কাঁচা হলুদ কত উপকার জেনে নিন। সরস্বতী পুজোর আগের দিন বা ওই দিন মেখে ফেলুন হলুদ। বহু প্রাচীনকাল থেকেই রূপচর্চার কাজে ব্যবহার হয়ে আসছে এই হলুদ। সুন্দর করতে সাহায্য করে হলুদ। কিন্তু কাঁচা হলুদ একেবারেই নয়।
কাঁচা হলুদ যদি ত্বকের উপরে লাগান, সেক্ষেত্রে কিন্তু ইনফেকশন এর সমস্যা হতে পারে। কিনে নিতে হবে কস্তুরী হলুদ। কস্তুরী হলুদ ত্বকের জন্য ভীষণ ভালো। দশকর্মা ভান্ডার থেকে কিনে নিতে পারেন।
এই উপাদান ত্বকে লাগালে, ত্বকের সমস্ত সমস্যা আপনি একেবারে সমাধান পেয়ে যাবেন। এবার জেনে নিন কিভাবে হলুদের ব্যবহার করতে হবে?
ত্বক যদি ভেতর থেকে সুন্দর করতে চান, তাহলে প্রতিদিন সকালবেলা এক টুকরো কাঁচা হলুদ, গুড় দিয়ে খেতে পারেন বাসি মুখে। প্রতিদিন রাতে শুতে যাবার সময় এক কাপ গরম দুধে এক টেবিল চামচ গুঁড়ো হলুদ অথবা কাঁচা হলুদ বেটে নিয়ে ভালো করে ফুটিয়ে সামান্য গোলমরিচ দিয়ে খেলে দেখবেন, কিছুদিন পরে আপনার ত্বক সুন্দর হয়ে গেছে। আবার সর্দি-কাশিও দূরে চলে যাবে।
রূপচর্চার কাজে কাঁচা হলুদকে কিভাবে ব্যবহার করবেন?
১) ফেসপ্যাক হিসেবে কস্তুরী হলুদঃ কস্তুরী হলুদকে ফেসপ্যাক হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। আপনার ত্বক অনেক বেশি সুন্দর করতে সাহায্য করে। যে কোন ফেসপ্যাক এর টক দই, চালের গুঁড়ো, কফি পাউডার, বেসন যে কোন ফেসপ্যাক একটা বানিয়ে নিয়ে তার মধ্যে এক চুটকি কস্তুরী হলুদ মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে রাখুন। ৭ দিন ব্যবহার করে বুঝতে পারবেন নিজের ত্বক কত সুন্দর, পরিষ্কার ও ঝকঝকে হয়েছে।
২) টোনার হিসেবেঃ কস্তুরী হলুদ টোনার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। একটি পাত্রের মধ্যে এক লিটার জল তার সাথে দুই থেকে তিন টেবিল চামচ গ্রিনটি বা ভালো করে ফুটিয়ে নেবেন। এরপর ছেঁকে নিয়ে তার মধ্যে কস্তুরী হলুদ মিশিয়ে এটা ফ্রিজে রাখতে পারেন। এর সঙ্গে মিশিয়ে দিতে পারেন গোলাপজল, তাহলে খুব সুন্দর টোনার তৈরি হয়ে যাবে।
৩) ফেসওয়াশ হিসাবেঃ কস্তুরী হলুদকে ফেসওয়াশ ব্যবহার করা যায়। যেকোনো বেবি ফেস ওয়াশ নিয়ে নেবেন, তার মধ্যে যদি সামান্য এক চিমটি হলুদ মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন, দেখবেন ত্বক কত সুন্দর পরিষ্কার এবং ঝকঝকে হয়ে গেছে।
৪) স্ক্রাবার হিসেবেঃ স্ক্রাবার হিসেবে কস্তুরী হলুদকে ব্যবহার করতে পারেন। কফি পাউডার, চালের গুঁড়ো ও বেসন একটা জায়গায় মিশিয়ে রেখে দিন। এর সাথে যোগ করে দিন কস্তুরী হলুদ। একটুখানি গুলিয়ে মেখে নিন, দেখবেন খুব সুন্দর স্ক্রাবার বাড়িতেই তৈরি হয়ে যাবে।
৫) ন্যাচারাল অয়েল হিসেবে কস্তুরী হলুদঃ শীতকালে আপনার বাড়িতে একটা ব্র্যান্ডেড কোম্পানির বডি অয়েল আছে। কিন্তু বাড়িতে বানাতে পারেন অসাধারণ বডি অয়েল। দেখবেন আপনার ত্বক একেবারে দুধের মতন পরিষ্কার হয়ে যাবে। এর জন্য প্রথমেই করতে নারকেল তেলের মধ্যে পরিমাণ মতন কস্তুরী হলুদ ও কমলালেবুর খোসাগুলো আর গোলাপ ফুলের পাপড়ি গুঁড়োকে রেখে দিন।
পাঁচ থেকে দশ দিন শীতের কড়া রোদের মধ্যে একটি কাঁচের শিশিতে ভরে রাখুন। ভেতরে দেখবেন, সুন্দরভাবে তেল তৈরি হয়ে গেছে। তারপর লাগানোর আগে ভিটামিন ই ওয়েল মিশিয়ে ভালো করে ম্যাসাজ করলেই হবে। ত্বক কত সুন্দর ও পরিষ্কার এবং ঝকঝকে হয়েছে।
৬) বডিলোশন হিসেবে কস্তুরী হলুদঃ বডি লোশন হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন হলুদকে। বডি লোশন বানানোর জন্য প্রথমে যেটা নিতে হবে সেটা হল পরিমাণ মতন এলোভেরা জেলের সাথে পরিমাণ মতন গ্লিসারিন ও ভিটামিন এই অয়েলকে খুব ভালো করে মিশিয়ে নিন। এর মধ্যে কস্তুরী হলুদকে খুব ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে। বেশ ভালো করে স্নান করার পরে ভিজে গায়ে ম্যাসাজ করুন দেখবেন ত্বক উজ্জ্বল হয়েছে।
সতর্কীকরণঃ উপরে উল্লেখিত কোনো উপাদানে অ্যালার্জি থাকলে ব্যবহারের আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কোনো রকম সমস্যা এড়াতে আগে চিকিৎসকের সঙ্গে অবশ্যই কথা বলে নেবেন।