Laxmir Bhandar: লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প, নতুন সুবিধা এবং সম্প্রসারণের ঘোষণা।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল সরকার আবারও বড়সড় ঘোষণা করল তাদের জনপ্রিয় সামাজিক প্রকল্প লক্ষ্মীর ভাণ্ডার নিয়ে। এই প্রকল্পটি ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর চালু হয় এবং দ্রুতই রাজ্যের মা-বোনেদের কাছে আর্থিক সুরক্ষা ও আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস হয়ে উঠেছে। এটি এখন শুধু আর্থিক সাহায্যের নয়, সামাজিক পরিবর্তনের প্রতীক।
নতুন উপভোক্তাদের অন্তর্ভুক্তি
সম্প্রতি নবান্নে আয়োজিত এক সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন যে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে আরও ৫ লক্ষ মহিলা যুক্ত হতে চলেছেন। ডিসেম্বর মাস থেকেই এই নতুন উপভোক্তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ভাতার টাকা জমা পড়া শুরু হবে। এর ফলে, প্রকল্পের আওতায় উপকৃত মহিলার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে ২ কোটি ২১ লক্ষ।
রাজ্য সরকারের ব্যয় বৃদ্ধি
নতুন উপভোক্তাদের অন্তর্ভুক্তির কারণে রাজ্য সরকারের বার্ষিক ব্যয় বেড়ে দাঁড়াবে প্রায় ৬২৫ কোটি ২০ লক্ষ টাকা। এই প্রকল্পে আগে খরচ ছিল ৪৮ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা, যা এখন বেড়ে প্রায় ৫৫ হাজার কোটিতে পৌঁছাবে।
আর্থিক সহায়তা ও সামাজিক সাম্য
লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের আওতায় রাজ্যের তপশিলি জাতি ও উপজাতি সম্প্রদায়ের মহিলারা প্রতি মাসে ১২০০ টাকা এবং সাধারণ শ্রেণির মহিলারা ১০০০ টাকা পান। এই প্রকল্পে কোনো জটিল শর্ত নেই। একটি পরিবারের একাধিক মহিলা সদস্য থাকলেও প্রত্যেকেই এই ভাতা পেতে পারেন।
পশ্চিমবঙ্গের উদাহরণ
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, এই অন্তর্ভুক্তিমূলক নীতিটি পশ্চিমবঙ্গকে অন্যান্য রাজ্যের কাছে উদাহরণে পরিণত করেছে। ভারতের অন্যান্য রাজ্যেও এই মডেল অনুসরণ করার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই প্রকল্পের আরও সম্প্রসারণ বা ভাতার পরিমাণ বাড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে। আলোচনা চলছে যে ভাতার পরিমাণ দ্বিগুণ করে ২০০০ টাকা পর্যন্ত বাড়ানো হতে পারে। তবে এ বিষয়ে এখনও সরকার আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা করেনি।
লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পটি পশ্চিমবঙ্গের আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থায় এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। মহিলাদের আর্থিক সুরক্ষা ও ক্ষমতায়ন এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য। নতুন উপভোক্তাদের অন্তর্ভুক্তি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা রাজ্যের আর্থিক উন্নয়নের পাশাপাশি তৃণমূল সরকারের রাজনৈতিক শক্তি বৃদ্ধি করবে বলেই মনে করা হচ্ছে।