সুমিত ঘোষ, খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, মালদাঃ পুজোর মরসুমে বাজারে উপচে পড়া ভিড় ঠেকাতে ক্রেতাদের ধরে ধরে করোনা পরীক্ষা করতে হবে। মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে দ্রুত এই ব্যবস্থা চালু করার নির্দেশ দিলেন কোভিড-১৯ নর্থ বেঙ্গলের অফিসার অফ স্পেশাল বিউটি (ওএইচডি) ডা: সুশান্ত কুমার রায় । মঙ্গলবার বিকালে মালদা শহরের সানাউল্লাহ মঞ্চে বিভিন্ন পুজো কমিটির কর্তাদের নিয়ে একটি প্রশাসনিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে কিভাবে সামাজিক দূরত্ব মেনে এবং করোণা সংক্রমণ ঠেকাতে পুজো করতে হবে, সেই সব বিষয় নিয়ে বিভিন্ন পুজো কমিটিকে পরামর্শ দেন স্বাস্থ্য দপ্তর এবং প্রশাসনের কর্তারা। পাশাপাশি উপস্থিত পুজো কমিটির কর্তাদের কাছেও নানান সমস্যার কথা শোনেন তাঁরা।
এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র, পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া, মালদা মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল ডা: পার্থপ্রতিম মুখার্জি , ভাইস প্রিন্সিপাল ডা: অমিত দাঁ , অতিরিক্ত জেলা শাসক পালদেন শেরপা, সদর মহকুমা শাসক সুরেশচন্দ্র রানো প্রমূখ।
মিটিং-এর মধ্যেই পূজা কমিটির কর্তাদের উদ্দেশ্যে প্রশাসনের তরফ থেকে পরিষ্কার করে জানিয়ে দেওয়া হয়, অঞ্জলি দেওয়ার ক্ষেত্রে বাড়ি বাড়ি কুপন বিলি করতে হবে । কুড়ি জনের বেশি অঞ্জলি দেওয়ার সময় ভিড় করা যাবে না। পাশাপাশি ভোগ বিলির ক্ষেত্রেও সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষের বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে আসতে হবে। পুজো মণ্ডপে ভিড় করা যাবে না। প্রতিটি পূজা মণ্ডপের তিনদিনের মুখ খোলা রাখতে হবে। মাক্স ছাড়া পুজো মণ্ডপে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হয় যাবে না। স্যানিটাইজার ব্যবস্থা রাখতে হবে। এইসব নির্দেশিকা না মানলে পুলিশ ও প্রশাসনের তরফ থেকে সেইসব পুজো কমিটির বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিন বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সামনে কোভিড-১৯ নর্থ বেঙ্গলের অফিসার অফ স্পেশাল বিউটি (ওএইচডি) সুশান্ত রায় বলেন , পুজোর মুখে যেভাবে বিভিন্ন বাজার, শপিংমল গুলিতে মানুষের ভীড় উপচে পড়ছে, তা উদ্বেগজনক। করোনার ওষুধ কবে আসবে কোন কিছুই বলা সম্ভব নয়। কাজেই এই মুহূর্তে বাজারে ভিড় ঠেকাতে স্বাস্থ্যকর্মী, প্রশাসনের কর্তারা পিপিই কিট পড়ে বিভিন্ন শপিংমল, বাজারগুলিতে নজরদারি চালাবে। প্রয়োজন বুঝে ক্রেতাদের ধরে ধরে করোনা টেস্ট করবে। এছাড়া ভিড় কমানোর আর কোনো বিকল্প পথ নেই। আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যেই এই নির্দেশিকা কার্যকরী করার জন্য প্রশাসনের কর্তাদের বলা হয়েছে।
এদিন মালদা শহরের ১০০টি’রও বেশি পুজো কমিটির কর্তারা উপস্থিত হয়েছিলেন। তাদের কাছ থেকে নানান সমস্যার কথা শোনেন স্বাস্থ্য দপ্তর পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তারা। প্রতিটি পূজা মণ্ডপে প্রবেশ গেটের সামনেই বড় মাপের স্যানিটাইজার স্প্রে রাখতে হবে । মাক্স ছাড়া কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া যাবে না একথাও মূল গেটের সামনে বড় করে পোস্টার ব্যানার টাঙ্গিয়ে দিয়ে প্রচার করতে হবে।
কোভিড-১৯ নর্থবেঙ্গল অফিসার অফ স্পেশাল ডিউটি ডা: সুশান্ত কুমার রায় বলেন, মানুষকে সতর্ক এবং সচেতন হতে হবে। তা না হলে এই সংক্রমণ থেকে রেহাই পাওয়া মুশকিল। পুলিশ, প্রশাসন স্বাস্থ্য দপ্তরের অফিসার, কর্মীরা রাতদিন এক করে করোণা মোকাবিলায় কাজ করে চলেছেন । কাজেই এক্ষেত্রেও মানুষকে আরো সতর্ক হতে হবে।