপসর্গযুক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৮৩ হাজার ১৭৫ জনে।
চীনে অভূতপূর্ব জনগণের বিক্ষোভের পরে ডিসেম্বরে বিশ্বের কঠিনতম বিধিনিষেধ তুলে নিতে বাধ্য হয় প্রশাসন। তবে দেশটিতে বর্তমানে সংক্রমণের নতুন ঊর্ধ্বগতিও দেখা যাচ্ছে।
চীনে ২০২৩ সালের মধ্যে করোনা সংক্রমণের ব্যপক উল্লম্ফন এবং ১০ লাখেরও বেশি মৃত্যু হতে পারে বলে সর্তক করেছে যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক ইনস্টিটিউট অফ হেলথ মেট্রিক্স অ্যান্ড ইভালুয়েশন (আইএইচএমই)।
সংস্থাটির অনুমান অনুসারে, চীনে আগামী বছরের ১ এপ্রিলে করোনা সংক্রমণের সংখ্যা শীর্ষে পৌঁছাবে এবং চীনের জনসংখ্যার প্রায় এক তৃতীয়াংশ সংক্রামিত হবে। একই সময়ে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা ৩ লাখ ২২ হাজারে পৌঁছাবে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, সম্প্রতি জিরো-কোভিড নীতি শিথিল করার পর, গণহারে কোভিড পরীক্ষা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দৈনিক শনাক্ত কম পাওয়া যাচ্ছে।
সূত্রঃ রয়টার্স। ফাইল ছবি