খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, ওয়েবডেস্কঃ মিউকরমিকোসিস বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাস নামে সম্প্রতি করোনার নতুন একটি ভ্যারিয়েন্ট দেখা দিয়েছে। ভারতের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের পাশাপাশি বাংলাদেশেও কারও কারও মধ্যে এ রোগ সংক্রমিত হচ্ছে।
জানা গেছে, করোনা থেকে সেরে ওঠা রোগীরাই এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ব্ল্যাক ফাঙ্গাস রোগকে বৈশ্বিক মহামারি ঘোষণা করেছে। প্রাণঘাতী এ ভ্যারিয়েন্ট থেকে সুরক্ষার উপায় নিয়েই আজকের আয়োজন-
ব্ল্যাক ফাঙ্গাস কী?
ব্ল্যাক ফাঙ্গাস একটি জটিল রোগ। গুটিকয়েক মানুষের এ রোগ হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাধারণত যাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাদের ব্ল্যাক ফাঙ্গাস সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে। পাশের দেশ ভারতের প্রায় ২২ টি অঙ্গরাজ্যে করোনা থেকে সেরে ওঠা রোগীরা এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। চিকিৎসকরা বলছেন, ব্ল্যাক ফাংগাস শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট করে দেয়।
কী ভাবে বুঝবো ব্ল্যাক ফাঙ্গাস হয়েছে?
কারও কারও মধ্যে জ্বর এবং চোখ বা নাকে ভীষণ যন্ত্রণা, মাথা ব্যথা, কফ, শ্বাসকষ্ট, রক্তবমি ও অবসাদগ্রস্ততা দেখা দেয়। এসব উপসর্গ দেখা দিলে বুঝবেন রোগী ব্ল্যাক ফাংগাস হওয়ার প্রাথমিক ধাপে রয়েছেন। এছাড়াও ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সুনির্দিষ্ট কিছু উপসর্গ রয়েছে
১. সিনাস্টিস- নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, নাক দিয়ে রক্ত পড়া।
২. গাল বা মুখে ব্যথা।
৩. দাঁত ক্ষয় হওয়া।
৪. শরীরের রং বদলে যাওয়া।
৫. ভীষণ যন্ত্রণা।
৬. বুকে ব্যথা।
চিকিৎসকরা কী বলছেন?
ব্ল্যাক ফাঙ্গাস থেকে সুরক্ষা পেতে ডায়েবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। সেই সঙ্গে মাদক থেকে দূরে থাকতে হবে। এ রোগে আক্রান্ত হলে চার থেকে ছয় সপ্তাহ চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। বিশেষজ্ঞরা বলেন, ব্ল্যাক ফাঙ্গাস থেকে সুরক্ষা পেতে হাইপারগ্লাইসেমিয়া এবং রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমিয়ে আনা জরুরি। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করতে হবে।
ব্ল্যাক ফাঙ্গাস থেকে সুরক্ষার উপায়
যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল ফর ডিজিজ কন্ট্রোল বলছে, যেসব জায়গায় ছত্রাকের উপস্থিতি আছে সেসব জায়গা এড়িয়ে যাওয়া খুবই কঠিন। তবে যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল তারা কিছু পদক্ষেপ নিতে পারে যাতে করে মিউকোরমাইকোসিস সংক্রমণের সম্ভাবনা কমিয়ে আনা যেতে পারে-
১. যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল বা সিডিসি বলছে, যেসব জায়গায় অনেক বেশি ধুলোবালি রয়েছে সেসব জায়গা এড়িয়ে চলা। যদি সেসব জায়গা এড়িয়ে চলা সম্ভব না হয়, তাহলে এন৯৫ মাস্ক ব্যবহার করা।
২. প্রাকৃতিক দুর্যোগে যেসব স্থাপনা জলের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেগুলোর সরাসরি সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা। সিডিসি বলছে এসব জায়গা থেকে ছত্রাকের সংক্রমণ হতে পারে।
৩. শরীরের চামড়ায় যাতে কোন ইনফেকশন না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখা। কোথাও কেটে গেলে কিংবা চামড়া উঠে গেলে সেটি যাতে ধুলো-ময়লার সংস্পর্শে না আসে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
৪. কোভিড-১৯ রোগীদের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
৫. রোগীর স্টেরয়েড ব্যবহারের ক্ষেত্রে সাবধানী হতে হবে।
৬. রোগীকে অক্সিজেন দেবার সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা।
৭. মাস্ক ব্যবহারের ক্ষেত্রে পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে।
যদিও যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল বলছে, এসব সতর্কতা মূলক ব্যবস্থা নিলেই যে মিউকোরমাইকোসিস সংক্রমণ এড়ানো যাবে সেটি এখনো পুরোপুরি প্রমাণিত নয়। সূত্র: বিবিসি বাংলা।