ইউক্রেনের জাতীয় পাওয়ার গ্রিড থেকে রুশ বাহিনীর দখলে থাকা জাপোরোজিয়া পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার সময় একটি তেজস্ক্রিয় বিপর্যয়ের সম্ভবনা সৃষ্টি হয়েছিল। বৃহস্পতিবার এক ভিডিও বার্তায় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এই তথ্য জানিয়েছেন।
শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বিবিসি, আলজাজিরা।
ভিডিও বার্তায় জেলনস্কি বলেন, বৃহস্পতিবার জাপোরোজিয়ার কাছে রাশিয়ার গোলা হামলায় সৃষ্ট অগ্নিকাণ্ডের কারণে উপর দিয়ে যাওয়া বৈদ্যুতিক লাইনক্ষতিগ্রস্ত হয়, বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। তিনি জানান, শুধু ব্যাক-আপ বিদ্যুৎ সংযোগ চালু হওয়ায় বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নিরাপদে পরিচালনা করা সম্ভব হয়েছে।
জেলনস্কি আরও বলেন, সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর ডিজেল জেনারেটরগুলো যদি চালু না হত, যদি এই স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি এবং বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির কর্মীরা সক্রিয় না হতেন তাহলে ইতোমধ্যে তেজস্ক্রিয় দুর্ঘটনার পরিণতি মোকাবেলা করতে হতো আমাদের।
ইউক্রেইনের রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক সংস্থা এনারজোটম জানিয়েছে, অগ্নিকাণ্ডে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির সঙ্গে সংযুক্ত লাইনগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় জাপোরিজিয়া বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির দুটি সক্রিয় ইউনিট নেটওয়ার্ক থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এই কেন্দ্রের ইতিহাসে এটিই এ ধরনের প্রথম ঘটনা।
জাপোরিজিয়া অঞ্চলের গভর্নর ওলেক্সান্ডার স্টারুখ টেলিভিশনে দেওয়া মন্তব্যে বলেছেন, রাশিয়া-অধিকৃত জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দুটি চুল্লিতে পুনরায় কাজ শুরু করার চেষ্টা শুরু করেছে।
আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) সতর্ক করে বলেছে, পারমাণবিক সুরক্ষার জন্য গ্রিড থেকে নিরাপদ অফ-সাইট বিদ্যুৎ সরবরাহ রাখা অপরিহার্য। তবে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও আশপাশের তেজস্ক্রিয় বিকিরণের মাত্রা স্বাভাবিক আছে।
বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির এই ক্ষয়ক্ষতির জন্য রাশিয়ার গোলাবর্ষণকে দায়ী করেছেন প্রেসিডেন্ট জেলনস্কি। ইউক্রেন ও ইউরোপকে বিপর্যয়ের মুখে নিয়ে যাওয়ার জন্য মস্কো দায়ী।
রাশিয়ার নিয়োগ করা স্থানীয় গভর্নর ইয়েভানু বলেৎস্কি ওই হামলার জন্য ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীরকে দায়ী করেছেন। ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর হামলাতেই ওই এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় বলে অভিযোগ করেছেন। ছবিঃ সংগৃহীত।