খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, ওয়েবডেস্কঃ বাজে কথা মুকুল রায় বলেননি কখনো। দিন কয়েক আগে থেকেই মুকুল রায়ের তৃণমূলে ফেরা নিয়ে জল্পনা দানা বাধতে শুরু করেছে। মুকুল রায়ের স্ত্রী বেশ কয়েকদিন হল অসুস্থ রয়েছেন করোনাভাইরাস এর জন্য। বিজেপি নেতারা খবর নিয়েছেন কতটা, সেটা জানা নেই। রাজনৈতিক তফাৎ ভুলে তৃণমূলের নেতারা কিন্তু মুকুল রায়ের স্ত্রীর ব্যাপারে খোঁজ নিয়েছেন। তৃণমূলের বর্তমান সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় অ্যাপোলো হাসপাতালে গিয়ে সরাসরি কথা বলেছেন মুকুল রায়ের পুত্র শুভ্রাংশু রায় এর সঙ্গে। যদিও তারপরে বিজেপি নেতারা যোগাযোগ করেছিলেন মুকুল রায়ের সঙ্গে, কিন্তু জানা যায় সবার আগে খোঁজ নিয়েছিলেন কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শুভ্রাংশু রায় তার ফেসবুক পোস্টে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের প্রশংসা করে নিজের তৃণমূলে ফেরার জল্পনা আরো উস্কে দিয়েছিলেন। এই পরিস্থিতিতে বর্তমানে লাখ টাকার প্রশ্ন বিজেপির বর্তমান সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি এবং কৃষ্ণনগর উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক মুকুল রায় কি আবার তৃণমূলে ফিরতে চলেছেন? আজ এই প্রশ্নের উত্তর দিলেন দমদম লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ সৌগত রায়। সৌগত প্রকাশ্যে বলে দিলেন, তৃণমূল ত্যাগ করলেও শুভেন্দু অধিকারীদের মত মমতাকে নিয়ে বাজে কথা কখনো বলেননি মুকুল রায়। তিনি বুঝিয়ে দিলেন মুকুল রায় যদি তৃণমূলে ফিরতে চান তাহলে তিনি ফিরতে পারেন, তৃণমূলের রাস্তা তার জন্য খোলা রয়েছে। এই ইঙ্গিত শুধুমাত্র সৌগত রায় একা নন, খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও দিয়েছেন। বঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও বলেছিলেন, “মুকুল অতটা খারাপ নয়। ও কোন দিন বাজে কথা বলে না।”
তার পরেই, রাজ্য রাজনীতিতে মুকুল রায়ের অবস্থান নিয়ে দোলাচল শুরু হয়। কৃষ্ণনগর উত্তর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে এবারে বিজেপির প্রার্থী হলেও মুকুল রায় এবারের নির্বাচনে কিছুটা নিষ্ক্রিয় ছিলেন। ভোটের ফল প্রকাশের পরেও বিজেপির বিভিন্ন মিটিংয়ে তিনি অনুপস্থিত। নিজের অনুগামীদের নিয়ে সল্টলেকের বাস ভবনে একাধিক বৈঠক করছেন মুকুল, কিন্তু দিলীপ ঘোষের ডাকা মিটিংয়ে মুকুল রায় গরহাজির। সম্প্রতি বিজেপির বিরুদ্ধে বিক্ষুব্ধ হয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসা করা ডোমজুড়ের প্রাক্তন বিধায়ক রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় যোগাযোগ রাখছেন মুকুল রায়ের সঙ্গে। এত জল্পনার মাঝেই সৌগত রায়ের বক্তব্য অত্যন্ত ইঙ্গিতবাহী বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এদিন সৌগত রায় বললেন, “এমন বহু নেতা আছে যারা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে এবং তারা তৃণমূলে আবার ফিরতে চাইছে। এদের মধ্যে কেউ কেউ নরমপন্থী আবার কেউ চরমপন্থী। শুভেন্দু অধিকারীর মতো নেতারা যেখানে মমতাকে নিয়ে প্রকাশ্যে বাজে কথা বলেছেন সেখানে মুকুল রায়কে কিন্তু মমতাকে নিয়ে কখনো কটু কথা বলতে শোনা যায়নি।” রাজ্য রাজনীতিতে চিরকাল নরমপন্থী মনোভাবের অত্যন্ত চতুর রাজনীতিবিদ হিসেবে জনপ্রিয় মুকুল রায়। সৌগতর মন্তব্যে ইঙ্গিত কিন্তু স্পষ্ট। মুকুল ফিরবেন কি না ফিরবেন এই সমস্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই।