প্রথমবারের মতো তালেবানের নতুন সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মুখোমুখি বৈঠকে বসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দল। বৈঠকে ‘স্পষ্ট ও পেশাদার’ আলোচনা হয়েছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। কাতারের দোহায় স্থানীয় সময় শনিবার ও রোববার অনুষ্ঠিত হয় এ বৈঠক।
বৈঠকের পর যুক্তরাষ্ট্র আরও জানায়, তালেবানকে কথা দিয়ে নয়, কাজে প্রমাণ করতে হবে।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, চলতি সপ্তাহে দোহা আলোচনায় গুরুত্ব পেয়েছে নিরাপত্তা, সন্ত্রাসবাদ নিয়ে উদ্বেগ এবং যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশের নাগরিকদের নিরাপদে ফেরার নিশ্চয়তার বিষয়গুলো নিয়ে। আফগানিস্তানের সমাজ ব্যবস্থায় সবক্ষেত্রে নারীদের সর্বাত্মক অংশগ্রহণসহ মানবাধিকার বিষয়গুলোও উঠে এসেছে আলোচনায়।
উভয় পক্ষ থেকে আফগান জনগণের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের মানবিক সহায়তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তালেবানের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ‘ইতিবাচক’ আলোচনা হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করার কথাও জানান তারা।
২০ বছরের আফগানযুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে গত ৩১ আগস্ট দেশটি থেকে সেনা প্রত্যাহার সমাপ্তি ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয় এক লাখ ২৪ হাজার আমেরিকান এবং আফগান দোভাষীকে। কিন্তু সময়মতো লোকজন সরাতে না পেরে ঝুঁকির মধ্যে পড়েন আফগান দোভাষীরা, যারা গত ২০ বছর ধরে আমেরিকা ও তাদের মিত্রদের সহযোগিতা করেছেন।
আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল গত ১৫ আগস্ট দখল করে নেয় তালেবান। এরপর থেকে অরাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে দেশটির অর্থনীতিতে ধস নেমে আসে। কার্যত অচল হয়ে পড়ে গোটা দেশ। বন্ধ হয়ে যায় বিদেশি সহায়তা। খাবারের সংকটে পড়ে আফগানরা তোশক-বালিশও বিক্রি করেছেন এমন খবরও পাওয়া গেছে। তালেবানের নতুন সরকারের এক মাস হয়েছে। তাদের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়ার বিষয়টি এখনও প্রশ্নবিদ্ধ। ফলে নানা ধরনের সংকট আর ভয়-ভীতির মধ্য দিয়ে দিন কাটাচ্ছেন আফগানরা। এর মাঝে শুক্রবার (৮ অক্টোবর) কুন্দুজের একটি শিয়া মসজিদে আত্মঘাতী বোমা হামলায় অন্তত ৫০ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হন শতাধিক।
সূত্র: রয়টার্স, আল জাজিরা