বৃহস্পতি গ্রহের অনেক কিছুই এখনও অজানা মানুষের। প্রযুক্তির কল্যাণে ধীরে ধীরে এই গ্রহের অনেক অজানা তথ্যই সামনে আসতে শুরু করেছে।
কৃতিত্ব যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসার জেমস ওয়েব টেলিস্কোপের। বিশ্বের সর্ববৃহৎ টেলিস্কোপ এটি। টেলিস্কোপটি এবার সামনে এনেছে বৃহস্পতি গ্রহের এক চোখধাঁধানো ছবি।
সম্প্রতি এ টেলিস্কোপে তোলা বৃহস্পতি গ্রহের বেশ কিছু ছবি উন্মুক্ত করেছেন বিজ্ঞানীরা। ছবিতে বৃহস্পতি গ্রহটির অভূতপূর্ব দৃশ্য দেখা গেছে। গত সোমবার বিজ্ঞানীরা ওই ছবিগওলো উন্মুক্ত করেন।
গবেষকেরা বলেন, জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ গত জুলাই মাসে বৃহস্পতি গ্রহের অভূতপূর্ব দৃশ্য ধারণ করে। এই ছবিতে গ্রহটির মেরুপ্রভা (নর্দান ও সাউদার্ন লাইটস) ও ঘূর্ণমান মেরু কুয়াশা দৃষ্টিগোচর হয়।
গ্রহটির ছোট–বড় অনেক ঝড়ের দৃশ্যের পাশাপাশি পৃথিবীকে গ্রাস করে ফেলার মতো বৃহস্পতির বিশাল লাল বিন্দু (গ্রেট রেড স্পট) স্পষ্টভাবে দেখা যায়। একটি ছবিতে বৃহস্পতির চারপাশে প্রায় বিবর্ণ একটি বলয়ের পাশাপাশি দুটি ক্ষুদ্র চাঁদও দৃষ্টিগোচর হয়।
পর্যবেক্ষণে সহায়তাকারী ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া বার্কলের জ্যোতির্বিজ্ঞানী ইমকে ডি প্যাটার বলেন, ‘আমরা বৃহস্পতি গ্রহকে এভাবে আগে দেখিনি। এটা বেশ অবিশ্বাস্য। সত্যি বলতে, এটি এত ভালোভাবে দেখা যাবে, এটা আমরা আশা করিনি।’
বৃহস্পতির ছবি ফুটিয়ে তুলতে কাজ করা যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের গবেষক দল ইনফ্রারেড ছবিকে কৃত্রিমভাবে নীল, সাদা, সবুজ, হলুদ ও কমলা রঙে রাঙান। হাবল স্পেস টেলিস্কোপটির উত্তরসূরি হিসেবে তৈরি জেমস ওয়েব টেলিস্কোপটি তৈরিতে ১০ বিলিয়ন মার্কন ডলার খরচ করে নাসা ও ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি।
গত বছরের শেষ দিকে এটি মহাকাশে কার্যক্রম শুরু করে। গত গ্রীষ্ম থেকেই ইনফ্রারেড ক্যামেরা ব্যবহার করে মহাবিশ্ব পর্যবেক্ষণ করছে টেলিস্কোপটি। এটি পৃথিবী থেকে ১০ লাখ মাইল দূরে অবস্থিত।
গত মাসে নাসার বিজ্ঞানীরা এই টেলিস্কোপ ব্যবহার করে পাওয়া ১ হাজার ৩০০ কোটি বছর আগের মহাবিশ্বের এক রঙিন ছবির বিষয়টি সামনে আনেন। আকাশগঙ্গা ছায়াপথের দূরতম স্থানে পৃথিবীসদৃশ একটি গ্রহে জল থাকার চিহ্নও শনাক্ত করে হইচই ফেলে দেয় জেমস ওয়েব। এখন আবার বৃহস্পতির অভূতপূর্ব ছবি দিয়ে বিশ্ববাসীকে বিমোহিত করল এই টেলিস্কোপটি।
সূত্রঃ বিবিসি।