34 C
Kolkata
Sunday, May 19, 2024

কৃষকদের উন্নয়নে জারি করা অধ্যাদেশ তাদের আয় বৃদ্ধির হাতিয়ার হয়ে উঠবে

Must Read

খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, নয়াদিল্লিঃ ২০২০ সালের ৫ ই জুন ভারতের কৃষি বিপণনের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন, কারণ ঐ দিনেই ঘোষণা করা হয়েছিল কৃষি উৎপাদন ব্যবসা ও বাণিজ্য (উন্নয়ন ও সুবিধা) অধ্যাদেশ, ২০২০ (The Farming Produce Trade and Commerce (Promotion and Facilitation) Ordinance)। এই অধ্যাদেশ জারী হওয়ার ফলে কৃষকেরা অনেক স্বাধীন ভাবে তাদের উৎপাদিত পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করতে পারবে এবং সঠিক বাজারদর পাবে। দেখা গেছে যে, ভারতের কৃষকেরা, যাদের বেশির ভাগই ক্ষুদ্র ও প্রান্তিককৃষক, বিভিন্ন কারণে তাদের পণ্য বিপণনে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন। যেমন সঠিক দাম পাওয়া, ধার-বাকিতে পণ্য দেওয়া ইত্যাদি। এর সমাধানের লক্ষ্যে সরকার ২০১৬ সালের এপ্রিলে ই-জাতীয় কৃষিবাজার (ই-এনএএম) চালু করেছিল। তবে এ পি এম সি গুলি আগে অভ্যন্তরীণ সীমাবদ্ধতার কারণে সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি ধীরে ধীরে গ্রহণ করলেও, এখন এই অধ্যাদেশের মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং সম্পূর্ণ রূপে বাস্তবায়নের কাজটি ত্বরান্বিত হয়েছে ফলে বাণিজ্য লেনদেনের এই অন-লাইন মোড গতিশীল হয়েছে।

২০২০ তে জারি করা এই অধ্যাদেশ কৃষি বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ডিজিটালাইজেশন এবং কৃষি উৎপাদন বাণিজ্যক্ষেত্রে ই-ট্রেডিং প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে প্রতিযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি মাইলফলক। এই ভার্চুয়াল ট্রেডিং প্ল্যাটফর্মগুলি এপিএমসি বা অন্যান্য বিধির থেকে মুক্ত থাকবে এবং বানিজ্য ও অর্থ প্রদানের নিজস্ব প্রোটোকল তৈরি করবে। এগুলি প্রতিযোগিতামূলক হবে এবং বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এপিএমসি আইনের অধীনে কোনও প্রকারের ফি, সেস বা শুল্ক আরোপ করা হবেনা, এর ফলে কৃষকদের বিপণন ব্যয় হ্রাস পাবে। এই পদ্ধতিতে কৃষকরা গোটা দেশে ডিজিটাল পদ্ধতিতে পৌঁছতে সক্ষম হবে এবং যে সমস্ত ক্রেতা ভালো দাম দেবে তাদের কাছে বিক্রি করবে। বাণিজ্যক্ষেত্রে একাধিক ই-প্ল্যাটফর্মের বিকাশ হওয়ায় কৃষকেরা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলির মধ্যে থেকে পছন্দের প্ল্যাটফর্ম বেছে নিতে পারবে। যে প্ল্যাটফর্ম দক্ষ হবে, ভাল মূল্য নির্ধারণ করবে এবং স্বচ্ছতার সাথে অর্থপ্রদানের বিষয়টি নিশ্চিত করবে সেই প্ল্যাটফর্মগুলিই কৃষকরা পছন্দ করবে, যা তাদের আয় বৃদ্ধি করতে সহায়তা করবে।

আরও পড়ুন -  Pele: কিংবদন্তি ফুটবলার পেলের নাম ডিকশনারিতে যুক্ত হলো

অধ্যাদেশ, ২০২০ থেকে কৃষকদের প্রাপ্ত সুবিধাসমূহ:-

খাদ্য প্রক্রিয়াকারক, রফতানি কারক, এমন ক্রেতা যারা প্রচুর পরিমাণে পণ্য কেনে, সংগঠিত খুচরা বিক্রেতা প্রমুখেরা সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে কিনবে। এর ফলে কৃষকদের আয় বৃদ্ধি পাবে।
কৃষকদের এখন তাদের উৎপাদিত পণ্যগুলিকে খুব দূরের মান্ডিতে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন হবে না, তারা খামারের গেট থেকে কিংবা নিজের বাড়ি থেকেই বিক্রি করতে পারবেন এমনকি নিকটস্থ প্রক্রিয়াকরণ বা রফতানি ইউনিটগুলিতেও বিক্রি করতে পারবেন। এর ফলে কৃষকদের পরিবহণ এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ব্যয় হ্রাস পাবে, যার ফলে তাদের আয়ের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে।
অধ্যাদেশে বাজার ফি বা কমিশন চার্জের কোনও সুযোগ না থাকায়, এই প্রক্রিয়াবাণিজ্য কৃষকদের আয়কে যথেষ্ট পরিমাণে বাড়িয়ে তুলবে। এছাড়াও, কৃষকরা অন্যান্য বিপণনের খরচ ও বাঁচাতে সক্ষম হবেন।
বর্তমানে, একবার পণ্যটি বাজারে আনা হলে, দাম তলানিতে গিয়ে ঠেকলেও তিনি বিক্রয় করতে বাধ্য হন। এখন উৎপাদনকারী দামে না পোষালে পচনশীল এবং অ-পচনশীল উভয় ধরণের পণ্যের বিক্রি বন্ধ করে আরও ভাল দামের জন্য অপেক্ষা করতে পারবেন।
এই অধ্যাদেশের বিধানগুলি ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক এবং বিশেষ করে কৃষি উৎপাদক গোষ্ঠীর (এফপি ও) জন্য বিশেষভাবে উপকারী, যাদের স্বতন্ত্রভাবে আলাপ আলোচনা চালিয়ে ন্যায্য দাম আদায় করার শক্তি নেই এবং পরিবহণের খরচা দিয়ে দূরবর্তী মান্ডিতে ও অর্থনৈতিক কারণেই পণ্য নিয়ে যাওয়া সম্ভবও হয় না তারা এর ফলে উপকৃত হবেন। এফপিওরা মূল্য সংযোজন, ব্র্যান্ডিং, রফতানি এবং কৃষক সদস্যদের আরও ভাল দাম দিয়ে উৎসাহিত করতে পারে এবং এফপিওরা ই-ট্রেডিং এবং লেনদেন প্ল্যাটফর্ম প্রতিষ্ঠা, ও পরিচালনা করতে পারে।
অনলাইন বাণিজ্য পণ্যের তাৎক্ষণিক মূল্য জানতে সহায়তা করবে। তথ্যগুলি সহজেই কৃষকদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া যেতে পারে। গ্রামাঞ্চলে মোবাইল ফোনের বাড়বাড়ন্ত ঘটালে কৃষকদের কাছে তথ্যসরবরাহ করাও আরও সহজ হবে। লেনদেনের বিশদ তথ্য পাওয়ার বিষয়টি বৈদ্যুতিন বাণিজ্য পোর্টালগুলি ব্যবহারের একটি বড় সুবিধা। অধ্যাদেশে এই সুবিধার কথাও বলা হয়েছে।
জমির উপর কৃষকদের অধিকার সম্পূর্ণরূপে সুরক্ষিত এবং এটি শুধুমাত্র কৃষিকাজ চুক্তি, ইজারা কিংবা বন্ধক বা লিজের মতো অন্যকোনও চুক্তি সম্পাদিত হতে পারবে না। জমিতে বা প্রাঙ্গণে কোনও স্থায়ী কাঠামো তৈরি করা যাবে না। চাষের প্রয়োজনে কৃষকের সম্মতিতে যদি এ জাতীয় কাঠামো তৈরি করাও হয় তাহলে চুক্তি শেষ হলে যিনি কাঠামো নির্মাণ করেছিলেন তাকেই নিজের খরচে তা সরিয়ে নিতে হবে। এর অন্যথা হলে কাঠামো জমির মালিকের হবে।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, চুক্তি চাষের ঝুঁকি হ্রাস করতে এবং চুক্তিতে আবদ্ধ ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের সুবিধার্থে কেন্দ্রীয় বা রাজ্যসরকারের যেকোনও কৃষিবীমা প্রকল্পের আওতায় এই চাষ বীমা করানো যাবে। চুক্তিতে আবদ্ধ পক্ষগুলি যেকোনও সময় পারস্পরিক সম্মতিতে চুক্তি পরিবর্তন করতে এবং রদ বা সংশোধন করতে পারবেন।
এই কৃষি চুক্তির অধীন সময়ে কোন অপ্রত্যাশিত প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘটলে এবং তার জন্য ফসল নষ্ট হলে, তার দায় কৃষকদের উপর বর্তাবে না।

আরও পড়ুন -  Bhojpuri: বাথরুমের ভিতরে আম্রপালির সঙ্গে রোমান্টিক হলেন নিরহুয়া, এই সব ভিডিও বাচ্চাদের সামনে দেখা যাবে না

কৃষি সংক্রান্ত চুক্তির উদ্দেশ্য হলো কৃষকরা যাতে সঠিক দাম এবং বাজার পায় সেটা দেখা এবং এই দুটি ক্ষেত্রের সাথে জড়িত ঝুঁকি যথা সম্ভব প্রশমিত করা। কৃষকদের সাপ্লাই চেইন এর সাথে যুক্ত হওয়া এবং খাদ্য সংস্থাগুলির সাথে বিশ্বাসযোগ্য সম্পর্ক গড়ে তোলা এবং তার সাথে সহায়ক আইনি ব্যবস্থার প্রয়োজন রয়েছে। “কৃষকদের (ক্ষমতায়ন ও সুরক্ষা) মূল্য আশ্বাস এবং খামার পরিষেবা অধ্যাদেশ, ২০২০ সম্পর্কিত চুক্তি” উপরুক্ত উদ্দেশে আনা হয়েছে। অধ্যাদেশটি চুক্তি প্রস্তুত করার জন্য প্রয়োজনীয় আইনী কাঠামো প্রস্তুত করে। সুষ্ঠু ও সুবিধাজনক বিধি সমূহ সব পক্ষের কাছেই চুক্তি করার জন্য না হার না জিত পরিবেশ তৈরির মূল উপাদান এবং কৃষকদের জন্য তা আরও ব্যাপক ভাবে প্রযোজ্য। এটি কেবল কৃষকদের স্বার্থ রক্ষা করে না তার পাশাপাশি চুক্তি অনুসারে কৃষি কেন্দ্রিক ব্যবসা, প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং রফতানির উন্নয়নে ও সহায়তা করে। বাণিজ্য ক্ষেত্রে সুষ্ঠু ব্যবসা নিশ্চিত করতে অধ্যাদেশটি যথেষ্ট সুসংহত এবং বিস্তৃত। এতে থাকা বিষয় গুলি পরিকাঠামো (কোল্ড স্টোরেজ, গুদাম, ইত্যাদি) এবং সহায়ক নানা ক্ষেত্রের জন্য বিনিয়োগে উৎসাহিত করবে। কৃষক এবং কৃষি সংস্থাগুলির (স্পনসর) মধ্যে চুক্তি কৃষিজমির জন্য লিখিত আকারে থাকতে হবে এবং তা দ্বিপাক্ষিক, ত্রিপাক্ষিক বা বহু-পাক্ষিক হতে পারে। নির্দিষ্ট পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলি যেমন কোন তথ্য যোগানকারি বা প্রযুক্তি সরবরাহকারি বা অন্য কোন প্রয়োজনীয় পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থা চুক্তিতে সামিল হতে পারে। চুক্তিটি একটি ফসল চক্র বা উৎপাদন চক্রের জন্য হবে তবে পাঁচ বছরের বেশি নয়। যে কোনও উৎপাদন চক্র সম্পন্ন করতে যদি ৫ বছরের বেশি সময় প্রয়োজন হয় তবে চুক্তির মেয়াদ পাঁচ বছরেরও বেশি হতে পারে, যা চুক্তিতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকবে।

আরও পড়ুন -  Swastika Mukherjee: স্বস্তিকার ‘শ্রীমতি’ হল পেলেন না কেন ?

কৃষিকাজ চুক্তি যথাযথ দাম এবং বাজারে পণ্য বিক্রয় করার হাতিয়ার তো বটেই, তাছাড়াও বাজারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নানান ঝুঁকি ও দাম সংক্রান্ত ঝুঁকি উভয়কেই প্রশমিত করে। কৃষকদের সরবরাহ শৃঙ্খল এবং খাদ্য সংস্থাগুলির সাথে বিশ্বাসযোগ্য সম্পর্ক গড়ে তোলা এবং সহায়ক আইনি কাঠামো সহ সংশ্লিষ্ট ব্যবস্থার সাথে জড়িত হওয়া দরকার। “কৃষকদের (ক্ষমতায়ন ও সুরক্ষা) মূল্য আশ্বাস এবং খামার পরিষেবা অধ্যাদেশ, ২০২০ সম্পর্কিত চুক্তি” সেই উদ্দেশ্যেই আনা হয়েছে। অমিত চট্টোপাধ্যায়, কৃষিবিজ্ঞানী। সূত্র – পিআইবি।

Latest News

পর পুরুষের সাথে সম্পর্ক রং দেওয়ার নাম করে, নির্জনে দেখুন এই শর্ট ফিল্মটি

পর পুরুষের সাথে সম্পর্ক রং দেওয়ার নাম করে, নির্জনে দেখুন এই শর্ট ফিল্মটি।  Short Film টি ১৮+উদ্ধের জন্য। শর্ট ফিল্ম,...
- Advertisement -spot_img

More Articles Like This

- Advertisement -spot_img