খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, নয়াদিল্লিঃ প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বারাণসীতে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করেছেন। প্রধানমন্ত্রী আজ মোট ২২০ কোটি টাকার ১৬টি প্রকল্পের সূচনা করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, বারাণসীতে ৪০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৪টি প্রকল্পের কাজ চলছে।
আজ যে প্রকল্পগুলির সূচনা হয়েছে, সেগুলি হল – সারনাথের লাইট অ্যান্ড সাউন্ড শো, রামনগরে লালাবাহাদুর শাস্ত্রী হাসপাতালের মানোন্নয়ন, কয়েকটি পয়ঃনিষ্কাশন প্রকল্প, গোরক্ষা ও গো সংরক্ষণ পরিকাঠামোর মানোন্নয়ন, বহুমুখী বীজ গুদামঘর, ১০০ মেট্রিক টন ক্ষমতাসম্পন্ন কৃষি পণ্যের গুদাম, দ্বিতীয় পর্যায়ের আইপিডিএস, সম্পূর্ণানন্দ স্টেডিয়ামের খেলোয়াড়দের জন্য আবাসন, বারাণসী শহরের রাস্তার আলো, ১০৫টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র এবং ১০২টি গো-আশ্রয় কেন্দ্র।
প্রধানমন্ত্রী এই উপলক্ষে জানিয়েছেন, বারাণসী শহর ও সংলগ্ন অঞ্চলের উন্নয়নে পর্যটন একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তিনি বলেছেন, বারাণসী শহর প্রতিটি ক্ষেত্রে উন্নয়নের উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গঙ্গানদীর পরিচ্ছন্নতা, স্বাস্থ্য পরিষেবা, সড়ক পরিকাঠামো, পর্যটন, বিদ্যুৎ, যুবসম্প্রদায়ের খেলাধুলো, কৃষক – সকলের জন্যই উন্নয়ন নিশ্চিত করা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, গঙ্গা অ্যাকশন প্ল্যানের আওতায় শহরের পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার সংস্কারের কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। বিভিন্ন ঘাটের সৌন্দর্যায়ন, সিএনজি ব্যবহারের মাধ্যমে দূষণ হ্রাস, দশাশ্বমেধ ঘাটে ট্যুরিস্ট প্লাজার মতো বিভিন্ন পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ করা হয়েছে বলে শ্রী মোদী জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, গঙ্গানদীর জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যার ফলে কাশীতে নতুন নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। ঘাটগুলির পরিস্থিতি ক্রমশ উন্নতি হচ্ছে। গঙ্গার ঘাটগুলির পরিচ্ছন্নতা ও সৌন্দার্যায়নের পাশাপাশি, সারনাথ-ও নতুনভাবে সেজে উঠেছে। সারনাথে যে লাইট অ্যান্ড সাউন্ড শো-র আজ উদ্বোধন করা হ’ল – তার ফলে এখানকার আকার্ষণ আরও বৃদ্ধি পেল।
প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, আজ কাশীর বিপুল অংশে ঝুলে থাকা বিদ্যুতের তারের সমস্যা মিটেছে। মাটির তল দিয়ে তার বসানোর একটি বিরাট অংশের কাজ আজ শেষ হয়েছে। এর সঙ্গে, স্মার্ট এলইডি আলো শহরের রাস্তাগুলিকে শুধু আলোকিতই করবে না, সেগুলির সৌন্দর্যও বাড়াবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বারাণসী শহরে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটানো সরকারের অগ্রাধিকারের তালিকায় রয়েছে। নতুন নতুন পরিকাঠামো গড়ে তোলা হচ্ছে, যাতে কাশীর মানুষ ও পর্যটকদের যানজটের কারণে সময় নষ্ট না হয়। বাবতপুরের সঙ্গে শহরের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটানো হয়েছে। এর ফলে, বারাণসী শহর নতুন পরিচিতি পেয়েছে। বারাণসী বিমান বন্দরে যাত্রীদের ওঠার দুটি গুরুত্বপূর্ণ ব্রিজ আজ উদ্বোধন করা হয়েছে। ছ’বছর আগে বারাণসী বিমানবন্দরে প্রতিদিন ১২টি বিমান ওঠা-নামা করতো। আজ এই বিমানবন্দর থেকে দৈনিক ৪৮টি বিমান ওঠা-নামা করছে। তিনি বলেছেন, বারাণসীতে অত্যাধুনিক পরিকাঠামোর ফলে এখানে যাঁরা বাস করেন, তাঁদের জীবনযাত্রার যেমন সুবিধা হয়েছে, একই সঙ্গে যাঁরা এখানে বেড়াতে আসছেন, তাঁদেরও সুবিধা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, গত ছ’বছরে বারাণসীতে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য অভূতপূর্ব কাজ হয়েছে। আজ এই শহর শুধুমাত্র উত্তর প্রদেশের নয়, সমস্ত পূর্বাঞ্চলের স্বাস্থ্য পরিষেবা হাবে পরিণত হয়েছে। তিনি রামনগরে লালবাহাদুর শাস্ত্রী হাসপাতালের আধুনিকীকরণ সহ স্বাস্থ্য পরিষেবার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামোর কথা উল্লেখ করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বারাণসীতে আজ সার্বিক উন্নয়ন ঘটছে, যার ফলে পূর্বাঞ্চল সহ সমগ্র পূর্ব ভারত উপকৃত হচ্ছে। তিনি বলেছেন, এখন পূর্বাঞ্চলের জনসাধারণকে সামান্য কাজের জন্য আর দিল্লি বা মুম্বাই যেতে হয় না।
প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, বারাণসী ও পূর্বাঞ্চলের কৃষকদের জন্য আন্তর্জাতিক ধান প্রতিষ্ঠান, দুগ্ধ প্রক্রিয়াকরণ শিল্প, পচনশীল পণ্য পরিবহণ কেন্দ্র ইত্যাদি গড়ে উঠেছে। এর ফলে, কৃষকরা প্রভূত উপকৃত হচ্ছেন। এ বছর প্রথমবার বারাণসী থেকে ফলমূল, শাক-সব্জি ও ধান বিদেশে রপ্তানি হয়েছে। শ্রী মোদী জানিয়েছেন, আজ ১০০ মেট্রিক টন ক্ষমতাসম্পন্ন যে গুদামটির উদ্বোধন করা হয়েছে, তার ফলে কাশীর কৃষকরা খাদ্যশস্য মজুত রাখার ক্ষেত্রে উপকৃত হবেন। জানসায় বহুমুখী বীজ গুদামঘর কেন্দ্রও আজ চালু হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আত্মনির্ভর ভারত অভিযানে গ্রামের দরিদ্র মানুষ ও কৃষকরা সবচেয়ে বড় স্তম্ভ। এই অভিযানে তাঁরাই সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবেন।তিনি বলেছেন, সম্প্রতি কৃষি ক্ষেত্রে যেসব সংস্কার হয়েছে, তার ফলে কৃষকরা সরাসরি উপকৃত হবেন। মহামারী পরে রাস্তার হকাররা যাতে পুনরায় ব্যবসা শুরু করতে পারেন, তার জন্য প্রধানমন্ত্রী স্বনিধি যোজনার সূচনা করা হয়েছে, যাতে হকাররা সহজেই ঋণ পান।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, গ্রামে যেসব মানুষ থাকেন, তাঁদের জমি ও বাড়ির ওপর আইনি অধিকারের ব্যবস্থা করার জন্য স্বামীত্ব যোজনার সূচনা করা হয়েছে। এই প্রকল্পে সম্পত্তি কার্ড দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে, গ্রামে সম্পত্তি বিবাদের সমস্যা থাকবে না। তিনি আরও জানিয়েছেন, এখন থেকে গ্রামে বাড়ি বা জমির মাধ্যমে ব্যাঙ্ক ঋণ পাওয়া অনেক সুবিধা হয়ে গেছে।
প্রধানমন্ত্রী জনসাধারণকে দীপাবলি, গোবর্ধন পূজা ও ভাইফোটায় শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। দীপাবলিতে স্থানীয় পণ্য কেনার জন্য তিনি আহ্বান জানিয়েছেন এবং সকলের কাছে প্রস্তাব দিয়েছেন, স্থানীয় পণ্যের প্রচার বাড়াতে গর্বের সঙ্গে এগুলির ব্যবহার আরও বেশি করে করার জন্য। সূত্র – পিআইবি।