জল ছাড়লেই ডুবে যাবে এলাকা! দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলা জলে থইথই, জারি কমলা সতর্কতা।
দক্ষিণবঙ্গের আকাশ এখন শুধুই ঘন মেঘে ঢাকা। মাঝে মাঝেই বজ্র-বিদ্যুৎ সহ প্রবল বৃষ্টিপাত, আর তার মধ্যেই নতুন করে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে বন্যার সম্ভাবনা। টানা বর্ষণের জেরে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় বাড়ছে নদীর জলস্তর। তার উপর ড্যাম থেকে একটানা জল ছাড়ার কারণে ক্রমেই জটিল হচ্ছে পরিস্থিতি। ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকার জারি করেছে কমলা সতর্কতা।
কোন কোন জেলায় বন্যা পরিস্থিতি?
সূত্র অনুযায়ী, ইতিমধ্যেই জলমগ্ন:
• পূর্ব বর্ধমান
• হাওড়া
• হুগলি
• বাঁকুড়া
• পশ্চিম মেদিনীপুর
• ঝাড়গ্রাম
• পুরুলিয়া।
বিশেষত ঘাটাল, গড়বেতা, খদ্দর ও চন্দ্রকোণা এলাকার বিস্তীর্ণ অঞ্চল জলমগ্ন। শিলাবতী ও ঝুমি নদী বিপদসীমার কাছাকাছি পৌঁছে গেছে।
বিপদের মূল কারণ কী?
ডিভিসি (DVC) জানিয়েছে, ঝাড়খণ্ড লাগোয়া বিহারে তৈরি হওয়া নিম্নচাপের জেরে অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে বৃষ্টিপাত। ফলে:
• মাইথন ও পাঞ্চেত ড্যাম থেকে জল ছাড়া হচ্ছে।
• দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে শনিবার সকাল ৭টা থেকে প্রতি সেকেন্ডে ৭০,৪৭৫ কিউসেক হারে জল ছাড়ার খবর মিলেছে।
এতে নিম্ন দামোদর ও মুণ্ডেশ্বরী নদীর জলস্তর হু-হু করে বাড়ছে।
কী ব্যবস্থা নিচ্ছে প্রশাসন?
• নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক।
• প্রতিটি বন্যাপ্রবণ জেলায় খোলা হয়েছে ২৪×৭ কন্ট্রোল রুম।
• NDRF ও রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী রাখা হয়েছে সতর্ক।
• আরামবাগ মহকুমা (হুগলি)-তে জলস্তর বৃদ্ধির কারণে বন্ধ রাখা হয়েছে স্কুল।
• হাওড়ার আমতা ও উদয়নারায়ণপুর অঞ্চলে চলছে নদী বাঁধ মেরামতির কাজ।
সাধারণ মানুষের জন্য কী নির্দেশ?
• নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দাদের অন্যত্র সরানোর প্রস্তুতি চলছে।
• দুর্যোগ মোকাবিলার দল ও নৌকাবহর রাখা হয়েছে প্রস্তুত।
• সরকারি নির্দেশিকা ও স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার পরামর্শ।
FAQ: প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন
১. কমলা সতর্কতা মানে কী?
গুরুতর বৃষ্টিপাত এবং সম্ভাব্য বন্যার সতর্কতা, প্রশাসনের সক্রিয় প্রস্তুতি আবশ্যক।
২. সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা কোনগুলি?
পূর্ব বর্ধমান, হাওড়া, হুগলি, বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম ও পুরুলিয়া-র বিস্তীর্ণ অংশ।
৩. কত জল ছাড়া হচ্ছে ড্যাম থেকে?
প্রতি সেকেন্ডে ৭০,৪৭৫ কিউসেক হারে জল ছাড়া হচ্ছে দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে।
৪. কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে প্রশাসনের তরফে?
নিয়মিত নজরদারি, কন্ট্রোল রুম, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, নদী বাঁধ মেরামতি।
৫. সাধারণ মানুষের করণীয় কী?
নিম্নাঞ্চল ছেড়ে নিরাপদ স্থানে যাওয়া, সরকারি নির্দেশ মেনে চলা এবং প্রশাসনের পরামর্শে সতর্ক থাকা।
পরিস্থিতির উপর প্রশাসনের কড়া নজর থাকলেও, সতর্ক থাকাই এখন একমাত্র উপায়। অসতর্কতার কারণে কোনো বড় বিপদ না ঘটে।