খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, নয়াদিল্লিঃ দেশে আজ কোভিড টিকাকরণ ৮ কোটি ৭০ লক্ষ ছাড়িয়েছে। আজ সকাল ৭টা পর্যন্ত প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী ৮ কোটি ৭০ লক্ষ ৭৭ হাজার ৪৭৪টি টিকার ডোজ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৮৯ লক্ষ ৬৩ হাজার ৭২৪ জন স্বাস্থ্য কর্মী প্রথম ডোজ, ৫৩ লক্ষ ৯৪ হাজার ৯১৩ জন স্বাস্থ্য কর্মী দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন। অন্যদিকে, করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অগ্রভাগে থাকা ৯৭ লক্ষ ৩৬ হাজার ৬২৯ জন কর্মী প্রথম ডোজ এবং ৪৩ লক্ষ ১২ হাজার ৮২৬ জন কর্মী দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন। টিকাকরণ অভিযানে সারা দেশে ৬০ বছরের বেশি বয়সী ৩ কোটি ৫৩ লক্ষ ৭৫ হাজার ৯৫৩ জন সুফলভোগীকে প্রথম ডোজ এবং ১০ লক্ষ ৭৮৭ জন সুফলভোগীকে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও, ৪৫ – ৬০ বছর বয়সী ২ কোটি ১৮ লক্ষ ৬০ হাজার ৭০৯ জন সুফলভোগী প্রথম ডোজ এবং ৪ লক্ষ ৩১ হাজার ৯৩৩ জন সুফলভোগী দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৩ লক্ষেরও বেশি টিকার ডোজ দেওয়া হয়েছে।
টিকাকরণ অভিযানের ৮১তম দিনে (৬ এপ্রিল) ৩৩ লক্ষ ৩৭ হাজার ৬০১টি টিকার ডোজ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৩০ লক্ষ ৮ হাজার ৮৭ জন সুফলভোগী প্রথম ডোজ এবং ৩ লক্ষ ২৯ হাজার ৫১৪ জন সুফলভোগী দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন। টিকাকরণ অভিযানে এক তাৎপর্যপূর্ণ সাফল্য হিসাবে ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ছাপিয়ে গিয়ে দ্রুততার সঙ্গে টিকাকরণের দিক থেকে প্রথম দেশ হয়ে উঠেছে। ভারতে দৈনিক টিকাকরণের হার ৩০ লক্ষ ৯৩ হাজার ৮৬১।
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ১ লক্ষ ১৫ হাজার ৭৩৬ জন নতুন করে আক্রান্ত হওয়ায় সংক্রমিতের সংখ্যা লাগাতার বাড়ছে। ৮টি রাজ্যে – মহারাষ্ট্র, ছত্তিশগড়, কর্ণাটক, উত্তর প্রদেশ, দিল্লি, মধ্যপ্রদেশ, তামিলনাডু এবং কেরলে সম্মিলিতভাবে আক্রান্তের হার ৮০.৭০ শতাংশ। মহারাষ্ট্রে একদিনেই আক্রান্তের সংখ্যা ৫৫ হাজার ৪৬৯। ছত্তিশগড়ে আক্রান্ত হয়েছেন ৯ হাজার ৯২১ জন। অন্যদিকে, কর্ণাটকে আক্রান্তের সংখ্যা ৬ হাজার ১৫০। উপরোক্ত ৮টি রাজ্য বাদে হরিয়ানা, রাজস্থান, গুজরাট এবং পাঞ্জাবেও দৈনিক আক্রান্তের হার ঊর্ধ্বমুখী।
দেশে সুস্পষ্টভাবে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৮ লক্ষ ৪৩ হাজার ৪৭৩, যা মোট আক্রান্তের ৬.৫৯ শতাংশ। অবশ্য, গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্পষ্টভাবে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৫৫ হাজার ২৫০টি কমেছে। মহারাষ্ট্র, ছত্তিশগড়, কর্ণাটক, কেরল এবং উত্তর প্রদেশে সম্মিলিতভাবে আক্রান্তের হার ৭৪.৫ শতাংশ। এর মধ্যে কেবল মহারাষ্ট্রেই আক্রান্তের হার ৫৬.১৭ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় সরকার যে রাজ্য/কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা লাগাতার বাড়ছে, সেগুলির ওপর তীক্ষ্ণ নজর রাখছে। প্রধানমন্ত্রীর পৌরহিত্যে গত ৪ঠা এপ্রিল দেশে কোভিড-১৯ মহামারী ও টিকাকরণ সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠকও হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডঃ হর্ষবর্ধন যে ১১টি রাজ্যে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ও মৃত্যু হার বেশি, তাঁদের সঙ্গে গতকাল ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে মিলিত হন। এই বৈঠকে টিকাকরণ অভিযানে অগ্রগতি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। ক্যাবিনেট সচিব গত শুক্রবার ১১টি রাজ্যের মুখ্যসচিব, রাজ্য পুলিশ প্রধান ও স্বাস্থ্য সচিবদের সঙ্গে পর্যালোচনা বৈঠক করেন। এছাড়াও, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব নিয়মিতভাবে সমস্ত রাজ্য/কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের স্বাস্থ্য সচিবদের সঙ্গে কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠক করছে। কোভিড সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণের জন্য ইতিমধ্যেই মহারাষ্ট্র, পাঞ্জাব ও ছত্তিশগড়ে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে ৫০ সদস্যের দল পাঠানো হয়েছে। কেন্দ্রীয় এই বিশেষজ্ঞ দলগুলি ঐ ৩টি রাজ্যে ৩-৫ দিন থেকে সেখানকার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করবেন।
ভারতে আজ কোভিডে সুস্থতার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ১৭ লক্ষ ৯২ হাজার ১৩৫। জাতীয় স্তরে সুস্থতার হার ৯২.১১ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৫৯ হাজার ৮৫৬ জন।
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় ৬৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ৮টি রাজ্যে মৃত্যু হার ৮৪.৪৪ শতাংশ। শুধু মহারাষ্ট্রেই মারা গেছেন ২৯৭ জন। পাঞ্জাবে মৃত্যু হয়েছে ৬১ জনের।
দেশে ১১টি রাজ্য/কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুর খবর নেই। এই রাজ্য/কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির মধ্যে রয়েছে ওডিশা, লাদাখ, নাগাল্যান্ড, মেঘালয়, সিকিম, মণিপুর, আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ, অরুণাচল প্রদেশ প্রভৃতি। সূত্র – পিআইবি।