খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, নয়াদিল্লিঃ আন্তর্জাতিক স্তরে স্বীকৃত জার্নাল নেচার অ্যাস্ট্রোনমিতে (৬ই জুলাই, ২০২০) প্রকাশিত এক সমীক্ষায় ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অফ অ্যাস্ট্রোফিজিকস্ – এর বিজ্ঞানীরা আন্তর্জাতিক আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সহযোগিতায় এই প্রথমবার প্রত্যক্ষ করেছেন যে, সূর্যের মতো কম ভর-বিশিষ্ট নক্ষত্রগুলিতে মেটাল লিথিয়ামের উৎপাদন এক স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। এ ধরনের মেটাল লিথিয়াম সেই সময় বৃদ্ধি পায়, যখন নক্ষত্রগুলির জীবন চক্র শেষের পর্যায়ে পৌঁছয়। উল্লেখ করা যেতে পারে, ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অফ অ্যাস্টো ফিজিক্স কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দপ্তরের একটি স্বশাসিত প্রতিষ্ঠান।
কম দাহ্য মেটাল লিথিয়াম আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থার উপকরণ ও পরিবহণের ক্ষেত্রে বড় পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। বর্তমান সময়ের প্রযুক্তি লিথিয়াম উপাদানের ওপর ভিত্তি করে অনেক বেশি পরিচালিত হচ্ছে। কিন্তু প্রশ্ন হ’ল – আমাদের কাছে এই উপাদান এলো কিভাবে? এর উত্তরে বলা যায়, এখন থেকে প্রায় ১৩.৭ বিলিয়ন বছর আগে বিগ-ব্যাঙের ঘটনা থেকে মেটাল লিথিয়ামের উৎসের হদিশ মেলে। বিগ ব্যাঙের ঘটনার ফলে বর্তমান মহাবিশ্বের সূচনা হয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মেটাল লিথিয়াম উপাদানটি মহাবিশ্বে বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই সঙ্গে, সূর্যের মতো নক্ষত্রগুলি এই লিথিয়ামের অন্যতম উৎস হয়ে উঠেছে। বর্তমান সময়ের সেরা পন্থা-পদ্ধতিগুলির ওপর ভিত্তি করে জানা গেছে, সূর্যের মতো নক্ষত্রে লিথিয়াম কখনই নিঃশেষ হয় না। নক্ষত্রগুলির জীবন চক্র যতদিন থাকে, এই উপাদানও ততদিনই অক্ষুণ্ন থাকে। আন্তর্জাতিক স্তরে ঐ জার্নালে প্রকাশিত সমীক্ষায় অধ্যাপক ঈশ্বর রেড্ডি জানিয়েছেন, এই আবিষ্কার সেই সমস্ত পুরনো ধারণাগুলিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে, নক্ষত্রগুলির জীবন চক্রের অবসানের সঙ্গে সঙ্গে লিথিয়ামও শেষ হয়ে যায়। কিন্তু, প্রকৃত অর্থ হ’ল – নক্ষত্রগুলির জীবনের শেষ পর্যায়েই লিথিয়ামের পরিমাণ বাড়ে। তাই, নক্ষত্রগুলি লিথিয়ামের বড় উৎস বলে বিবেচনা করা যেতে পারে। প্রকাশিত সমীক্ষায় অধ্যাপক রেড্ডি বাদে অন্যান্য বিজ্ঞানীরা সকলেই একথা স্বীকার করেছেন যে, নক্ষত্রের হাইড্রোজেন জ্বালানি প্রক্রিয়ার শেষের দিকে লিথিয়াম মেটালের উৎপাদনের সূচনা হয়। পৃথিবীতে প্রাণীকূলের অন্যতম শক্তির উৎস সূর্য তার জীবন চক্রের শেষ পর্যায়ে পৌঁছতে এখনও প্রায় ৬-৭ বিলিয়ন বর্ষ সময় নেবে।
অধ্যাপক রেড্ডি ও তাঁর দলের সদস্যদের এই সমীক্ষাগত তথ্য বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে আবিষ্কারের কর্মসূচিগুলিতে নতুন উৎসাহ যোগাবে। সেই সঙ্গে, মহাজাগতিক বিশ্বের বিভিন্ন বিষয় সম্বন্ধে আরও তথ্য সংগ্রহে তরুণ বিজ্ঞানীদের উৎসাহিত করবে বলে কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দপ্তরের সচিব অধ্যাপক আশুতোষ শর্ম অভিমত প্রকাশ করেছেন। সূত্র – পিআইবি।