ছেলের মা
লোপামুদ্রা কুন্ডু
রাত্রি যত দ্রবীভূত হয়
কত কত কথা স্মৃতির দরজা ঠেলে বেড়িয়ে আসে
তুই ভালো থাক আজ আর কাউকে বলার নেই,
ভালো থাকতেই খোকার প্লেন বোধহয় আকাশ ছুঁয়েছে এতক্ষণে
আমরাও একা বাঁচতে শিখে গেছি মা ছেলে
পূজো শেষে ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে পাড়া
আস্তে আস্তে
যেভাবে বিজয়া জানিয়ে দেয়
ফেরার সময় হয়েছে
একা আমি সন্ধ্যা হলে টিভি খুলে বসে যাই
রাতের খাবারের ব্যবস্হা করে
আকাশের খুব নীচু দিয়ে জোরে একটানা আওয়াজ
মাথার উপর দিয়ে মিলিয়ে যেতে থাকে দূরে…অনেক দূরে
নিঃস্তব্ধতা চুপ হয়ে বসে থাকে আমাকে ঘিরে
অবসাদের খুঁটিনাটি শরীর বেয়ে এগিয়ে আসে
একটা টিকটিকি জিভ বের করে
টেনে নেয় দ্রুত
উড়ন্ত পতঙ্গদের
মনে পড়ে, খুব মনে পড়ে তোর কথা এমন সময়
পেটে থাকতেই প্লেন গেলে তুই বড্ড চমকে উঠতিস
আর আমি তোর মাথায় গায়ে হাত বোলাতাম, বলতাম
‘ অনেক অনেক বড় হবি একদিন
বড় হলে খুব নীচু দিয়ে বিশাল যে প্লেনটা উড়ে যাবে
আমার খোকা তাতেই বিলেত যাবে’
তখন কি জানতাম
বয়স হলে ছেলেমেয়েদের
হাত চেপে ধরতে ইচ্ছে করে বেশি বেশি করে
হ্যা রে খোকা, বিলেতে মায়েরা ছেলেদের সাথে থাকে?
দেখা হয় মা ছেলের যখন যেভাবে ইচ্ছে?