রবিবার লখিমপুর খিরিতে কৃষক বিক্ষোভ চলাকালীন প্রায় ৮ জন নিহত। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কার্যত উত্তপ্ত পরিস্থিতি গোটা উত্তরপ্রদেশে। আজ লখিমপুরে যাওয়ার কথা ছিল উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সপা নেতা অখিলেশ যাদবের। তবে তার আগেই তাঁকে গৃহবন্দী করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
গৃহবন্দী হওয়ার কারণে ঘটনার প্রতিবাদে নিজের বাড়ির সামনেই ধর্নায় বসেন অখিলেশ। ধর্নামঞ্চ থেকে তিনি সরাসরি জানান, ‘ব্রিটিশদের থেকেও বেশী জুলুম করা হয়েছে কৃষকদের উপরে। কৃষকদের উপর এত অন্যায় এবং জুলুম ব্রিটিশরাও করেনি যতটা বিজেপি সরকার করেছে। বিজেপির সরকার সম্পূর্ণভাবে বিফল হয়েছে। সবার আগে গৃহ প্রতিমন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হবে। যে কৃষকদের প্রাণ গিয়েছে তাঁদের ২ কোটি টাকা সাহায্য করতে হবে এবং পরিবারের কাউকে সরকারি চাকরি দিতে হবে। যিনি গাড়ি চালিয়েছেন তার এখনই ৩০২ ধারায় জেল হওয়া উচিৎ’।
অখিলেশ যাদবকে গৃহবন্দী করার পরেই ক্ষিপ্ত জনতা তাঁর বাড়ির সামনেই একটি পুলিশের জিপে আগুন ধরিয়ে দেয়। উল্লেখ্য, উত্তরপ্রদেশের লখিমপুর খিরিতে উপ-মুখ্যমন্ত্রী কেশব প্রসাদ মৌর্যের আসার ঘটনায় কৃষকরা বিক্ষোভ দেখান। বিক্ষোভ চলাকালীন সময়ে কৃষকদের উপর আক্রমণের অভিযোগ ওঠে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর গাড়িতে চাপা পড়ে ২ জন এবং গুলি চালিয়ে আরও ২ কৃষককে খুন করার অভিযোগ ওঠে। সংঘর্ষের জেরে আরও ৪ জন সহ মোট ৮ জনের মৃত্যু হয় বলে জানা গিয়েছে। অপরদিকে অজয় মিশ্র এবং তাঁর ছেলে আশিস মিশ্র দাবি করেন কৃষকরাই কনভয়ের উপর হামলা চালায়। ১ জন ড্রাইভার এবং ২ জন বিজেপি কর্মী সহ মোট ৩ জনকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তাঁরা। সূত্রের খবর, হিংস্রতার ঘটনায় আশিস মিশ্রের বিরুদ্ধে FIR দায়ের করা হয়। ঘটনার পরে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের তরফে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় লখিমপুরে কোনও রাজনৈতিক নেতৃত্বকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।
১৪৪ ধারা জারি করা হয় লখিমপুরে। উত্তরপ্রদেশের একাধিক নেতার বাড়িতে পুলিশ মোতায়েন করে তাঁদের গৃহবন্দী করার অভিযোগ ওঠে। সোমবার কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভাদ্রা ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ করতে গেলে তাঁকে হরগাঁও থানা এলাকায় আটক করে পুলিশ। আজই আবার অখিলেশ লখিমপুর রওনা দেওয়ার পথে রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে তাঁর গাড়ি আটক করে পুলিশ। ফলত, রাস্তাতেই ধর্নায় বসেন তিনি। লাঠিচার্জ করে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয় পুলিশ। পুলিশ আধিকারিকদের সাথে বৈঠক শেষেও ধর্না থেকে উঠতে নারাজ হন অখিলেশ। এরপর তাঁকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয় গৌতম পল্লী থানায়।
পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিং ইতিমধ্যেই উত্তরপ্রদেশের সরকারের কাছে লখিমপুর যাওয়ার অনুমতি চেয়ে আবেদন জানিয়েছেন। অপরদিকে CPI সাধারণ সম্পাদক ডি রাজার ঘটনা প্রসঙ্গে বক্তব্য, লখিমপুর খিরিতে গতকাল যা ঘটেছিল তা গণতন্ত্রে সহ্য করা যায় না। কৃষকদের প্রতিবাদ করার অধিকার আছে।