খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, ওয়েবডেস্কঃ বাংলায় বিজেপিতে অত্যন্ত বড় মুখ এতদিনকার বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বিজেপির রাজ্য সভাপতি হওয়ার পরেই বাংলায় সাফল্যের মুখ দেখতে পেরেছে ভারতীয় জনতা পার্টি। তার নেতৃত্বে বঙ্গে ক্ষমতা দখল করতে না পারলেও ৭৭ বিধায়ক ও ১৮ জন সাংসদ তুলে আনতে পেরেছে বিজেপি, যায় একটা সময় ছিল একেবারে অসম্ভব। এমনকি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজেও বাংলায় দিলীপ ঘোষের এই ভূমিকার প্রশংসা করেছেন। কিন্তু এবারে রাজ্য সভাপতি পদে দিলীপ ঘোষের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। ভারতীয় জনতা পার্টির রীতি অনুসারে দুবার রাজ্য সভাপতি পথে যদি বসে যান কেউ তাহলে ওই পদ আর আঁকড়ে থাকা যায় না। ইতিমধ্যেই দিলীপ ঘোষের রাজ্য সভাপতি হিসেবে দশবছর পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। এই কারণে এবার অবশ্যম্ভাবীভাবে দিলীপ ঘোষকে সরে যেতে হবে বিজেপি রাজ্য সভাপতি পদ থেকে। তাহলে এবারে বিজেপি রাজ্য সভাপতি কে হবেন ? সবাই যখন এই নিয়ে দ্বন্দ্বে রয়েছে সেই মুহূর্তে নিজেই চমকে দিয়েছেন দিলীপ ঘোষ।
বিজেপি সূত্রের খবর, সম্প্রতি বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতির কাছে দিলীপ ঘোষ নতুন রাজ্য সভাপতির জন্য একটি নাম প্রস্তাব করেছেন নিজেই। জানা যাচ্ছে বিজেপির রাজ্য সভাপতি পদে বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার এর নাম প্রস্তাব করেছেন দিলীপ ঘোষ নিজেই। প্রকৃতপক্ষে কিন্তু বিজেপির অন্দরে সুকান্ত মজুমদার দিলীপ ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। তিনি বঙ্গ বিজেপি খুব একটা পরিচিত মুখ নন কিন্তু নিজের এলাকায় তিনি বারংবার দাপট দেখিয়ে এসেছেন। উত্তরবঙ্গের নেতা, পাশাপাশি নিজেও ওই নির্বাচনে জয়লাভ করেছেন। তাই এই পরিস্থিতিতে কার্যত সুকান্ত মজুমদার বিজেপি রাজ্য সভাপতি পদে বাঁধা।
বিজেপি সূত্রের খবর, চলতি বছরের নভেম্বর মাসে রাজ্য সভাপতি হিসেবে মেয়াদ শেষ হচ্ছে দিলীপ ঘোষের। তাই তার আগে নিজেকে নতুন বিজেপি রাজ্য সভাপতি বেছে নিতে হয়। এমনিতেই দুবার রাজ্য সভাপতি পদে বসে পড়েছেন তিনি। যখন বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা ছিল মাত্র তিন সেখান থেকে তিনি তুলে এনেছেন ৭৭ এ। এই পরিস্থিতিতে বাংলায় বিজেপির ক্ষেত্রে অবশ্যই দিলীপ ঘোষের অবদান কোনভাবেই অনস্বীকার্য নয়। বাংলা নির্বাচনী প্রচারে এসে মঞ্চে দাঁড়িয়ে মুক্তকণ্ঠে তার প্রশংসা করেছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তার পাশাপাশি, বিজেপিতে তিনি যে অত্যন্ত বড় একজন নেতা হিসেবে পরিচিত সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। সেক্ষেত্রে সভাপতি পদ যাওয়ার পরে অনেকের মতে দিলীপ ঘোষকে কোনভাবে পুরস্কৃত করা অত্যন্ত প্রয়োজন। অনেকের ধারণা ছিল মোদির দ্বিতীয় মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণের সময় সেই মন্ত্রিসভায় জায়গা করে নেবেন দিলীপ ঘোষ। কিন্তু সেটা হয়নি, বরং তিনি এখনো পর্যন্ত রয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। তবে তার আগেই নিজের কাছের লোকের নামই প্রস্তাব করে গেলেন নতুন সভাপতি হিসেবে।
অন্যদিকে রাজ্য বিজেপি র অপর একটি অংশ মনে করছে এবারে রাজ্যের সংগঠনের দায়িত্ব মহিলা কোন একজনকে দেওয়া উচিত। সে ক্ষেত্রে দেবশ্রী চৌধুরী ও লকেট চট্টোপাধ্যায়, এই দুইজনের মধ্যে কোন একজন হতে পারেন রাজ্য সভাপতি। কিন্তু এই সম্ভাবনা অত্যন্ত ক্ষীণ। এর আগে দেবশ্রী চৌধুরী এককালের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ছিলেন কিন্তু এখন আর তিনি নেই। অন্যদিকে লকেট চট্টোপাধ্যায় নিজের সাংসদ এবং নিজের এলাকায় তার বেশ ক্ষমতা রয়েছে। এতদিন পর্যন্ত কোন মহিলার হাতে বঙ্গ বিজেপির রাজ্য সভাপতি পদ যায়নি। তাহলে এবারে কি, নিয়ম ভেঙে কোন মহিলাকে এই পদ দেবে ভারতীয় জনতা পার্টি?