তৃণমূলের পথে পা বাড়াচ্ছেন বাবুল ? হচ্ছে জল্পনা

Published By: Khabar India Online | Published On:

খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, ওয়েবডেস্কঃ   টুইটারের বায়ো বদলে ফেলে রাজনৈতিক মহলে সাড়া ফেলে দিয়েছেন বাবুল সুপ্রিয়। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী থেকে বাদ পড়েছেন। তিনি শুধুমাত্র একজন সাংসদ। মোটামুটি বাংলাতে সবাই জানেন, ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থীদের কারিশমা খুব একটা কাজ করেনি, যেটুকু কাজ করেছিল সেটা হলো মোদি হাওয়া এবং দীলিপবাবুর। আপাত পক্ষে সাংসদ হলেও তিনি কতটা জনপ্রিয় এবং জনগনের কাছে কতটা গ্রহণযোগ্য সেটা নিয়ে কিন্তু প্রশ্ন করার অবকাশ থাকে। আবার দিন কয়েক আগে তিনি বিধানসভা নির্বাচনে অরূপ বিশ্বাস এর কাছে একটা বড় মার্জিনে হেরে এসেছেন। বাবুল সুপ্রিয়র জনপ্রিয়তা অনেকটা ভাটা পড়েছে। তার নিজের লোকসভা আসন আসানসোলে আনকোরা রাজনীতিতে আসা সায়নী ঘোষের সঙ্গে লড়াই করতে অগ্নিমিত্রা পাল কে বেশ কিছুটা বেগ পেতে হয়েছে বলতে হবে। জয়লাভ করলেও দুজনের ভোটের তফাৎ কিন্তু খুব একটা বেশি ছিল না। তারপর থেকেই বাবুল সুপ্রিয়র জনপ্রিয়তা এবং রাজনীতিতে তাঁর অবদান নিয়ে জল ঘোলা শুরু হয় রাজনৈতিক মহলে।

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী থেকে বাদ পড়ার পরে ফেসবুক এবং অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ায় একেবারে গর্জে উঠেছেন বাবুল সুপ্রিয়। তিনি বারবার জাহির করার চেষ্টা করছেন তাকে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফ থেকে ইস্তফা দিতে বাধ্য করা হয়েছে। গত বুধবার যখন তিনি ইস্তফা দিলেন তারপর এই ফেসবুকে তিনি একটি পোস্ট লিখেছিলেন, তিনি সরাসরি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বলেন, তারা তাকে ইস্তফা দেওয়ার কথা জানিয়েছেন।

আরও পড়ুন -  Pakistan: নতুন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের মন্ত্রিসভার ৩৪ সদস্য আজ শপথ নিবেন

দিলীপ ঘোষের সঙ্গে বাবুল সুপ্রিয়র যে রাজনৈতিক টালমাটাল রয়েছে সেটা সকলেরই জানা। এরকম পরিস্থিতিতে টানা সাত বছর সক্রিয় রাজনীতিতে থাকার পর রাজনীতি থেকে কি পুরোপুরি বিদায় নিতে চলেছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়? গত কয়েক দিনে তার ব্যবহারিকে গতি প্রকৃতি দেখে কিছুটা সে রকম মনে করা হচ্ছে। কারণ নিজের টুইটার প্রোফাইল বায়ো বদলে ফেলেছেন। ফেসবুকে দলের একাংশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ তো বটেই সরাসরি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে মন্তব্য করতে পিছপা হননি বাবুল সুপ্রিয়। বাবুল সুপ্রিয় অপেক্ষাকৃত অনেক বেশি স্বাচ্ছন্দ শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে কাজ করে। এই পরিস্থিতিতে তিনি নিজের টুইটার প্রোফাইলের বায়ো বদলে ফেলে রাজনীতিতে সন্ন্যাস নেওয়ার নিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ ইঙ্গিত দিয়েছেন।

বাবুল সুপ্রিয় রাজনীতিতে এসেছেন অত্যন্ত নাটকীয় ভাবে। তিনি রাজনীতি থেকে চলে যেতে চান তাহলে তিনি আসানসোল লোকসভা আসনের সাংসদ পদ সরাসরি ছেড়ে দেবেন। বাবুলের যারা পরিচিত রয়েছেন তারা মনে করছেন তেমনটা হলে তারা খুব একটা অবাক হবেন না। অন্যদিকে দিলীপ ঘোষের সঙ্গে বাবুলের সম্পর্কের টানাপোড়েন বর্তমানে রাজনৈতিক মহলে হটকেক হয়ে উঠেছে। মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দেওয়ার পরে যে ফেসবুক পোস্ট তিনি করেছিলেন সেখানে তিনি সরাসরি দিলীপ ঘোষকে নিয়ে কটাক্ষ করেছিলেন। তার পাল্টা জবাবে একটি ঝাঁঝপূর্ণ মন্তব্য করেন দিলীপ ঘোষ। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে যে এই বিষয়টি নিয়ে শোকজ করা হতে পারে সেটাও তিনি জানেন।

আরও পড়ুন -  আবার নয়া দিল্লি যাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, থাকছে এক ঝাঁক চমক

টুইটার বায়ো পরিবর্তন করে লিখেছেন তিনি, ভালোবেসে রাজনীতি করতে আসেননি, বরং তিনি কাজ করার জন্য রাজনীতিতে এসেছেন। এই মন্তব্য থেকেই বোঝা যাচ্ছে বাবুল সুপ্রিয় হয়তো ইস্তফা দেওয়ার বিষয়টি মন থেকে মেনে নিতে পারছেন না। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় এই নিয়ে প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করতে চাইছেন না কিন্তু ঘনিষ্ঠ সূত্রের খবর, বাবুল সুপ্রিয় এখন রাজনীতি থেকে কিছুটা বিরতি নিচ্ছেন। তবে বাবুল সুপ্রিয় সরাসরি রাজনীতি থেকে বিদায় নেবেন কিনা সে বিষয়ে কোনো তথ্য এখনো পর্যন্ত জানা যায় নি। ফলে এখনো পর্যন্ত বাবুল সুপ্রিয়র রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে জল্পনা চলছে।

আরও পড়ুন -  Sreelekha Mitra: মনোযোগ দিলেন ওয়ার্কআউটে, স্পষ্ট ক্লিভেজ, শ্রীলেখা'র ছবি ভাইরাল

আবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বাবুল সুপ্রিয় একটা আলাদা সমীকরণ গঠন করার চেষ্টা চলছে। যখন বাবুল সুপ্রিয় মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়েছিলেন তখন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “ওরা আবার কি দোষ করল!” (এখানে যদিও দেবশ্রী চৌধুরীরও কথা বলা হয়েছে)। অন্যদিকে, মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দেওয়ার পরে আসানসোলের আরো এক বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি তার পক্ষ নিয়ে বলেছিলেন, ” বাবুল সুপ্রিয় মন্ত্রী থাকার সময় কাজ করেছেন, মন্ত্রী না থাকলেও তিনি কাজ করবেন। ” এই জিতেন্দ্র তিওয়ারি একটা সময়ে বারবার দলবদল করছিলেন। তারপরে তিনি এখন পদ্মফুলে বসলেও, তিনি যে জোড়া ফুলে যাবেন না এরকম কোন নিশ্চয়তা নেই। তারি মাঝে আবার ঘনিষ্ঠ মহলে মমতা বন্দোপাধ্যায় কে নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বাবুল। তাহলে কি ধীরে ধীরে মমতা এবং বাবুলের মধ্যেকার বরফ গলতে শুরু করেছে? ‘কাজ’ করার জন্য কি তাহলে পদ্মফুল থেকে জোড়া ফুলে যাবেন বাবুল? দেখা যাক ।