গঙ্গা সংরক্ষণ ও সে বিষয়ে উৎসাহদান, পরিবেশ এবং সংস্কৃতি আমাদের দেশের উন্নয়নের ভিত্তি : রাষ্ট্রপতি কোবিন্দ

Published By: Khabar India Online | Published On:

খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, নয়াদিল্লিঃ    “গাঙ্গা, পরিবেশ ও সংস্কৃতি” সংরক্ষণ এবং সে বিষয়ে উৎসাহদান দেশের উন্নয়নের ভিত্তি বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি শ্রী রামনাথ কোবিন্দ। বারাণসীতে আজ দৈনিক জাগরণ আয়োজিত গঙ্গা, পরিবেশ ও সংস্কৃতি বিষয়ক জাগরণ ফোরামের এক অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী ভাষণে একথা জানান তিনি। রাষ্ট্রপতি বলেন, এই ধরণের সমস্যাগুলি নিয়ে শুধুমাত্র আলোচনা করাই যথেষ্ট নয়, এর সমাধানে মানুষের অংশগ্রহণ সুনিশ্চিত করতে হবে। তবেই মানবজাতির পথ সুগম হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

রাষ্ট্রপতি বলেন, গঙ্গার পবিত্রতা আমাদের জীবনে সর্বাগ্রে। এটি শিখিয়েছে যে আমাদের মন, কথাবলা এবং আচার-আচরণ গঙ্গার মতোই শুদ্ধ হওয়া উচিত। তিনি বলেন, গঙ্গার পরিচ্ছন্নতা আমাদের খাঁটি হৃদয় নিয়ে বেঁচে থাকতে শিখিয়েছে। এটি অনন্তকাল জীবনের ধারাবাহিকতার বার্তা বহন করে নিয়ে চলে।

শ্রী কোবিন্দ জানান, গঙ্গাকে ঠিক নদী হিসেবে বিবেচনা করা যথার্থ হবে না। এটি ভারতীয় সংস্কৃতির জীবনধারা এবং আধ্যাত্মিকতা ও বিশ্বাসের বাহক। আমাদের দেশে একটি বিশ্বাস রয়েছে যে ভারতের সমস্ত নদী গঙ্গায় গিয়ে মিশেছে। তাই অনেক ভক্তই ভারত থেকে গঙ্গা জল নিয়ে বিদেশের নদীতে মেশান। যার ফলে সেই নদীগুলি তাদের বিশ্বাসের সঙ্গে যুক্ত করেছে। তিনি বলেন, গঙ্গা বিশ্বের প্রতিটি কোনে ভারতীয়দের মাতৃভূমি এবং দেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সঙ্গে সংযুক্ত করেছে। তাই গঙ্গা ভারতীয়দের পরিচয়।

আরও পড়ুন -  T20 World Cup: টেবিলের শীর্ষে ভারত, নেদারল্যান্ডসকে ৫৬ রানে হারিয়ে

রাষ্ট্রপতি বলেন, আমাদের দেশের পরিবেশ ও সংস্কৃতির সুরক্ষা এবং সে বিষয়ে উৎসাহদান তখনই ঘটবে যখন গঙ্গাকে নিরবিচ্ছিন্নভাবে পরিচ্ছন্ন রাখা সম্ভবপর হবে। ১১টি রাজ্যের মধ্যে দিয়ে গঙ্গা এবং তার উপনদীগুলি প্রবাহিত হয়েছে। অনুমান করা যেতে পারে সেই সব অঞ্চলে দেশের মোট জনসংখ্যা ৪৩ শতাংশ মানুষ বসবাস করেন। সুতরাং, গঙ্গা নদীর অববাহিকায় জল সংরক্ষণ এবং ওই অঞ্চলে বন্যা ও ভূমিক্ষয় হ্রাস করা সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই উদ্দেশ্যগুলির সঙ্গে গঙ্গা পরিচ্ছন্নতার লক্ষ্য এবং পরিবেশ সুরক্ষাও জরিত।

আরও পড়ুন -  বাটানগরের কাছে গঙ্গা তে বড় জাহাজ দেখা যায় এখনও !

শ্রী কোবিন্দ আরও জানান, গঙ্গা ও পরিবেশ রক্ষার লক্ষ্যে ২০১৫ সালে ‘নমামি গঙ্গে’ নামে একটি সুসংহত ‘গঙ্গা সংরক্ষণ মিশন’ চালু করা হয়। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী গঙ্গার পরিচ্ছন্নতা রক্ষা এবং কাশীর উন্নতিসাধনে উদ্যোগ নিয়েছেন। তিনি উল্লেখ করেন যে, বেনারসের ঘাটগুলি এখন যথেষ্টই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। গঙ্গার ঘাট এবং বেনারস শহরকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে তোলার ওপর জোর দেওয়া কেবলমাত্র পরিবেশ সুরক্ষাকেই নয়, বরং বেনারস ভ্রমণকে পর্যটকদের কাছে আরও বেশি আকর্ষণীয় করে তুলেছে বলে রাষ্ট্রপতি জানান।

শ্রী কোবিন্দ বলেন, গঙ্গাকে পরিষ্কার রাখা, পরিবেশ রক্ষা করা এবং দেশের সংস্কৃতি ঐতিহ্যকে সমৃদ্ধ করা কেবল মাত্র সরকারের দায়িত্ব নয়, প্রত্যেক নাগরিকের সামাজিক কর্তব্য। এই চিন্তাভাবনাকে দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিতে হবে। বিগত কয়েক বছর ধরে এই বিষয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। বিভিন্ন সংগঠন এবং একাধিক ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত মানুষ, বিশেষত সংবাদ মাধ্যম ও গঙ্গা তীরবর্তী গ্রামবাসীরা গঙ্গার পরিচ্ছন্নতার জন্য প্রশংসনীয় আবদান রেখেছে।

আরও পড়ুন -  মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ায় শ্রীমতী মমতা ব্যানার্জিকে প্রধানমন্ত্রীর অভিনন্দন

রাষ্ট্রপতি বলেন, এই ফোরামের মাধ্যমে সামাজিক উদ্বেগের বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা এবং দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন করে তোলার জন্য দৈনিক জাগরণ গোষ্ঠীর প্রচেষ্টা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। তিনি দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, এই ফোরামের আলোচনার ফলে গঙ্গা, পরিবেশ ও সংস্কৃতির আন্তঃসম্পর্ক সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে। শ্রী কোবিন্দ জানান, ধারাবাহিক এই ধরণের আলোচনার ফলে গঙ্গা নদীকে আরও বেশি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে তোলা সম্ভবপর হবে এবং দেশের সংস্কৃতি আরও বেশি সমৃদ্ধ হবে। সূত্র – পিআইবি।