টুঙ্কা সাহা, খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, আসানসোলঃ পারিবারিক সম্পতির বিবাদকে রাজনৈতিক হাতিয়ার করতে চাইছে বিজেপি ৷ পুরনিগমের ৫০ নং ওয়ার্ড তথা চেলিডাঙা অঞ্চলে একটি বাড়ির দেওয়ালে বিজেপির দেওয়াল লিখনকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তর্জা ৷ যেখানে তৃণমূল ও বিজেপি উভয় পক্ষই পরস্পরকে দোষারোপ করছে ৷
ঘটনার সূত্রপাত হয় সোমবার বিকেলে ৷ যখন বিজেপির কর্মীরা প্রার্থীর প্রচার তুলে ধরতে ওই বাড়ির দেওয়ালে লিখতে শুরু করে ৷ সেই সময় অভিরূপ দুবে নামের এক যুবক নিজেকে ওই বাড়ির একজন মালিক হিসাবে দাবি করে বিজেপি কর্মী সমর্থকদের দেওয়াল লিখন বন্ধ করে ওখান থেকে সরে যেতে বলে। সেই সময় বিনোদ দুবে নামের অপর ব্যক্তি ওই বাড়িতে বসবাসকারি হিসাবে বাড়ির ও সম্পতির মালিক হিসাবে দাবি করে ও নিজেকে বিজেপির কর্মী হিসাবে পরিচয় দিয়ে দেওয়াল লিখন শুরু করে ৷ পাশাপাশি অভিরূপকে ওই অঞ্চল থেকে ঘাড় ধাক্কা সহ মারামারি করে সরিয়ে দেয়।
বর্তমানে ওই বিতর্কিত বাড়িটিতে ৮০ বছরের বৃদ্ধা মহিলা তারামণি দুবে ও তার দুই ছেলে বিনোদ ও রাজু দুবে বসবাস করে ৷ তারামণি দুবে নিজে একজন অসুস্থ মহিলা ৷ কিডনি জনিত সমস্যায় ভুগছেন ৷ যদিও ওই বাড়িটির আরো দুই অংশিদার রয়েছে ৷ যাদেরকে বহুদিন ধরেই বেদখল করে রেখেছে বিনোদ ও রাজু। অন্যদিকে অভিরূপ তারামণি দুবের নাতি। কাকাদের অত্যাচারে তারা অন্যত্র বসবাস করছে। অভিরূপ দাবি করে, দাদুর চার ছেলে থাকলেও দুই কাকা তাদের বেদখল করেছে ৷ বিজেপি প্রার্থীর প্রচারে তারা কোনো এনওসি দেখাতে পারেনি। ঘটনার চাপান উতোরে আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ ও জেলা নির্বাচন কমিশনের আধিকারিক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উভয় পক্ষের দেওয়াল লিখনই মুছে দিতে নির্দেশ দিয়েছেন ৷ উল্টোদিকে মঙ্গলবার সকালে বিনোদ দুবে রাজু দুবে ও তারামণি দুবে অভিযোগ তোলে সোমবার রাতের অন্ধকারে বিদায়ী পুরপিতা অভিজিৎ ঘটকের নেতৃত্বে তৃণমূলের গুণ্ডারা উপস্থিত হয়ে তাদের বাড়িতে ভাঙচুর চালায় ও তাদের ঘর থেকে বের করে দিতে চায়। মঙ্গলবার সকালে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বিজেপি প্রার্থী কৃষ্ণেন্দু মুখার্জি সরাসরি রাজ্যের বিদায়ী মন্ত্রী মলয় ঘটকের ভাই অভিজিৎ ঘটকের বিরুদ্ধে এলাকায় রাবণ রাজ চালানোর অভিযোগ করেন। অন্যদিকে মঙ্গলবার বিকেলে বিজেপির আইটি সেলের নেতা অমিত মালব্য তার ট্যুইটে বিষয়টি তুলে ধরে বলেন, আসানসোলের চেলিডাঙায় ৮০ বছরের বৃদ্ধা মহিলার ওপর তৃণমূলিরা অত্যাচার চালাচ্ছে। যেহেতু তিনি একজন বিজেপি কর্মীর মা। ওই বিজেপি কর্মী যেহেতু প্রার্থীর প্রচারে দেওয়াল লিখনে নেতৃত্ব দিয়েছিল।
পাশাপাশি তৃণমূল আশ্রিত গুণ্ডারা ওই বিজেপি কর্মীর বাড়িতে চড়াও হয়ে ভাঙচুর চালিয়েছে, বাইক ভেঙে দিয়েছে ৷ অমিত মালব্যর ট্যুইটের পরেই রাজ্য রাজনীতিতে বিষয়টি নিয়ে শোরগোল পড়ে যায় ৷ একই সাথে তৃণমূলের পক্ষ থেকে বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয় ৷ তবে মঙ্গলবার রাতে বিষয়টি নিয়ে বিজেপির মিথ্যে প্রচারের অভিযোগ তুলে আসরে নামেন তৃণমূলের বিদায়ী পুরপিতা অভিজিৎ ঘটক। তিনি বলেন, গত পাঁচদিন কেন, পাঁচ বছরেও ওই বাড়ির ভিতরে তিনি বা তার অনুগামীরা প্রবেশ করেননি ৷ ওই বিতর্কিত বাড়ির পাশেই সিসিটিভির ফুটেজ রয়েছে ৷ যা খতিয়ে দেখা যেতে পারে ৷ আসলে অমিত মালব্য বিজেপির আইটি সেলের নেতা ফেক ভিডিও বানিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করতে ওস্তাদ। তারা চাইছে মিথ্যা প্রচারের মাধ্যমে ভোটে জিততে, আসলে বিজেপির পায়ের তলার মাটি সরে গেছে।