খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, নয়াদিল্লিঃ ভারতীয় রেল তার যাবতীয় শক্তি চাহিদা পূরণের ক্ষেত্রে ১০০ শতাংশ স্বনির্ভর হয়ে উঠতে এবং জাতীয় স্তরের সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনে অবদান যোগাতে সর্বাত্মক প্রয়াস চালাচ্ছে। রেলের যাবতীয় শক্তি চাহিদা পূরণে রেল মন্ত্রী শ্রী পীযূষ গোয়েলের পৌরহিত্যে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সঙ্গে ভারতীয় রেল বিস্তারিত আলাপ-আলোচনা করেছে।
উল্লেখ করা যেতে পারে, ভারতীয় রেল ট্রেন পরিষেবার ক্ষেত্রে সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহারে অঙ্গীকারবদ্ধ। এই লক্ষ্য পূরণে ভারতীয় রেল পরিবহণ ব্যবস্থায় পরিবেশ-বান্ধব মাধ্যম হয়ে ওঠার লক্ষ্যে কাজ করছে।
রেলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবপক্ষের এই বৈঠকে যে সমস্ত বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে –
১) রেল লাইন বরাবর সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প স্থাপনের জন্য উদ্ভাবনমূলক পন্থা।
২) ২০ গিগাওয়াট পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি উৎপাদনের লক্ষ্য পূরণে সম্ভাব্য বিদ্যুৎ সংগ্রহের ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীদের জন্য উপায় খুঁজে বের করা। এই লক্ষ্যে ভারতীয় রেল ২০৩০ সাল নাগাদ কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ একেবারে শূন্যতে নামিয়ে আনার পরিকল্পনা নিয়েছে।
৩) বৃহদায়তন সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প স্থাপনের চ্যালেঞ্জগুলি নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।
বৈঠকে অংশগ্রহণকারী সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদক সংস্থাগুলি দেশে পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি ক্ষেত্রের উন্নয়নে ভারতীয় রেলকে সহায়তা দিতে সম্মত হয়েছে। যে সমস্ত সংস্থা রেলের সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্পকে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে, তারা ২০৩০ সাল নাগাদ কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ শূন্যতে নামিয়ে আনার লক্ষ্যে রেলের প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী রেল স্টেশনগুলিতে সৌরবিদ্যুতের ব্যবহার বাড়ানো তথা পুনর্নীকরণযোগ্য শক্তি উৎপাদনের ক্ষেত্রে খালি পড়ে থাকা রেলের জমি ব্যবহারে যে পরামর্শ দিয়েছেন, তার প্রেক্ষিতেই ভারতীয় রেল এই পদক্ষেপ নিয়েছে।
ভারতীয় রেল রেল লাইন বরাবর সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্পের যে কর্মসূচি গ্রহণ করেছে, তা সৌরবিদ্যুতের উৎপাদন ও ব্যবহার প্রসারে কেন্দ্রীয় সরকারের জাতীয় সৌর মিশনে বড় অবদান রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে।
মন্ত্রকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, রেলের খালি পড়ে থাকা জমিতে বৃহদায়তন সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন ইউনিট গড়ে তোলার পরিকল্পনা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই বীনাতে সাফল্যের সঙ্গে ২৫ কিলোভোল্ট ট্র্যাকশন সিস্টেম সহ ১.৭ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন একটি সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন ইউনিট পরীক্ষামূলকভাবে চালু হয়েছে। এছাড়াও, রায়বেরেলির মর্ডান কোচ ফ্যাক্টরিতে ৩ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন আরও একটি সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন ইউনিট চালু হয়েছে। দিওয়ানাতে ২ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন এবং ভিলাইয়ে ৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন আরও ২টি প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চলেছে।
ভারতীয় রেল ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ শূন্যতে নামিয়ে আনার যে পরিকল্পনা নিয়েছে, তার বাস্তবায়নে রেলের খালি পড়ে থাকা জমিগুলিতে ২০ গিগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন সৌরবিদ্যুৎ ইউনিট স্থাপনের এক বিরাট পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। উচ্চাকাঙ্খী এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে ২০২৩ সাল নাগাদ রেলের ১০০ শতাংশ বৈদ্যুতিকীকরণের কাজ সম্পন্ন হবে এবং ২০৩০ সাল নাগাদ ৩৩ বিলিয়ন ইউনিট বিদ্যুৎ খরচের চাহিদাও পূরণ করা যাবে।
ভারতীয় রেল সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প স্থাপনের মাধ্যমে কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ ন্যূনতম করার লক্ষ্যে বহুমুখী পরিকল্পনার অঙ্গ হিসাবে পরিবহণ ক্ষেত্রকে পুনর্নীকরণযোগ্য শক্তি-চালিত করে তোলার লক্ষ্যে অগ্রসর হচ্ছে। বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণের ক্ষেত্রে ভারতীয় রেলের এই প্রয়াস আত্মনির্ভর হয়ে ওঠার পদক্ষেপের সূচনা হতে চলেছে। সূত্র – পিআইবি।