টিপ নিয়ে মুখ খুলেছেন নির্বাসিত বাংলাদেশি লেখিকা তসলিমা নাসরিন। টিপ পরার সমর্থনে করা ওই মন্তব্যে বরাবরের মতো ধর্মকে আক্রমণ করেছেন তিনি।
সোমবার এক ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেন, ‘টিপ টিপ টিপ। মেয়েরা কত রকমভাবে সাজতে পারে। বেচারা ছেলেদের সাজের বেশি কিছু নেই। নানা রকম অলঙ্কার, শাড়ি, মিনি স্কার্ট, হাই হিল, এমনকি টিপটাও পরতে পারে না!’
তসলিমা লিখেছেন, ‘মুসলমান পুরুষেরা তো কল্পনার ঈশ্বরের উদ্দেশে কল্পনার বেহেস্তের লোভে মাথা ঠুকতে ঠুকতে কালো দাগ বানিয়ে ফেলেছে কপালে। ওটিই তাদের কালো টিপ।’
সেই সঙ্গে ফেসবুকে লেখিকা ভাগ করে নিয়েছেন তার বেশ কয়েকটি ছবি। যেখানে নানা রকমের শাড়িতে সেজেছেন তিনি। কপালে জ্বলজ্বল করছে নানা আকারের নানা প্রকারের টিপ!
গত শনিবার কপালে টিপ পরে হেঁটে যাওয়ার সময় বাংলাদেশের ফার্মগেট এলাকায় লাঞ্ছিত ও হত্যাচেষ্টার মুখোমুখি হয়েছেন বলে শের-ই-বাংলা নগর থানায় অভিযোগ করেন তেজগাঁও কলেজের থিয়েটার অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের প্রফেসার লতা সমাদ্দার।
অভিযোগে লতা সমাদ্দার জানান, শনিবার সকাল সোয়া ৮টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক এলাকার বাড়ি থেকে রিকশায় ফার্মগেটের আনন্দ সিনেমার সামনে আসেন। সেখান থেকে পায়ে হেঁটেই নিজ কর্মস্থল তেজগাঁও কলেজে যাচ্ছিলেন।
হাঁটতে হাঁটতে সেজান পয়েন্টের সামনে পর্যন্ত আসার পর একটি থেমে থাকা মোটরসাইকেলের উপর পুলিশের পোশাক পরিহিত বসে থাকা এক ব্যক্তি তার কপালে টিপ পরা নিয়ে বাজে মন্তব্য করেন। তার বাজে মন্তব্য নিয়ে ওই নারী প্রতিবাদ করলে এক পর্যায়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন পুলিশের পোশাক পরিহিত ওই ব্যক্তি। তাকে উদ্দেশ্য করে ‘টিপ পরছোস কেন’ মন্তব্য করেন ওই ব্যক্তি।
পুলিশের ওই সদস্য মোটরসাইকেল চালিয়ে তার গায়ের উপর উঠিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন বলেও অভিযোগে জানান ভুক্তোভুগী ওই নারী।
এ ঘটনায় জাতীয় সংসদেও নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেন সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য সুবর্ণা মুস্তাফা। সংসদে তিনি সবার উদ্দেশ্যে বলেন, বাংলাদেশের কোন সংবিধানে বা কোন আইনে লেখা আছে যে, একজন নারী টিপ পরতে পারবে না? এখানে হিন্দু-মুসলমান, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ এমনকি সে বিবাহিত না বিধবা সেটা বিষয় নয়।