খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, নয়াদিল্লিঃ করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দেশের নাগরিকরা যেন কোনও শৈথিল্য না দেখান
লকডাউন উঠে গেলেও ভাইরাস চলে যায়নি
উদাসীনতা ও আত্মতৃপ্তির বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছেন
চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য করোনা যোদ্ধাদের জাতির প্রতি নিঃস্বার্থ সেবার প্রশংসা করেছেন
টিকা উদ্ভাবনের কাজ চলছে এবং দেশের প্রতিটি নাগরিক যাতে টিকা পান, সরকার সেই লক্ষ্যে কৌশল তৈরি করছে
আরোগ্যের হার দেশে বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং মৃত্যু হার কমছে : প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন। দেশে কোভিড মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কোনও আন্ততুষ্টির জায়গা নেই বলে উল্লেখ করে তিনি নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, তাঁরা যাতে এই যুদ্ধে কোনও রকম শৈথিল্য না দেখান।
শ্রী মোদী বলেছেন, লকডাউন উঠে গেলেও করোনা ভাইরাস চলে যায়নি। দেশের সর্বত্র পরিস্থিতির উন্নতি এবং আর্থিক কাজকর্ম স্বাভাবিক ছন্দে ফিরে আসায় তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। জনসাধারণ তাঁদের দায়িত্ব পালনে এখন বাড়ির বাইরে বেরোচ্ছেন।
প্রধানমন্ত্রী জানান, উৎসবের মরশুমের শুরুতে বাজারগুলি স্বাভাবিক হচ্ছে।
তিনি বলেছেন, গত ৭-৮ মাস ধরে প্রতিটি ভারতীয়র উদ্যোগের ফলে দেশ আজ ভালো অবস্থায় রয়েছে এবং অবস্থার অবনতি যাতে না হয়, সে ব্যাপারে সকলের সতর্ক থাকা উচিৎ।
তিনি বলেছেন, দেশে আরোগ্য লাভের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং মৃত্যু হার হ্রাস পাচ্ছে। প্রতি ১০ লক্ষ নাগরিক পিছু প্রায় ৫ হাজার ৫০০ জন সংক্রমিত হয়েছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রাজিলে এই সংখ্যা ২৫ হাজার।
তিনি বলেছেন, ভারতে প্রতি ১০ লক্ষ মানুষ পিছু ৮৩ জন মারা গেছেন। অথচ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল, স্পেন, ব্রিটেন সহ অনেক উন্নত দেশে এই সংখ্যা প্রায় ৬০০ ।
প্রধানমন্ত্রী উন্নত দেশগুলির সঙ্গে তুলনা করে এদেশের নাগরিকদের জীবন রক্ষার ক্ষেত্রে গৃহীত উদ্যোগে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
দেশের কোভিড পরিকাঠামোর উন্নতির কথা উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেছেন, করোনা সংক্রমিতদের জন্য ৯০ লক্ষেরও বেশি শয্যার ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়াও, দেশ জুড়ে ১২ হাজার কোয়ারেন্টাইন কেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে।
তিনি জানিয়েছেন, ২ হাজারেরও বেশি পরীক্ষাগারে করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে এবং খুব শীঘ্রই নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা ১০ কোটিরও বেশি ছাড়িয়ে হবে।
তিনি বলেছেন, সম্পন্ন রাষ্ট্রগুলির তুলনায় ভারত নাগরিকদের প্রাণ বাঁচানোর ক্ষেত্রে অনেকটাই সফল। দেশে নমুনা পরীক্ষার পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে কোভিড মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াই আরও শক্তিশালী হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী চিকিৎসক, নার্স এবং স্বাস্থ্য কর্মীদের নিঃস্বার্থভাবে বিপুল জনগোষ্ঠীর প্রাণ বাঁচানোর প্রয়াসের প্রশংসা করেছেন। এরা সকলেই ‘সেবা পরম ধর্ম’ – এই মন্ত্রে কাজ করে চলেছেন।
তিনি জনসাধারণকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, তাঁরা যাতে মনে না করেন, দেশে করোনার থেকে আর কোনও বিপদ নেই। এটাও না ভাবেন যে করোনা ভাইরাস চলে গেছে এবং এর জন্য উদাসীন না হয়ে পড়েন।
জনসাধারণকে সতর্ক করে তিনি বলেছেন, সতর্কতামূলক ব্যবস্থা তাঁরা যাতে মেনে চলেন, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। শ্রী মোদী বলেছেন, “যদি আপনারা অবহেলা দেখান, মাস্ক না পরে বেরোন, তা হলে আপনারা নিজেরা, আপনাদের পরিবার, আপনাদের শিশু এবং বাড়ির বয়স্ক মানুষদের বিপদে ফেলবেন”।
তিনি বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে প্রাথমিকভাবে করোনা সংক্রমণ কমে গেলেও হঠাৎ করে তা আবার বেড়ে যাচ্ছে।
যতদিন পর্যন্ত টিকা না আবিষ্কার হচ্ছে, ততদিন জনসাধারণকের সর্তক থাকতে হবে এবং কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কোনও ঢিলেমি দেওয়া চলবে না।
শ্রী মোদী বলেছেন, মানবজাতিকে রক্ষা করার জন্য যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ চলছে। আমাদের দেশ সহ অনেক দেশের বিজ্ঞানীরা টিকা উদ্ভাবনের জন্য উদ্যোগী হয়েছেন।
তিনি বলেছেন, করোনার মোকাবিলা করতে বিভিন্ন টিকা নিয়ে কাজ হচ্ছে। এর মধ্যে কয়েকটি টিকা চূড়ান্ত পর্যায়ে চলে এসেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, যখনই টিকা পাওয়া যাবে, তখনই যাতে প্রতিটি নাগরিক সেই টিকা পান, সরকার তার জন্য পরিকল্পনা করছে।
টিকা না আসা পর্যন্ত তাঁরা যাতে কোনও রকমের শৈথিল্য না দেখান তিনি জনসাধারণের প্রতি সেই আবেদন জানিয়েছেন ।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমরা সঙ্কটকালীন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে চলেছি এবং অসাবধান হলেই আমরা বড়সড় বিপদের সম্মুখীন হবো।
তিনি নাগরিকদের কাছে আবেদন জানিয়েছেন, তাঁরা তাঁদের দায়িত্ব পালনের সময় যেন সচেতন থাকেন।
৬ ফুট দূরত্ব বজায় রাখা, সাবান দিয়ে বারবার হাত ধোওয়া এবং ফেসমাস্ক পরা – এই বিধিগুলি মেনে চলার জন্য প্রধানমন্ত্রী অনুরোধ জানিয়েছেন । সূত্র – পিআইবি।