পশ্চিমবঙ্গে জল জীবন মিশনের রূপায়ণ পর্যালোচনা করেছে জল শক্তি মন্ত্রক

Published By: Khabar India Online | Published On:

খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, নয়াদিল্লিঃ পশ্চিমবঙ্গে জল জীবন মিশন (জেজেএম) –এর পরিকল্পনা এবং রূপায়ণ নিয়ে মধ্যবর্তী পর্যালোচনা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। জাতীয় জল জীবন মিশনের প্রতিনিধিদের সামনে রাজ্যে এই কর্মসূচীর অগ্রগতি পেশ করেন রাজ্যের আধিকারিকরা। পশ্চিমবঙ্গ সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ২০২৪ এর মধ্যে ১ কোটি ৬৩ লক্ষ গ্রামীণ বাড়ির সব জায়গায় নলবাহিত জল সংযোগের লক্ষ্য পূরণ করা হবে। পশ্চিমবঙ্গে ২২টি জেলা, ৩৪১টি ব্লক, ৪১,৩৫৭টি গ্রাম এবং ১ লক্ষ ৭০০০ জনবসতি আছে। ২০২০ – ২১এ নির্ধারিত লক্ষ্য ৫৫ লক্ষ ৫৮ হাজারের জায়গায় রাজ্য ২ লক্ষ ২০ হাজার নলবাহিত জল সংযোগ দিয়েছে।

নলবাহিত জল সংযোগের কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার ভিত্তিতে রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে জল জীবন মিশনের অধীনে অর্থ দেয় কেন্দ্রীয় সরকার।কেন্দ্রীয় সরকারের সমহারে অর্থ রাজ্য সরকার দেয় । ২০২০ – ২১এ পশ্চিমবঙ্গকে বরাদ্দ করা হয় ১৬১০.৭৬ কোটি টাকা। মিশনের অধীনে কাজের ভিত্তিতে উৎসাহ ভাতা দেওয়ার জন্য অতিরিক্ত অর্থও বরাদ্দ করা হয়ে থাকে। এছাড়া পশ্চিমবঙ্গ পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের অনুদান হিসেবে ৪৪১২ কোটি টাকা পাবে, যার ৫০ শতাংশ খরচ করতে হবে বাধ্যতামূলকভাবে জল এবং স্যানিটেশনে। পর্যালোচনা বৈঠকে মন্ত্রকের তরফে রাজ্যকে কেন্দ্রের অনুদান হারানো এড়াতে বরাদ্দ অর্থ পাওয়ার জন্য প্রাপ্ত অর্থ ব্যবহার করে ঠিক সময়ে লক্ষ্য পূরণের জন্য দ্রুত কর্মসূচি রূপায়ণের অনুরোধ করা হয়। । প্রতিটি বাড়িতে জল সংযোগের লক্ষ্য পূরণের প্রয়াসে রাজ্য সরকারকে সব রকম সাহায্য দিতে প্রস্তুত কেন্দ্রীয় সরকার।

আরও পড়ুন -  শিশুকন্যাকে যৌনপল্লিতে পাচারের অভিযোগ, স্কুলের প্রধান শিক্ষক গ্রেফতার, বাঁকুড়ার একটি স্কুলে

দীর্ঘ মেয়াদী পানীয় জল সরবরাহ ব্যবস্থা বহাল করতে চলতি পানীয় জলের উৎসকে জোরদার করার আবেদন জানানো হয় । এমজিএনআরইজিএস, জেজেএম, এবিএম (জি) পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের অনুদান ইত্যাদি কর্মসূচি মিলিয়ে তার মাধ্যমে প্রাপ্ত অর্থের সুব্যবহার করতে হবে রাজ্যকে। এই সমস্ত অর্থের ব্যবহার করতে গ্রামস্তরে লোকাল এরিয়া ডেভলপমেন্ট ফান্ড বা স্থানীয় এলাকা উন্নয়ন তহবিল এবং ৫ বছরের জন্য একটি ভিলেজ অ্যাকশন প্ল্যান (ভিএপি) প্রস্তুত করা প্রয়োজন। জনগণকে সচেতন করতে একটি কার্যকরী আইইসি অভিযান শুরু করার প্রয়োজনও রাজ্যের। রাজ্যকে আরো অনুরোধ করা হয় যে, গ্রামীণ সমাজের ক্ষমতায়ন করতে হবে কার্যকরী পরিকল্পনা এবং এই মিশনের জন্য। যাতে এই গ্রামগুলি ‘হর ঘর জল গাঁও’ হতে পারে।

আরও পড়ুন -  স্কুল চলাকালীন বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা এক স্কুল ছাত্রীর, ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য

পর্যালোচনা বৈঠকে লক্ষ করা হয় যে, রাজ্যের ৪১,৩৫৭টি গ্রামের মধ্যে ২২,৩১৯টিতে সরকারী জল সরবরাহ আছে। যার দ্বারা সংযোগ বাড়িয়ে বাকি বাড়িগুলিতেও প্রায় ১ কোটি নলবাহিত জল সংযোগ দেওয়া যেতে পারে। পশ্চিমবঙ্গে জল দূষণের সমস্যা রয়েছে, যার ফলে বাসিন্দারা স্বাস্থ্যের পক্ষে গুরুতর আশঙ্কার সম্মুখীন। রাজ্যের আরো ১০টি জেলায় আরো বড় ধরনের স্বাস্থ্য সঙ্কট যেমন জাপানী এনকেফেলাইটিস এবং অ্যাকিউট এনকেফেলাইটিস সিন্ড্রোম (জেই-এইএস) –এর সমস্যা রয়েছে যাতে আক্রান্ত ৪২ লক্ষ ৯৬ হাজার পরিবার। যার মধ্যে মাত্র ২ লক্ষ ৩৪ হাজার পরিবার (৫.৪ শতাংশ) জল সংযোগ পেয়েছে। রাজ্যে ১৫৬৬টি আর্সেনিক ও ফ্লুওরাইড আক্রান্ত জনবসতি আছে, যেখানে ২০২০’র ডিসেম্বরের মধ্যে নলবাহিত জল সরবরাহ করতে হবে। ২০২০’র দোসরা অক্টোবর সূচিত বিশেষ ১০০ দিনের অভিযানের অঙ্গ হিসেবে সব অঙ্গনওয়াড়ী কেন্দ্র, আশ্রমশালা এবং বিদ্যালয়ে নলবাহিত জল সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য রাজ্যকে অনুরোধ করা হয়। যাতে মিড-ডে মিলের রান্নার জন্য, হাত ধোওয়ার জন্য, খাওয়ার জন্য এই সব প্রতিষ্ঠানে পরিশ্রুত পানীয় জল পাওয়া যায়। এই অভিযান সরকারী প্রতিষ্ঠানগুলিতে সুরক্ষিত জল সরবরাহের সুবর্ণ সুযোগ এনে দিয়েছে। শিশুরা যাতে সুরক্ষিত জল পায়, তাদের স্বাস্থ্য ভালো হয় এবং সঠিক উন্নয়নের জন্য গড়ে ওঠে সেই লক্ষ্যই এই উদ্যোগ। সূত্র – পিআইবি।

আরও পড়ুন -  বারাদারকে ' ঘুষি ' মেরেছিলেন হাক্কানি, আলোচনার সময়