একটি মসজিদে আত্মঘাতী বোমা হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৯৬ জনে দাঁড়িয়েছে পাকিস্তানের পেশোয়ারের পুলিশ লাইনস এলাকায়। আহত হয়েছেন আরও দেড় শতাধিক। গতকাল সোমবার জোহরের নামাজের সময় এই বিস্ফোরণে নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে বেশির ভাগই পুলিশের সদস্য বলে জানিয়েছে, পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন।
পুলিশ কর্মকর্তাদের কথা অনুযায়ী, বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, সোমবার যোহরের নামাজের সময় এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে, তখন মসজিদে নামাজ আদায় করছিলেন। বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে, মসজিদ ভবনের ছাদ ও দেয়ালের কিছু অংশ ধসে পড়েছে। বেশ কয়েকজন নিচে চাপা পড়ে, বিশেষত যারা নামাজের সময় সামনের সারিতে ছিলেন।
বিস্ফোরণের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান সেনাবাহিনী, জরুরি সেবা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দলের সদস্যরা।
মঙ্গলবার স্থানীয় লেডি রিডিং হাসপাতালের মুখপাত্র মোহাম্মদ আসিম জানিয়েছেন, সমস্ত মৃত ব্যক্তিদের পরিচয় নিশ্চিত করা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, আহতদের মধ্যে বেশিরভাগরেই অবস্থা আশঙ্কাজনক। নাগরিকদের রক্তদানের জন্য আবেদন করেছেন।
আসিম জানিয়েছেন, সোমবার মোট ১৫৭ জন আহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল, তাদের বেশিরভাগকে চিকিৎসার পর বাড়িতে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে ৫৭ জন তাদের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এই বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করেছে নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠন পাকিস্তান তালেবান বা তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান ( টিটিপি )। সোমবার বিকেলে এক টুইট বার্তায় পাকিস্তানি তালেবানের একজন কমান্ডার সারবাকাফ মোহমান্দ এই হামলার দায় স্বীকার করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, মসজিদে আত্মঘাতী হামলাটি তার ভাইয়ের হত্যার প্রতিশোধমূলক হামলার অংশ ছিল।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, মোহমান্দ নিহত টিটিপি কমান্ডার উমর খালিদ খুরাসানির ভাই। গত আগস্টে আফগানিস্তানে এক অভিযানে খুরাসানি নিহত হয়েছিল।
ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। এটিকে সন্ত্রাসী হামলা আখ্যা দিয়ে এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, পাকিস্তানকে রক্ষা করার দায়িত্ব যারা পালন করছে, তাদের ওপর হামলা চালিয়ে আতঙ্ক তৈরি করতে চাচ্ছে সন্ত্রাসীরা। যারা ঘটনার পেছনে রয়েছে, ইসলামের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে পুরো জাতি এখন ঐক্যবদ্ধ। যারা পাকিস্তানের বিপক্ষে লড়ছে তাদের নিশ্চিহ্ন করে দেয়া হবে।
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইরমান খান টুইট বার্তায় বলেন, পুলিশ লাইন মসজিদে নামাজের সময় সন্ত্রাসী আত্মঘাতী হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। নিহত ও আহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
ছবিঃ সংগৃহীত