প্রাণঘাতী ব্যাধি এইডস সম্পর্কে সবারই কমবেশি ধারণা রয়েছে। কিছু ভুল ধারনার কারণে এইডস রোগীকে সমাজ খুবই খারাপ চোখে দেখে থাকে। সবারই একটা ধারণা,এই রোগটি হওয়ার মূল কারণ অবৈধ শারীরিক সম্পর্ক!
শারীরিক সম্পর্ক ছাড়াও নানা কারণ আছে এইচআইভি পজেটিভ হওয়ার। এইডসের জন্য দায়ী ‘হিউম্যান ইমিউনো ডেফিশিয়েন্সি ভাইরাস’ নামের রেট্রোভাইরাসটি। মানুষের রক্ত ও অন্যান্য দেহ রসেই একমাত্র বেঁচে থাকে এই ভাইরাস। এটি রোগীর দেহ থেকে অন্যের শরীরে রক্ত ও বীর্যের মাধ্যমে ছড়ায়। বীর্যের মাধ্যমে সংক্রমিত হয় বলেই এই অসুখকে ‘সেক্সুয়ালি ট্রান্সমিটেড ডিজিজ’ হিসেবে গণ্য করা হয়।
এই ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করলেই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা একেবারে কমে যায়। ফলে ‘অ্যাকোয়ার্ড ইমিউনো ডেফিশিয়েন্সি সিনড্রোম’ বা এইডসের প্রভাবে মৃত্যু অবধারিত হয়ে ওঠে। যদিও এইচআইভিতে আক্রান্তদের বাঁচাতে চিকিৎসাবিজ্ঞানের চেষ্টার শেষ নেই। চলছে নানা গবেষণা।
চলুন জেনে নেয়া যাক, শারীরিক সম্পর্ক ছাড়াও যেসব কারণে হতে পারে এইডসঃ
- এইচআইভি সংক্রমিত ব্যক্তির দেহে প্রবেশ করা ইনজেকশনের সিরিঞ্জ , অস্ত্রোপচারের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি সুস্থ ব্যক্তির দেহে ভুলবশত ব্যবহার হলেও এই রোগ ছড়াবে।
* এইচআইভিতে আক্রান্তদের মাড়ির ক্ষত ও দেহের ক্ষত থেকে নিঃসৃত লালা ও রস থেকেও এই ভাইরাস ছড়াতে পারে।
- কনডম ব্যবহার করলে এইচআইভি আক্রান্ত হওয়ার কোনই সম্ভাবনা নাই এমন ধারনাও ঠিক নয়। কারণ আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে যৌন মিলনের সময়ে কনডম ফুটো হয়ে গেলে আপনি তাতেও আক্রান্ত হতে পারেন।
- ইঞ্জেকশন নেয়ার সময় নতুন সিরিঞ্জ ও সূচ ব্যবহার করা না হলে দ্রুত এই ভাইরাস অন্যের শরীরে প্রবেশ করতে পারে।
- এইডসে আক্রান্ত প্রসূতির সন্তানের শরীরেও এইডস হতে পারে। বুকের দুধ খাওয়ানোর মাধ্যমে শিশুর দেহে এই ভাইরাস প্রবেশ করতে পারে। ইউনিসেফের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিশ্বে প্রতি ২ মিনিটে একটি শিশু এইডসে আক্রান্ত হচ্ছে।
- আধুনিক কিছু ওষুধে এই রোগে রোগীর জীবন কিছুদিন বাড়ানো গেলেও সে সব চিকিৎসা পদ্ধতি মধ্যবিত্তের আয়ত্বের বাইরে।
- বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষা করে নিবেন। কারণ বর বা কনে কারও যদি শরীরে এই ভাইরাস থেকে থাকে, তাহলে যৌন সম্পর্কের ফলে অন্যজনের শরীরে সহজেই প্রবেশ করবে এই রেট্রোভাইরাস।