ভারতের ব্যাংকিং খাতে বড় পরিবর্তন, সেভিংস অ্যাকাউন্টের সুদের হারে পরিবর্তন।
ভারতের ব্যাংকিং ব্যবস্থায় বড়সড় পরিবর্তন আসতে চলেছে। সম্প্রতি ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক (RBI) রেপো রেট কমিয়ে ৬.২৫% করেছে। এর ফলে ঋণের সুদের হার হ্রাস পেতে পারে, তবে একই সঙ্গে সেভিংস অ্যাকাউন্টের সুদের হারও কমার সম্ভাবনা রয়েছে, যা সাধারণ গ্রাহকদের জন্য উদ্বেগের কারণ হতে পারে।
রেপো রেট ও তার গুরুত্ব
রেপো রেট হল সেই হার, যে হারে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলি RBI থেকে ঋণ নিয়ে থাকে। যখন RBI এই রেট কমায়, তখন ব্যাংকগুলির ঋণ নেওয়ার খরচ কমে যায়, যার ফলে গ্রাহকদের জন্য লোন সহজলভ্য এবং সস্তা হয়। তবে অনেক সময় ব্যাংকগুলি সেভিংস অ্যাকাউন্টের সুদের হারও কমিয়ে দেয়, যা আমানতকারীদের আয়ে প্রভাব ফেলে।
সেভিংস অ্যাকাউন্টের সুদের হারে পরিবর্তন
বর্তমানে বেশ কয়েকটি ব্যাংক তাদের সেভিংস অ্যাকাউন্টের সুদের হার পরিবর্তন করেছে। প্রধান ব্যাংকগুলির নতুন সুদের হার নিম্নরূপ:
• SBI (স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া): ১০ কোটির কম জমায় ২.৭০% ও ১০ কোটির বেশি হলে ৩% সুদ।
• ICICI ব্যাংক: ৫০ লাখ টাকার কম থাকলে ৩% ও তার বেশি হলে ৩.৫০% সুদ।
• ব্যাংক অফ বরোদা: সাধারণ গ্রাহকদের জন্য ২.৭৫% ও ৫০ কোটি টাকার বেশি থাকলে ৩% সুদ।
• PNB (পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংক): ১০ লাখ টাকার কম থাকলে ২.৭০% ও তার বেশি থাকলে ২.৭৫% সুদ।
• Kotak Mahindra ব্যাংক: ৫০ লাখ টাকার কম থাকলে ৩% ও তার বেশি হলে ৩.৫০% সুদ।
• HDFC ব্যাংক: ৫০ লাখ টাকার নিচে থাকলে ৩% ও তার বেশি হলে ৩.৫০% সুদ।
গ্রাহকদের উপর প্রভাব
1. সেভিংস অ্যাকাউন্টের আয় কমবে: সুদের হার কমার ফলে সেভিংস অ্যাকাউন্টে রাখা অর্থ থেকে কম মুনাফা পাওয়া যাবে।
2. ঋণের সুদের হার হ্রাস পেতে পারে: হোম লোন, গাড়ি লোন ও পার্সোনাল লোনের সুদ কমার সম্ভাবনা রয়েছে।
3. বিনিয়োগের ধরণ পরিবর্তন হতে পারে: অনেক গ্রাহক এখন ফিক্সড ডিপোজিট (FD) বা অন্যান্য বিনিয়োগের দিকে ঝুঁকতে পারেন।
সেভিংস অ্যাকাউন্টের সুদের হার কমে যাওয়ায় আমানতকারীরা কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও, ঋণগ্রহণকারীদের জন্য এটি সুবিধাজনক হতে পারে। যারা বেশি সুদ পেতে চান, তারা অন্যান্য বিনিয়োগ বিকল্প যেমন ফিক্সড ডিপোজিট বা মিউচুয়াল ফান্ডের দিকে নজর দিতে পারেন। সামগ্রিকভাবে, এই পরিবর্তন ভারতের ব্যাংকিং খাতকে একটি নতুন দিশা দেখাতে পারে।