Argentina Champions: ৩৬ বছরের আক্ষেপ ঘুচিয়ে, শিরোপা জিতল মেসির আর্জেন্টিনা

Published By: Khabar India Online | Published On:

বিশ্বকাপের ইতিহাসের সেরা ফাইনাল। ৩৬ বছরের আক্ষেপ ঘুচিয়ে শিরোপা জিতল মেসির আর্জেন্টিনা। প্রথমার্ধে মেসি ও ডি-মারিয়ার গোলে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। শেষ দিকে জোড়া গোল করলেন কিলিয়ান এমবাপে। অতিরিক্ত সময়ে নিজের দ্বিতীয় গোল করলেন মেসি। তিন মিনিট আগে নিজের হ্যাটট্রিক পূর্ণ করলেন এমবাপে।

 টাইব্রেকারে গড়াল বিশ্বকাপ। টাইব্রেকারে ফ্রান্সকে হারিয়ে বিশ্বকাপ জিতল আর্জেন্টিনা। মেসিদের হয়ে নায়ক হয়ে উঠলেন আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্তিনেস। ফ্রান্সের দু’টি গোল বাঁচালেন তিনি। শেষ পর্যন্ত নিজের শেষ বিশ্বকাপ জিতে মাঠ ছাড়লেন মেসি। বিশ্বকাপের ফাইনালে জোড়া গোল হয়ে গেল মেসির।

প্রথমার্ধ যদি লিয়োনেল মেসির হয়, দ্বিতীয়ার্ধের ৭৮ থেকে ৮৫ মিনিটের মধ্যে খেলার ছবি বদলে দিলেন কিলিয়ান এমবাপে। দু’দলের দুই সেরা ফুটবলারের লড়াইয়ে শেষ হাসি হাসলেন মেসি। প্রথমার্ধে মেসি একটি গোল করলেন তো এমবাপে জোড়া গোল করে ফ্রান্সকে লড়াইয়ে রাখলেন। ৭০ মিনিট খেলায় দাপট দেখাল আর্জেন্টিনা। পরে ফ্রান্সের কোচ দিদিয়ে দেশ‌মের দুটো পরিবর্তন খেলার রং বদলে দিল। কোম্যান ও কামাভিঙ্গা নামার পরে এমবাপে সেই খেলাটা খেললেন যেটা তিনি প্রথমার্ধে খেলতে পারেননি। ৯০ মিনিটে খেলা শেষ হল ২-২। অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয়ার্ধে আবার গোল করলেন মেসি। তাতেও জয় আসেনি। তিন মিনিট বাকি থাকতে নিজের হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন এমবাপে। শেষ পর্যন্ত খেলা গড়া টাইব্রেকারে। সেখানে বাজিমাত করলেন মেসিরা।

আরও পড়ুন -  Qatar World Cup: সেনেগাল চূড়ান্ত দল ঘোষণা করলো, বিশ্বকাপের

 নিজের শেষ বিশ্বকাপ স্মরণীয় করে রাখতে মরিয়া হয়ে খেলছিলেন মেসি। তাকে বিশ্বকাপ দেওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে খেলছিলেন আর্জেন্টিনার বাকি ১০ ফুটবলার। রক্ষণ, মাঝমাঠ থেকে আক্রমণ, কোথাও ফ্রান্সকে একটু জায়গা দিলেন না আর্জেন্টিনার ফুটবলাররা। আক্রমণের সঙ্গে সঙ্গে রক্ষণেও নামতে দেখা গেল মেসিকে।

প্রথমার্ধে আর্জেন্টিনার দুরন্ত ফুটবলের পিছনে কোচ স্কালোনির মস্তিষ্কের প্রশংসা করতে হয়। তিনি জানতেন ফ্রান্সের সেরা দুই ফুটবলার এমবাপে ও গ্রিজম্যান। এমবাপে খেলেন প্রান্ত ধরে। গ্রিজম্যান খেলেন মাঝখান থেকে। অনেকটা মেসির মতো। এমবাপের দৌড় বন্ধ করার জন্য মোলিনা ও ম্যাক অ্যালিস্টারকে রেখেছিলেন স্কালোনি। এমবাপেকে নজরে রাখলেন তারা। এক বারের জন্যও ফাঁকা পেলেন না এমবাপে। প্রথমার্ধে এক বার ছাড়া আর্জেন্টিনার বক্সে ঢুকতে পারেননি এমবাপে। প্রথমার্ধে জোড়া গোল খাওয়ার পরে বাধ্য হয়ে দেম্বেলে ও অলিভিয়ের জিরুকে তুলে নেন ফ্রান্সের কোচ। এমবাপেকে প্রধান স্ট্রাইকার করে দেওয়া হয়। তাতে তার কার্যকারিতা আরও কমে যায়।

আরও পড়ুন -  Radhika Apte: গোপনাঙ্গের ভিডিও ফাঁস হয়েছিলো, রাধিকা আপ্তের !
চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা। ছবিঃ সংগৃহীত

পুরো ম্যাচে মেসি ছাড়া আর্জেন্টিনার আরও এক জনের নাম করতেই হয়। আঞ্জেল ডি মারিয়া। চোটের কারণে নকআউটের কোনও ম্যাচে খেলেননি। ফাইনালের জন্য তাকে বাঁচিয়ে রেখেছিলেন কোচ লিওনেল স্কালোনি। দি মারিয়া না থাকায় আগের তিন ম্যাচে যেটা দেখা যায়নি। প্রথম গোলের পিছনে ডি মারিয়া ভূমিকা বেশি। বক্সের মধ্যে তাকে ফাউল করেন ওসমান দেম্বেলে। পেনাল্টি পায় আর্জেন্টিনা। স্পটে বল বসালেন মেসি। এক বার চোখ বন্ধ করলেন। একটু সময় নিলেন। তার পরে হুগো লরিসকে ভুল দিকে ফেলে গোল করলেন। ফাইনালে গোল করে মেসির উচ্ছ্বাস প্রকাশেও দেখা গেল নতুনত্ব।

আর্জেন্টিনার দ্বিতীয় গোল এল ডি মারিয়ার পা থেকেই। ৩৫ মিনিটে দ্বিতীয় গোল আর্জেন্টিনার। ২-০ আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে দিলেন ডি’মারিয়া। গোলের প্রেক্ষাপট তৈরি করলেন সেই মেসিই। ফ্রান্সের রক্ষণের বুক চিড়ে তার বাড়ানো সোনালি পাস পান ম্যাক অ্যালিস্টার। বল পান ডি’মারিয়া। দুরন্ত গোল মেসির সতীর্থের।

দ্বিতীয়ার্ধে খেলা যত গড়াল তত ম্যাচে দাপট দেখাতে শুরু করলেন কিলিয়ান এমবাপে। বয়সের ছাপ কোথাও হয়তো দেখা গেল মেসির খেলায়। বল ধরছিলেন। সে ভাবে আক্রমণ তৈরি করতে পারছিলেন না। অন্য দিকে এমবাপে নিজের পছন্দের জায়গায় খেলা শুরু করতেই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠলেন। বক্সের মধ্যে ওটামেন্ডি ফাউল করায় পেনাল্টি পায় ফ্রান্স। গোল করেন এমবাপে। দু’মিনিট পরেই বক্সের মধ্যে থেকে ডান পায়ের দুরন্ত শটে ফ্রান্সের হয়ে দ্বিতীয় গোল করেন এমবাপে। নির্ধারিত সময়ের শেষ ১০ মিনিটে এগিয়েও যেতে পারত ফ্রান্স। এমবাপের জোরালো শট একটুর জন্য বাইরে বেরিয়ে যায়। খেলার সংযুক্তি সময়ে আবার ফ্রান্সের গোল লক্ষ্য করে একটি শট মেরেছিলেন মেসি। নিজেকে শূন্যে ছুড়ে দিয়ে সেই বল বাঁচান লরিস।

আরও পড়ুন -  Qatar World Cup-2022: মাঠে নামবে ছয়টি দল, ক্যামেরুন-ব্রাজিলসহ

অতিরিক্ত সময়েও আক্রমণ, প্রতি আক্রমণের খেলা চলতে থাকে। প্রথমার্ধে বেশি সুযোগ পায় আর্জেন্টিনা। সুযোগ নষ্ট করেন আলভারেজ। দ্বিতীয়ার্ধে গোল করেন মেসি। লাউতারো মার্তিনেসের শট লরিস আটকে দিলেও ফিরতি বলে গোল করেন মেসি। কিন্তু খেলা শেষ হওয়ার তিন মিনিট আগে মন্তিয়েল বক্সের মধ্যে হ্যান্ডবল করায় পেনাল্টি পায় ফ্রান্স। নিজের তিন নম্বর গোল করে বিশ্বকাপের নিজের প্রথম হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন এমবাপে। শেষ দিকে ম্যাচ জেতার সহজ সুযোগ পেয়েছিলেন কোলো মুয়ানি। তার শট দারুণ বাঁচান মার্তিনেস। খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে।

ছবিঃ সংগৃহীত