মালয়েশিয়ার প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও প্রাক্তন প্রদানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ বৃহস্পতিবার বলেছেন, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক সম্ভবত রাজকীয় ক্ষমা এবং দুর্নীতির দায়ে ১২ বছরের কারাদণ্ড থেকে মুক্তি পেতে চলেছেন।
বৃহস্পতিবার এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
২০১৮ সালের ঐতিহাসিক নির্বাচনে মাহাথিরের বিজয় নাজিবের পতনের কারণ হয়েছিল। মাহাথির বলেছেন, রাষ্ট্রীয় তহবিল ১মালয়েশিয়া ডেভেলপমেন্ট বারহাদ (ওয়ানএমডিবি) এ বহু-বিলিয়ন-ডলার দুর্নীতি কেলেঙ্কারি সম্পর্কিত বিচারে বিলম্বের ফলে ন্যায়বিচার অস্বীকার করা হবে। এটি তার রাজকীয় ক্ষমা পাওয়ারই ইঙ্গিত। তাকে ক্ষমা করা হবে বলে খুব বেশি সম্ভাবনা রয়েছে।
২০২০ সালে নাজিবকে প্রথম দোষী সাব্যস্ত করা হলেও তিনি উচ্চ আদালতে আপিল করেন। গত মঙ্গলবার, দেশের শীর্ষ আদালত তার চূড়ান্ত আপিল প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং তার ১২ বছরের জেল ও ২১০ মিলিয়ন রিঙ্গিত জরিমানা বহাল রেখেছে। এছাড়াও নাজিবের বিরুদ্ধে আরও তিনটি মামলা রয়েছে, যার প্রত্যেকটিতে জেল এবং ভারী আর্থিক জরিমানা করা হয়েছে।
এদিকে বাদশাহ আল-সুলতান আবদুল্লাহর প্রাসাদ, যেটি একদিন আগে নাজিবের অনুগতদের কাছ থেকে ক্ষমার আবেদন পেয়েছে বলে জানা গেছে। তবে মাহাথিরের মন্তব্যের বিষয়ে মন্তব্য করার অনুরোধে সাড়া দেয়নি সুলতানের প্রাসাদ।
নাজিবকে মালয়েশিয়ার রাজপরিবারের ঘনিষ্ঠ বলে মনে করা হয়, কিন্তু তার ক্ষমার আবেদনে সুলতানের প্রাসাদ কীভাবে সাড়া দেবে সে বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। এমনকি প্রধানমন্ত্রী ইসমাইল সাবরি ইয়াকব কীভাবে ক্ষমতাসীন ইউনাইটেড মালয়েস ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন (ইউএমএনও)-এর ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার ও পুরনো দলের নেতার জন্য ক্ষমাকে কীভাবে বিবেচনা করবেন তার কোনও লক্ষণ এখনও দেখা যায়নি৷
মালয়েশিয়ার সবচেয়ে দীর্ঘ মেয়াদী প্রধানমন্ত্রী ছিলেন মাহাথির, যখন তিনি ২২ বছর নেতৃত্বে থাকার পর ২০০৩ সালে প্রথম অবসর নেন। ২০১৩ সালের নির্বাচনের সময় তিনি নাজিব এবং ইউএমএনও-এর পক্ষে প্রচারণা চালান কিন্তু ওয়ানএমডিবি-তে দুর্নীতির মাত্রা প্রকাশ পেতে শুরু করায় তিনি তার দলের বিরুদ্ধে চলে যান।
২০১৮ সালে মাহাথির ইউএমএনও-এর নেতৃত্বাধীন জোটকে পরাজিত করেন। যা ছয় দশক আগে মালয়েশিয়া গঠনের পর প্রথমবারের মতো ক্ষমতা থেকে অপসারণ করেন।
এদিকে নাজিব কোনো অন্যায়ের কথা অস্বীকার করেছেন, এবং নিজেকে তার প্রাক্তন পরামর্শদাতার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হিসেবে উল্লেখ করেন। ছবিঃ সংগৃহীত।