দেশজুড়ে উদ্ভাবক ও শিল্পোদ্যোগীদের ক্ষমতায়নের জন্য অটল ইনোভেশন মিশন (এআইএম) ও নীতি আয়োগ যৌথভাবে ভার্নাকুলার ইনোভেশন প্রোগ্রাম (ভিআইপি)-এর সূচনা করেছে। এর মাধ্যমে দেশের সংবিধানের তালিকাভুক্ত ২২টি ভাষায় উদ্ভাবন সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্যাবলী উদ্ভাবক ও শিল্পোদ্যোগীদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে।
ভিআইপি-র ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য এআইএম ২২টি ভাষায় প্রত্যেকটি ভার্নাকুলার টাস্ক ফোর্সকে প্রশিক্ষিত করবে। প্রতিটি টাস্ক ফোর্সে ওই ভাষার শিক্ষক, বিভিন্ন বিষয়ের বিশেষজ্ঞ, লেখক এবং অটল ইনকিউবেশন সেন্টারের আঞ্চলিক শাখাগুলির নেতৃবৃন্দ রয়েছেন।
এই কর্মসূচিটি বাস্তবায়নের জন্য দিল্লি আইআইটি-র ডিজাইন ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে এআইএম এবং নীতি আয়োগ একটি প্রশিক্ষণ কর্মশালার সূচনা করেছে। কর্মশালায় প্রশিক্ষণের পর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা উদ্ভাবক এবং শিল্পোদ্যোগীদের প্রশিক্ষণ দেবেন। ২২টি ভাষায় প্রশিক্ষণের জন্য কেন্দ্রের এই উদ্যোগে শিল্প সংস্থাগুলির পরামর্শদাতারাও যুক্ত হয়েছেন। বিভিন্ন সংস্থার সি এস আর অর্থাৎ কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতার আওতায় এই প্রকল্পে সাহায্য করা হচ্ছে। আগামী বছরের এপ্রিল মাস পর্যন্ত আঞ্চলিক ভাষার উদ্ভাবকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
কর্মসূচির সূচনা করে নীতি আয়োগের ভাইস চেয়ারম্যান ডঃ রাজীব কুমার বলেছেন, ভারতের ঐতিহ্যময় সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বন্ধন রয়েছে। এই বন্ধনে আঞ্চলিক ভাষাগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নীতি আয়োগের মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক শ্রী অমিতাভ কান্ত বলেন, ভিআইপি কর্মসূচির মাধ্যমে ভারতীয় উদ্ভাবন ও শিল্পোদ্যোগ নতুন মাত্রা পাবে। দেশের তরুণ ও উচ্চাকাঙ্ক্ষী নাগরিকরা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাঁদের চিন্তাভাবনা এখানে যুক্ত করবেন।
ভিআইপি-র মাধ্যমে উদ্ভাবন ও শিল্পোদ্যোগের মতো ক্ষেত্রে ভাষা সংক্রান্ত বাধা অতিক্রম করা হবে। এআইএম-এর মিশন ডিরেক্টর ডঃ চিন্তন বৈষ্ণব জানান, আঞ্চলিক ভাষায় সৃজনশীলভাবে বিভিন্ন বক্তব্য তুলে ধরাই ভিআইপি-র মূল উদ্দেশ্য। তিনি বলেন, ভারতের মতো দেশে౼ যেখানে অনেক ভাষা রয়েছে, সেখানে কেউ যদি তাঁর উদ্ভাবনের ধারণাকে তুলে ধরতে চান, সেক্ষেত্রে ভাষা যাতে অন্তরায় না হয় তার জন্যই এই উদ্যোগ। ভিআইপি-র সাহায্যে আঞ্চলিক ভাষার উদ্ভাবকরা বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করতে পারবেন। ডঃ বৈষ্ণব আরও জানান ২০১১-র আদমশুমারি অনুযায়ী, দেশে মাত্র ১০.৪ শতাংশ নাগরিক ইংরেজি ভাষায় কথা বলতে পারেন। এঁদের মধ্যে বেশিরভাগেরই পড়াশোনার সময় ইংরেজি ছিল দ্বিতীয়, তৃতীয় বা চতুর্থ ভাষা। দেশে মাত্র ০.০২ শতাংশ মানুষের ইংরেজি প্রথম ভাষা। আগামী ১০ বছরেও এই চিত্রের খুব একটা পরিবর্তন হবে না। তাই, আঞ্চলিক ভাষার উদ্ভাবকদের কাছে সমান সুযোগ তৈরি করে দিতে ভিআইপি কর্মসূচির সূচনা করা হয়েছে। এর ফলে দেশের ৯০ শতাংশ মানুষের সামনে নতুন সুযোগ তৈরি হবে এবং উদ্ভাবকরা যে ভাষাতেই কথা বলুন না কেন, তাঁদের ধারণা প্রকাশ করতে কোনও সমস্যা হবে না। বিশ্বের মধ্যে ভারতই সম্ভবত প্রথম রাষ্ট্র যেখানে ইংরেজি সহ ২২টি ভাষায় উদ্ভাবন ব্যবস্থাপনাকে শক্তিশালী করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে স্থানীয়, আঞ্চলিক, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে উদ্ভাবন ব্যবস্থাপনা আরও সমৃদ্ধ হবে। সূত্রঃ পিআইবি।