খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, নয়াদিল্লিঃ পাঞ্জাবে বিভিন্ন জায়গায় রেল লাইনের ওপর জোর করে অবরোধ করার ফলে রেল পণ্য পরিবহণ করতে পারছেনা। এর ফলে রেলের রাজস্বে ক্ষতি হচ্ছে। চৌঠা নভেম্বর পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পণ্য বহনকারী ২২২৫টি মালগাড়ি চলাচল করতে পারেনি। যারফলে ইতিমধ্যেই ১২০০ কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে।
আন্দোলনকারীরা প্ল্যাটফর্মে এবং রেললাইনের পাশে ধর্ণা চালিয়ে যাচ্ছে। যেহেতু তারা হঠাৎ হঠাৎ ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দিচ্ছে এবং জান্দিয়ালা, নাভা, তালওয়ান্দি সাবো এবং ভাতিন্ডা সহ বিভিন্ন জায়গায় রেল অবরোধ করছে, এর ফলে ট্রেন চলাচল আবারও বন্ধ করে দিতে হয়েছে। চৌঠা নভেম্বরের সকাল ৬টার হিসেব অনুসারে ৩২টি জায়গায় আন্দোলন চলছে।
রেল মন্ত্রক পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীকে ২৬শে অক্টোবর একটি চিঠিতে রেল লাইনের নিরাপত্তা ও রেল কর্মীদের সুরক্ষা চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে। এই অবরোধের ফলে পণ্য চলাচলের ক্ষেত্রে প্রতিকূল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। কৃষি, শিল্প ও পরিকাঠামো ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় উপাদানের ঘাটতি দেখা যাচ্ছে।
পাঞ্জাবের ওপর দিয়ে যেসব যাত্রীবাহি ট্রেন চলাচল করে সেই ট্রেনের যাওয়া-আসার ক্ষেত্রেও সমস্যা দেখা দিয়েছে। চৌঠা নভেম্বরের হিসেব অনুসারে ১৩৫০টি যাত্রীবাহি ট্রেন হয় বাতিল করা হয়েছে নতুবা যাত্রাপথ পরিবর্তন করা হয়েছে অথবা গন্তব্যের আগেই যাত্রা শেষ করা হয়েছে। কোভিডের সময় এর ফলে যাত্রীদের যথেষ্ট সমস্যায় পরতে হচ্ছে।
পাঞ্জাব, লাদাখ, হিমাচলপ্রদেশ ও জম্মু-কাশ্মীরে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য বহনকারী মালগাড়ি চলাচলে যথেষ্ট প্রতিকূল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ১৫-২০ দিন মালগাড়িগুলি মাল বোঝাই করে বিভিন্ন জায়গায় আটকে আছে। এর ফলে অনেকের ব্যবসা-বাণিজ্যে ক্ষতি হচ্ছে। তারা বাধ্য হয়ে অন্যান্য পরিবহণের মাধ্যমে তাদের পণ্য পরিবহণ করছেন। পাঞ্জাব থেকে খাদ্যশস্য, কন্টেনার, যানবাহন, সিমেন্ট, পেট কোক, সার ইত্যাদি যেতে পারছেনা। ফলে দৈনিক ৪০টি মালগাড়ি পাঞ্জাব থেকে রওনা হতে পারছেনা। এরফলে দৈনিক হিসেবে ৪০টি করে মালগাড়ি পাঞ্জাবে আটকে রয়েছে। কন্টেনার, সিমেন্ট, জিপসাম, সার, পিওএল ইত্যাদি পাঞ্জাবের বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছাতে পারছেনা। যে কারণে দৈনিক ৩০টির মতো মালগাড়ি ওই রাজ্যে ঢুকতে পারছেনা।
পাঞ্জাবে কৃষক আন্দোলন : প্রেক্ষাপট
২৪শে সেপ্টেম্বর পাঞ্জাবের কৃষকরা রেল লাইন ও রেল স্টেশন অবরোধ করা শুরু করেন। পয়লা অক্টোবর থেকে গোটা পাঞ্জাব জুড়ে এই আন্দোলন ছড়িয়ে পরায় সব ধরণের ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর জেরে ফিরোজপুর ডিভিশনে পুরো ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আম্বালা, দিল্লী এবং বিকানের ডিভিশনের ট্রেন চলাচল আংশিক ব্যাহত হয়। আন্দোলনকারীরা ২২শে অক্টোবর থেকে শর্ত সাপেক্ষে মালগাড়ি চলাচলের অনুমতি দিয়েছিল। কিন্তু অমৃতসর, নাভা, তালওয়ান্ডি সাবো, ফিরোজপুর, মোগা, জান্দিয়ালা এবং ভাতিন্ডায় হঠাৎ হঠাৎ অবরোধ সহ ট্রেন চলাচলের সুরক্ষার ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দেওয়ায় ২দিন পর তা বন্ধ করে দিতে হয়। আন্দোলনকারীরা যেহেতু নিয়ন্ত্রণে নেই তাই ট্রেন চালানো যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পরেছে। চৌঠা নভেম্বরের সকাল ৬টার হিসেব অনুসারে ৩২টি জায়গায় আন্দোলন চলছে। সূত্র – পিআইবি।