খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, নয়াদিল্লিঃ কোভিড – ১৯ মহামারীর প্রেক্ষিতে সুইডেনের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয় নিয়ে আলোচনার সময় ড. হর্ষ বর্ধনের মন্তব্য
সুইডেনের স্বাস্থ্য ও সামাজিক বিষয়ক মন্ত্রী, শ্রীমতী লেনা হালেনগ্রেন আজ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ড. হর্ষ বর্ধনের সঙ্গে ডিজিটাল মাধ্যমে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে স্বাস্থ্য পরিষেবা ও ওষুধের বিষয়ে সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
কোভিড – ১৯ মহামারীকে মোকাবিলা করার জন্য দুই স্বাস্থ্যমন্ত্রী, তাঁদের নিজ নিজ দেশে বিভিন্ন উদ্যোগের বিষয়ে আলোচনা করেন এবং ভবিষ্যতে পরিস্থিতির মোকাবিলা নিয়ে কি কি পরিকল্পনা তাঁরা নিয়েছেন, সেবিষয়ে মতবিনিময় করেছেন। হু-র এক্সিকিউটিভ বোর্ডের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় শ্রীমতী হালেনগ্রেন, ড. হর্ষ বর্ধনকে অভিনন্দন জানান এবং ভারত, যেভাবে লালারসের নমুনা পরীক্ষার ক্ষমতা বৃদ্ধি করছে, সেবিষয়ে প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেন, এর ফলে আরো বেশি সংখ্যক লোকের সংক্রমণ পরীক্ষা করে দ্রুত চিকিৎসা করা সম্ভব হবে।
ড. হর্ষবর্ধন, ভারত ও সুইডেনের মধ্যে গত এক দশক ধরে নিবিড় অংশীদারিত্বের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন এবং যৌথ কর্মী গোষ্ঠীর ১০টি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হওয়ার বিষয়টিও জানিয়েছেন। সম্প্রতি কেন্দ্রের বিভিন্ন যুগান্তকারী সাফল্যের কথা তিনি উল্লেখ করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে, ৫৫কোটি নাগরিককে আয়ুষ্মান ভারত যোজনায় অন্তর্ভুক্ত করা, প্রসবকালীন এবং সদ্যজাত শিশু মৃত্যুর হার কমানো ও স্বাস্থ্য পরিষেবা ক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তিকে অন্তর্ভুক্ত করে ভারতের ডিজিটাল স্বাস্থ্য পরিষেবা চালু করা। ২০২৫ সালের মধ্যে দেশ থেকে যক্ষ্মারোগকে নির্মূল করা হবে বলেও ড. হর্ষ বর্ধন জানিয়েছেন। দেশে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী সমস্যার মোকাবিলা করার জন্য বিভিন্ন গবেষণার কথাও তিনি জানান।
কোভিড – ১৯ মহামারীর মোকাবিলা করার সময় ভারতের নানা অভিজ্ঞতার কথাও ড. হর্ষ বর্ধন শ্রীমতী হালেনগ্রেনের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছেন। তিনি বলেন, ভারতের সুস্থ হয়ে ওঠার হার ৬১ শতাংশের বেশি। ১৩৫ কোটি জনসংখ্যার এই দেশে কোভিড – ১৯ সংক্রমণের ফলে মৃত্যুর হার ২.৭৮ শতাংশ। প্রতিদিন আড়াই লক্ষ মানুষের লালারসের নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে বলেও তিনি জানান। ৪ মাস আগে দেশে যেখানে মাত্র একটি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা করা যেত, বর্তমানে সেই সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ১১০০।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জানান, নোভেল করোনা ভাইরাসের সংক্রমণকে ভারত, একটি সুযোগ হিসেবে দেখছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সক্রিয় এবং দূরদর্শী মানসিকতার জন্য বিভিন্ন স্তরে নানা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ৮ই জানুয়ারী চীন যখন সারা পৃথিবীকে নোভেল প্যাথোজেনের বিষয়ে সতর্ক করেছিল, কেন্দ্র, তার পরের দিন থেকে দেশের প্রতিটি প্রবেশ পথে নজরদারির ব্যবস্থা করে। সমুদ্র, স্থল ও বিমান বন্দরে যাত্রীদের প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে নজরদারী চালানোর পাশাপাশি এলাকা ভিত্তিক নজরদারী ব্যবস্থাকে মজবুত করা হয়। স্বাস্থ্য এবং সফর সংক্রান্ত বিষয়ে বিস্তারিত নির্দেশিকা প্রকাশ করা হয়েছিল। এছাড়াও হাজার হাজার নাগরিক এবং বিদেশীদের বিভিন্ন জায়গা থেকে সরিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। দেশে বর্তমানে ১০০টি ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী নির্মাণ সংস্থা থেকে দৈনিক ৫ লক্ষ পিপিই তৈরি করা হচ্ছে। একই সঙ্গে এন৯৫ মাস্ক এবং ভেন্টিলেটরের উৎপাদনও বাড়ানো হয়েছে। এছাড়াও ১০০টির বেশী দেশে হাইড্রোক্লোরোক্সিকুইন সরবরাহ করা হয়েছে।
উভয়মন্ত্রী হেমন্তকালে যৌথ কর্মীগোষ্ঠীর পরবর্তী বৈঠক করার বিষয়ে একমত হন। এই সঙ্কট না মেটা পর্যন্ত তারা ডিজিটাল পদ্ধতিতে পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং তাঁদের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের পদস্থ আধিকারিকদের, নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন।
ড. বর্ধন, বৈঠকের শেষে শ্রীমতি হালেনগ্রেন এবং সুইডেনের নাগরিকদের সুস্বাস্থ্য কামনা করেছেন। সূত্র – পিআইবি।