আজ তাপমাত্রা কমবে, দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলার বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে, তাহলে আজকের আবহাওয়া কি রকম হবে?
বর্ষাকাল, বাংলা ঋতুচক্রের অন্যতম প্রধান একটি ঋতু। এই ঋতু সাধারণত জুন মাস থেকে শুরু হয়ে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত স্থায়ী হয়। বর্ষা কালের আগমনের সঙ্গে সঙ্গে প্রকৃতি যেন নতুন রূপে সেজে ওঠে। গ্রীষ্মের দাবদাহের পরে, বর্ষার আগমন বৃষ্টির শীতল স্পর্শ এনে প্রকৃতিকে সতেজ করে তোলে। নদী, খাল-বিল, পুকুরগুলো জলেতে পূর্ণ হয়ে ওঠে, ফসলের মাঠগুলো সবুজের সমারোহে ভরে যায়।
বর্ষাকাল শুধুমাত্র প্রকৃতির রূপ বদলায় না, বরং মানুষের জীবনযাত্রাতেও ব্যাপক প্রভাব ফেলে। কৃষকেরা এই ঋতুকে সবচেয়ে বেশি স্বাগত জানায় কারণ বর্ষার জল ফসলের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। ধান, পাট, আখ সহ বিভিন্ন রবি ফসল এই সময়েই মূলত চাষ করা হয়। শহরের মানুষের জন্য বর্ষা কালে যানজট, জলাবদ্ধতা ও স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়া কিছুটা কষ্টের কারণ হলেও, প্রকৃতির অপূর্ব সৌন্দর্য তাদের মনকে প্রফুল্ল করে তোলে।
বর্ষাকালের অপরূপ সৌন্দর্য যেমন আনন্দের, তেমনই এটি নিয়ে আসে কিছু চ্যালেঞ্জও। অতিবৃষ্টি ও বন্যার কারণে কখনো কখনো ফসলের ক্ষতি হতে পারে, অনেক জায়গায় মানুষের বসবাসের জন্য সমস্যা তৈরি হয়। কিন্তু সমস্ত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও, বর্ষা কালের সৌন্দর্য ও উপকারিতা আমাদের জীবনের অপরিহার্য অংশ।
এভাবে বর্ষা কাল আমাদের প্রকৃতিকে সতেজ করে, আমাদের জীবনকে সুন্দর করে তোলে এবং আমাদের সংস্কৃতিতে একটি অমূল্য অবদান রাখে। এই ঋতুর সৌন্দর্য ও বৈচিত্র্য আমাদের হৃদয়কে গভীরভাবে স্পর্শ করে, যা বাংলা জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ।
বর্ষাকালের সৌন্দর্যকে আরও গভীরভাবে অনুভব করতে হলে বাংলার গ্রামাঞ্চলের দিকে তাকাতে হবে। গ্রামের মাঠে, খেত-খামারে, বনের পাশে যখন ঝমঝম বৃষ্টি নামে, তখন চারিদিক যেন এক অপূর্ব সুরের ঝঙ্কারে ভরে ওঠে। মাটির গন্ধ, ভিজে মাটির ঠাণ্ডা অনুভূতি, নদীর বুকে উথলে ওঠা ঢেউ, এই সবই বর্ষা কালের অনন্য বৈশিষ্ট্য। গাছপালা, ফুল-ফল, পাখি ও অন্যান্য প্রাণীকুলও বর্ষার আগমনে যেন প্রাণ ফিরে পায়।
গ্রামের খাল-বিল, পুকুর, নদীগুলো বর্ষার জলেতে পূর্ণ হয়ে ওঠে, এবং তখন গ্রামের শিশুরা আনন্দের সাথে সেখানে সাঁতার কাটে, খেলে বেড়ায়। বর্ষার রাতে ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক, মেঘের গর্জন ও বজ্রপাতের আলো-আঁধারি পরিবেশকে এক অদ্ভুত রহস্যময়তায় পূর্ণ করে তোলে।
শহরাঞ্চলে বর্ষাকালের অনুভূতি কিছুটা ভিন্ন। শহরের রাস্তাঘাটে জলাবদ্ধতা, যানজট ও বৃষ্টির কারণে জনজীবনে কিছুটা অস্থিরতা সৃষ্টি হয়। তবে শহরের মানুষও বর্ষার সৌন্দর্য উপভোগ করে। বারান্দায় বসে চা-কফি হাতে বৃষ্টির ঝাপটা উপভোগ করা, বৃষ্টিতে ভিজে স্কুল-কলেজ বা অফিস যাওয়ার স্মৃতি, এসব শহরের মানুষের জীবনের অংশ হয়ে থাকে।
বছরের এই সময়টা আমাদের পরিবেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বর্ষা কালের জল আমাদের নদী-নালা, খাল-বিল এবং ভূগর্ভস্থ জলের উৎসকে পুনরায় পূর্ণ করে। এটি আমাদের জীববৈচিত্র্যকে টিকিয়ে রাখতে সাহায্য করে এবং কৃষির জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে আমরা বর্ষা কালের জলকে সংরক্ষণ করে বছরের অন্যান্য সময়ে ব্যবহার করতে পারি।
সবমিলিয়ে, বর্ষাকাল আমাদের জীবনে এক অনন্য স্থান দখল করে রেখেছে। এর সৌন্দর্য, এর প্রভাব এবং এর সাথে যুক্ত অনুভূতি আমাদের মনকে গভীরভাবে ছুঁয়ে যায়। প্রকৃতির এই আশীর্বাদকে আমরা যথাযথভাবে সংরক্ষণ ও উপভোগ করতে শিখলে, আমাদের জীবন আরও সমৃদ্ধ ও সুন্দর হয়ে উঠবে। বর্ষা কালের অপার সৌন্দর্য ও তার অবদান চিরকাল আমাদের হৃদয়ে বিশেষ স্থান করে রাখবে।
আজকে বিশ্ব পরিবেশ দিবস দক্ষিণবঙ্গের আবহাওয়ার কি খবর? রাজ্য জুড়ে রয়েছে মেঘলা আকাশ, গতকাল রাতে বৃষ্টিপাত হয়েছে দক্ষিণবঙ্গের নানান জায়গাতে। রাত্রিবেলায় ঠান্ডা আবহাওয়ায় স্বস্তি পেয়েছে বাংলা।
আজকে কি সেই রকম বৃষ্টির দেখা মিলবে? আজকের আবহাওয়ার আপডেট (South Bengal Weather Update) কি জানালেন।
কেমন থাকবে আজকের আবহাওয়া?
হাওয়া অফিস থেকে জানানো হচ্ছে, আজকে অর্থাৎ বুধবার দক্ষিণবঙ্গের সব জেলাতেই মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। আকাশ থাকে মেঘলা। আবার সাথে বইবে ৫০ কিলোমিটার বেগে দমকা হাওয়া।
বুধবারের পর তাপমাত্রা বাড়বে না কমবে?
বুধবারের পর কিছুটা কমবে। বৃহস্পতিবার থেকে সোমবার পর্যন্ত মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। বৃষ্টি হলেও গরম বাড়বে। সেই জন্য এই অস্বস্তিকর আবহাওয়ার থেকে রেহাই এখন মিলছে না বাংলায়। পশ্চিম মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, দুই বর্ধমান এবং বীরভূমে তাপমাত্রা বাড়বে।
আজ কলকাতার তাপমাত্রা কেমন থাকবে?
আজকে ৫ই জুন কলকাতার সাথে আশেপাশের যে অঞ্চলগুলি রয়েছে সেখানে আকাশের মুখ ভার থাকবে। অস্বস্তিকর বিশ্রী গরম। বাড়ি থেকে বেরোনোর সময় অবশ্যই ছাতা নিতে হবে, বৃষ্টির পূর্বাভাস আছে। আজ সকাল থেকে কোথাও মেঘলা আকাশ রয়েছে, আবার কোথাও রোদ উঠেছে।
আজ উত্তরবঙ্গের তাপমাত্রা কেমন থাকবে?
দক্ষিণবঙ্গের পাশাপাশি উত্তরবঙ্গেও ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানাচ্ছে আবহাওয়া অফিস। ইতিমধ্যে, কেরালা এবং উত্তরবঙ্গে বর্ষা ঢুকে পড়েছে, তবে দক্ষিণবঙ্গে কবে বর্ষা ঢুকবে, সেটা এখনো পর্যন্ত বোঝা যাচ্ছে না। আপাতত প্রাক বর্ষার বৃষ্টিতে ভিজতে চলেছে বঙ্গবাসী।