37 C
Kolkata
Saturday, May 18, 2024

Aparajita Adhya: মাস্টারদার ছাত্রী ছিলেন দিদা, হেরে যেতে শেখেননি অপরাজিতা আঢ‍্য (Aparajita Adhya)

Must Read

 হেরে যেতে শেখেননি অপরাজিতা আঢ‍্য (Aparajita Adhya)। চলতি বছরের 22 শে ফেব্রুয়ারি চুয়াল্লিশটি বসন্ত এই পৃথিবীর বুকে কাটিয়ে ফেললেন অপরাজিতা। সাড়ে তিন মাস লড়াই করে বেঁচে উঠেছিলেন বলে মা নাম রেখেছিলেন ‘অপরাজিতা’। আসলে লড়াই যে তাঁর রক্তে।

অপরাজিতার দিদা ছিলেন মাস্টারদা সূর্য সেনের ছাত্রী। অংশগ্রহণ করেছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামে। কিন্তু তাঁর বাবা প্রাণভয়ে তাঁকে নিয়ে কলকাতায় চলে আসেন। দিদা ছিলেন তৎকালীন ম্যাট্রিক পাশ। কিন্তু তাঁর বাবা তাঁকে বিয়ে দিয়ে দেন বয়সে অনেকটাই বড় এক প্রফেসরের সাথে। সেই ইংরাজির প্রফেসর বাইরে আধুনিক হলেও বাড়িতে স্ত্রীর গায়ে হাত তুলতে বাধত না তাঁর। ক্রমে অপরাজিতার মা ও মাসির জন্ম হয়। কিন্তু এরপরেই সেই প্রফেসর দ্বিতীয় বিয়ে করে নিয়ে আসেন।

সহ্য করতে পারেননি অপরাজিতার দিদা। দুই মেয়ে নিয়ে উঠেছিলেন বাপের বাড়ি। শিক্ষিকার কাজ নিয়েছিলেন। কিন্তু কদর ছিল না বাপের বাড়িতে। তাঁর দুই মেয়েকে দিয়ে সব কাজ করানো হত। শত প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও দুই মেয়েকে উচ্চশিক্ষিত করে তুলেছিলেন অপরাজিতার দিদা। বড় মেয়ের বিয়ে হল। কিন্তু ঘটনাচক্রে স্বামীর নার্ভের অসুখ ধরা পড়ল। গায়ের রঙ কালো বলে শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা পছন্দ করতেন না।  প্রথমে যমজ পুত্রসন্তানের জন্ম দিলেও এক সন্তানের মৃত্যু ঘটে। অপর সন্তান বেঁচে যায় কিছু শারীরিক সমস্যা নিয়ে। কয়েক বছর পর আবারও মহিলা জানতে পারেন, প্রাণ এসেছে তাঁর গর্ভে। ডাক্তারের কাছে ছুটে গিয়েছিলেন।

কিন্তু বড্ড দেরি হয়ে গিয়েছিল। মহিলা নিজেও শিক্ষিকা ছিলেন। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থাতেও চাকরিতে যেতেন তিনি। গর্ভাবস্থার সাড়ে সাত মাসে হঠাৎই একদিন প্রচন্ড ব্যথা। স্বামীর শরীরও সেদিন খুব খারাপ। একাই বাসে চেপে ক্যালকাটা মেডিক্যাল কলেজে চলে গিয়েছিলেন মহিলা। হাসপাতালে ঢোকার মুখে তিনি অনুভব করেছিলেন শরীর থেকে বেরিয়ে গেল একটি মাংসপিন্ড। কন্যাসন্তান। দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা হল। সাড়ে তিন মাস রাখা হল কাঁচের বাক্সে।

চারিদিকে নল লাগানো, কাঁচের বাক্সে শুয়ে থাকা কন্যাসন্তানকে সাড়ে তিন মাস ধরে দেখতে যেতেন অসুস্থ বাবা। সাড়ে তিন মাসের লড়াই শেষে মা নাম দিলেন ‘অপরাজিতা’। অপরাজিতার দেখা-শোনার ভার নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন তাঁর বাবা। মা যেতেন চাকরি করতে। মেয়েকে বুকে নিয়ে বসে থাকতেন বাবা। কিন্তু সইল না এত সুখ। হঠাৎই চারিদিক অন্ধকার করে চলে গিয়েছিলেন বাবা, না ফেরার দেশে।

মা সামলেছিলেন মেয়েকে। তবে বড্ড কঠোর ছিলেন মা। নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বুঝেছিলেন, মেয়েদের স্বাবলম্বী হওয়া দরকার। ঘরে-বাইরে সব কাজ শিখিয়েছিলেন অপরাজিতাকে। ক্রমশ বড় হচ্ছিলেন অপরাজিতা। মায়ের রোজগারের উপর ভরসা করে বসে থাকতে চাননি। তাই একটা ছোট্ট দোকান খুলেছিলেন। বড়বাজার থেকে জিনিস এনে বেচতেন পাড়াতেই। অবশেষে একদিন এল অভিনয়ের সুযোগ।

কিন্তু বাদ সাধল ইন্ডাস্ট্রির রাজনীতি। একের পর এক সুযোগ হাতছাড়া হতে লাগল। সেই সময়ের প্রভাবশালী নায়ক বলে দিলেন, অপরাজিতার সঙ্গে অভিনয় করবেন না। কিন্তু বিধিলিপি ছিল অন্য। ফিরে এসেছেন অপরাজিতা। ‘জলনূপুর’-এর পারি হয়ে দর্শকদের মন জয় করে নিয়েছেন। একের পর এক ফিল্মে অভিনয় করছেন। ‘প্রাক্তন’, ‘গয়নার বাক্স’, ‘চিনি’, ‘একান্নবর্তী’, প্রমাণ করে দিয়েছেন, তিনি অপরাজিতা, তাঁকে থামানোর সাধ্য নেই কারও।

আরও পড়ুন -  "একদম ঘরেতেই তৈরি করুন সুস্বাদু বার্গার, দেখুন ভাইরাল হয়ে যাচ্ছে রেসিপি!"

করোনা অতিমারীর সময় অপরাজিতাই যেন মা দুর্গা। নিজে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। হারিয়েছিলেন শ্বশুরমশাইকে। কিন্তু তবু থামেননি তিনি, হার মানেননি। সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। অক্সিজেন, ওষুধ, খাবারের ব্যবস্থা করেছেন। দশভুজার মতো আগলেছেন করোনায় আক্রান্ত প্রতিবেশীদের। একসময় ফিরতে হয়েছে ফিল্মের সেটে।

আরও পড়ুন -  নুসরতের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে এত আগ্রহ না দেখিয়ে যদি এম.পি.নুসরতের কাজ নিয়ে সবাই আগ্রহ দেখাতেন, তাহলে খুব ভালো হত, মন্তব্য কমরেড দীপ্সিতার

অনেকদিন পর শুটিং করতে গিয়ে নার্ভাস লাগছিল। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও শেয়ার করে নিজেই জানিয়েছেন সেই কথা। কিন্তু বরাবরের মতো সব প্রতিবন্ধকতা জয় করে ‘ওয়ান শট ওকে’ করেছেন। কি করে পারেন তিনি এত লড়াই করতে? উত্তর একটাই, তিনি যে অপরাজিতা।

Latest News

Web Series: পুত্রবধূ বাড়িতে একলা থাকায় সম্পর্কে জড়ালেন শ্বশুর, এই ভিডিওটি একদম একলা দেখবেন

Web Series: পুত্রবধূ বাড়িতে একলা থাকায় সম্পর্কে জড়ালেন শ্বশুর, এই ভিডিওটি একদম একলা দেখবেন।  Web Series টি ১৮+উদ্ধের জন্য। ওয়েব...
- Advertisement -spot_img

More Articles Like This

- Advertisement -spot_img