আসন্ন পুরভোট কি পিছিয়ে দেওয়া যায়? কমিশন কে ৪৮ ঘন্টায় অবস্থান জানানোর নির্দেশ 

Published By: Khabar India Online | Published On:

মোল্লা জসিমউদ্দিন, কলকাতাঃ   শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের তরফে রাজ্য নির্বাচন কমিশন কে জানানো হয়েছে যে, আসন্ন পুরসভার ভোট কি একমাস / দেড়মাস পিছিয়ে দেওয়া যায়?  তা আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে কমিশন কে জানাতে হবে আদালত কে। আগামী ২২ জানুয়ারি রাজ্যের ঘোষিত চার  পৌরনিগমের ভোট নিয়ে বড় পর্যবেক্ষণ কলকাতা হাইকোর্টের। পুরভোট পিছানো নিয়ে বিবেচনার নির্দেশ দিল হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি অজয় কুমার মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ। চার থেকে ছয় সপ্তাহ পুরভোট পিছনো যায় কি? তা নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে সিদ্ধান্ত নিতে বলল কলকাতা  হাইকোর্ট।এদিন রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে ৪৮ ঘণ্টা সময়সীমা বেঁধে  দিল আদালত।আদালত শুক্রবার  স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, পুরভোট মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে।

আদালতকে জানানোর আর বিশেষ কিছু প্রয়োজন নেই। গোটি বিষয়টি নিয়ে এবার রাজ্য নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার মামলা চলাকালীন যে ভাবে রাজ্য ও নির্বাচন কমিশন একে অপরের দিয়ে ভোট স্থগিত রাখা নিয়ে দায় এড়িয়েছে, তাতে স্তম্ভিত আদালত। গত বৃহস্পতিবারের গোটা শুনানি পর্বে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির উল্লেখ্যযোগ্য পর্যবেক্ষণ ছিল, -‘ আইন তৈরির ২৭ বছরেও কেন স্পষ্ট নয় কে পুরভোট করবে! ‘তবে শুক্রবার  আদালতের তরফে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়, রাজ্য নির্বাচন কমিশনকেই বিবেচনা করে দেখতে হবে ৪-৬ সপ্তাহ পুরভোট পিছিয়ে দেওয়া যায় কিনা।  সংবিধান বিশেষজ্ঞ আইনজীবী বৈদূর্য ঘোষাল জানান , ” কলকাতা হাইকোর্টের এই অবস্থানের মাধ্যমে স্পষ্ট হল যে নির্বাচন সংক্রান্ত সর্বোচ্চ ক্ষমতা কমিশনকেই দিতে চায় আদালত”।রাজ্যের করোনার বর্তমান পরিস্থিতির পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য তুলে দেওয়া হয়েছে আদালতের কাছে। সেক্ষেত্রে নির্বাচন এক থেকে দেড় মাস পিছিয়ে দেওয়ার কথা মনে করছে আদালত। আর সে ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারে রাজ্য নির্বাচন কমিশনই। গত বৃহস্পতিবারের শুনানিতে ভোট পিছানোর দায়িত্ব নিজেদের কাঁধ থেকে ঝেড়ে ফেলতে চেয়েছে কমিশন ও রাজ্য সরকার। তবে শুক্রবার আদালত স্পষ্ট করে দিয়েছে, ভোট সংক্রান্ত যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব কেবল রাজ্য নির্বাচন কমিশনেরই। শুক্রবার  সুপ্রিম কোর্টের একাধিক জাজমেন্টের উল্লেখ করেছে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ । অর্ডারের একেবারের শেষ পংক্তিতে সেই বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন -  ধর্মতলায় শহীদ দিবসে জনজোয়ার

এদিনের আদালতের পর্যবেক্ষণ প্রসঙ্গে মামলাকারীর আইনজীবী জানান , “আদালত এদিন জানিয়ে দিয়েছে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কমিশন একটা সিদ্ধান্ত নেবে পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে। আমাদেরকেও বলা হয়েছে, আমাদের কাছে যা নথি আছে, তা কমিশনকে জমা দিতে। আমরাও আবেদন জানাব। যাতে নির্বাচন পিছনো যায়। ”শুক্রবারের আদালতের পর্যবেক্ষণের আরও একটি বিষয় উল্লেখ্যযোগ্য। যেহেতু নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন স্বতন্ত্র সংস্থা। আবার হাইকোর্টও একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান। তাই আদালত আদৌ কমিশনের এই সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ করতে পারে কিনা, তা নিয়েই প্রশ্ন উঠতে পারে। তাই সরাসরি হাইকোর্ট পুরভোট নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত না নিয়ে, তা কমিশনের ওপরই ছাড়লো।যাতে বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট অবধি মামলা না গড়ায়।প্রসঙ্গত, মামলাকারীর তরফে আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য প্রথম থেকেই সওয়াল করেছিলেন, “রাজনৈতিক দলগুলো প্রচার করছেন প্রচুর মানুষ নিয়ে। ভ্যাকসিন নেওয়ার পর এত লোক জড়ো হলে করোনা আরও বাড়বে। এত কিছু ব্যবস্থার পরেও প্রচুর লোক একত্রে জড়ো হচ্ছে।” এই বিষয়টি এদিন আদালতে তুলে ধরেন তিনি।

আরও পড়ুন -  Potato Juice: আলুর রস দিয়ে, সানবার্ন দূর করার উপায়

তবে গত বৃহস্পতিবার গোটা শুনানি পর্বে প্রথম থেকেই রাজ্য সরকার ও নির্বাচন কমিশনের মধ্যে চলে দায় এড়ানোর চেষ্টা। কে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে ভোট পিছিয়ে দেওয়ার ? তা নিয়েই চলে টানাপোড়েন।এদিনের আদালতের নির্দেশ প্রসঙ্গে মামলাকারীর আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, “আদালত অত্যন্ত সাংবিধানিকভাবে ও সঙ্গতকারণে এই নির্দেশ দিয়েছে। নির্বাচন কমিশন একটা স্বাধীন সংস্থা। তাকে স্বাধীনভাবে বিচারবিবেচনা করতে হবে। সরকারের মুখাপেক্ষী না হয়ে। আদালত নিজে থেকে স্থগিতাদেশ দেয়নি। আমার মনে হয় আদালত স্বতন্ত্র কোনও প্রতিষ্ঠানের সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ করতে চায়নি”। তবে  কলকাতা হাইকোর্টের তরফে যে একমাস কিংবা দেড়মাস পুরভোট পিছিয়ে দেওয়া যায় কিনা বলে যে পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে সার্বিক পরিস্থিতি বিচার করে।তাতে কমিশন কে আদালতের পর্যবেক্ষণ গুরত্ব সহকারে পর্যালোচনা করতে হবে, তা অত্যন্ত স্পষ্ট হয়েছে।

আরও পড়ুন -  Canada: ট্রুডো ও সোফি, ১৮ বছরের সংসারের ইতি