খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, কলকাতাঃ ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তরের ঘুর্ণিঝড় সতর্কতা কেন্দ্রের সর্বশেষ পর্যবেক্ষণ অনুসারে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে ওডিশা উপকূল সংলগ্ন অঞ্চলে সৃষ্ট নিম্নচাপটি উত্তর – উত্তর পূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে। আজ আরও পরের দিকে এটি পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ ভূখন্ডে প্রবেশ করবে। বিকেল ৫টা ৩০ মিনিট নাগাদ ২২.৩ ডিগ্রি অক্ষাংশ ও ৮৯.১ ডিগ্রি দ্রাঘিমাংশ রেখার সন্নিহিত অঞ্চল দিয়ে এই ঘূর্ণিঝড় প্রবাহিত হবে। পশ্চিমবঙ্গের সাগরদ্বীপ এবং বাংলাদেশের খেপুপাড়ার মধ্যবর্তী অঞ্চল দিয়ে এটি মূল ভূখন্ডে প্রবেশ করবে। সেই সময় এর গতিবেগ থাকবে প্রতি ঘন্টায় ৩৫-৫৫ কিলোমিটার। ২৪ তারিখ সকাল ৫টা ৩০ মিনিটে এই নিম্নচাপ ২৩.৫ ডিগ্রি অক্ষাংশ ও ৮৯.৮ ডিগ্রি দ্রাঘিমাংশে অবস্থান করবে। সেই সময় অবশ্য এর ক্ষমতা হ্রাস পাবে।
সতর্কতা :
বৃষ্টিপাত – ত্রিপুরার কোনও কোনও অংশে আজ হাল্কা থেকে মাঝারি (দিনে ১১৫.৬ থেকে ২০৪.৪ মিলিমিটার) বৃষ্টি হবে। কোনও কোনও অঞ্চলে প্রবল বৃষ্টিপাতের (দিনে ২০০ মিলিমিটারের বেশী) সম্ভাবনা রয়েছে। নাগাল্যান্ড, মণিপুর, মিজোরাম, দক্ষিণ আসাম ও মেঘালয়ের কোনও কোনও অঞ্চলে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হবে। আসামের বাকি জেলাগুলিতে ইতস্তত ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
২৪শে অক্টোবর আসাম, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড, মণিপুর, মিজোরাম ও ত্রিপুরায় হাল্কা থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। দু-একটি জায়গায় প্রবল বর্ষণ হতে পারে।
বায়ু প্রবাহে সতর্কতা – উত্তর বঙ্গোপসাগর, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ উপকূলে ঘন্টায় ৪৫-৬৫ কিলোমিটার বেগে আগামী ২৪ ঘন্টা বায়ু প্রবাহের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। উত্তর ওডিশা উপকূলে ঘন্টায় ৪০-৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাবে।
সমুদ্রের অবস্থা – আগামী ২৪ ঘন্টা উত্তর ও মধ্য বঙ্গোপসাগর, উত্তর ওডিশা, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ উপকূলে সমুদ্র উত্তাল থাকবে।
মৎস্যজীবীদের প্রতি সতর্কবার্তা – উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং পশ্চিমবঙ্গ – বাংলাদেশ উপকূলে আগামী ২৪ ঘন্টায় মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হচ্ছে। ওডিশা উপকূলে আগামী ১২ ঘন্টা মৎস্যজীবীদের মাছ ধরতে যেতে নিষেধ করা হচ্ছে।
২৩শে অক্টোবর দক্ষিণ আসাম, পূর্ব মেঘালয়, নাগাল্যান্ড, মণিপুর, মিজোরাম ও ত্রিপুরায় প্রভাব – নীচু এলাকাগুলিতে জল জমে বন্যার সম্ভাবনা আছে। শহরাঞ্চলে আন্ডারপাসগুলি বন্ধ হয়ে যাবে। পার্বত্য অঞ্চলে ভূমিধ্বসের সম্ভাবনা রয়েছে। প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে দৃশ্যমান্যতা হ্রাস পাবে। শহরাঞ্চলে যানচলাচল ব্যহত হবে। কাঁচা রাস্তা ও ঝুঁকিপূর্ণ কাঠামোর ক্ষতি হতে পারে। ঝড়ো হাওয়ার ফলে ফলের বাগিচা ও চাষের জমিতে ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। বিভিন্ন নদী অববাহিকায় বন্যার সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা : সুন্দরবনের বন্যপ্রাণী, জীব বৈচিত্র্য রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। বাড়ি থেকে বেরোনোর আগে যান চলাচল সম্পর্কিত সতর্কতা মেনে চলুন। যেসব এলাকায় জল জমে যায় সেই সব জায়গা এবং ঝুঁকিপূর্ণ কাঠামোতে যাঁরা বসবাস করেন, বিশেষ করে তাঁদেরকে সতর্ক করা হচ্ছে।
মৌসম অ্যাপের মাধ্যমে নির্দিষ্ট এলাকার আবহাওয়ার পূর্বাভাস ও সতর্কতা সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যাবে। মেঘদূত অ্যাপের মাধ্যমে কৃষি কাজ সম্পর্কিত জল-হাওয়ার খবর এবং দামিনী অ্যাপের সাহায্যে বজ্রপাত সম্পর্কিত সতর্কতা জানা যাবে। সূত্র – পিআইবি।