বাঙালির মকর সংক্রান্তি এক শ্রেষ্ঠ উৎসব। গ্ৰেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী হিন্দুদের প্রধান উৎসবগুলির মধ্যে মকর সংক্রান্তি বছরের সর্বপ্রথম উৎসব। এটি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পালিত হয় তবে অঞ্চল ও জায়গা ভেদে মকর সংক্রান্তি পালনের নিয়ম নীতি কিছুটা ভিন্ন। কিন্তু তা সত্ত্বেও এই দিনের মাহাত্ম্য ভারতের যেকোনো প্রান্তে থাকা হিন্দুদের কাছে সমান। তবে মকর সংক্রান্তি কথাটির উৎপত্তি কোথা থেকে তা হয়তো অনেকেরই অজানা। চলুন আজ সেই মকর সংক্রান্তি কথাটির উৎপত্তি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
‘সংক্রান্তি’ কথাটির আক্ষরিক অর্থ হল গমন করা।এই বিশেষ মুহূর্তে সূর্য ধনু রাশি ত্যাগ করে গমন তথা প্রবেশ করেন মকর রাশিতে। হিসেব মতো মকর সংক্রান্তির দিন শেষ হয়ে যায় বাংলার পৌষ মাস এবং সূচনা হয় মাঘ মাসের।ফলে ধীরে ধীরে সূর্যের আলোকে প্রাণ ফিরে পায় রুক্ষ কঠিন ধরা৷এই কারণে পৌষ মাসের শেষ দিন পালিত হয় পৌষ সংক্রান্তি তথা মকর সংক্রান্তি।এই মকর সংক্রান্তিতে তিনটি মহাযোগ তৈরি হয়। যথা – ‘রোহিনী নক্ষত্রে সংক্রান্তি যোগ’, ‘ব্রহ্ম যোগ’ এবং সর্বশেষ হলো ‘আনন্দাদি যোগ’। এই তিনটি যোগ খুবই শুভ বলে মনে করা হয় হয়। যে কারণে এই দিন সূর্য দেবকে প্রসন্ন করা হয়।
কিন্তু আমরা সকলেই জানি যে সূর্য সর্বদা স্থির থাকে৷ পৃথিবী প্রতিমুহূর্তে সূর্যের চারিদিকে ঘুরছে। তাহলে সূর্যের কিভাবে উত্তর দিকে যাবে? আসলে ২৩ সেপ্টেম্বর জলবিষুব। এই দিন উত্তর গোলার্ধের সঙ্গে পৃথিবীর দূরত্ব ক্রমশ বাড়তে থাকে৷কর্কটক্রান্তি রেখার সীমানা পেরিয়ে সূর্য মকরক্রান্তি রেখার দিকে ক্রমশ হেলে পড়ে।ফলে সূর্যের দক্ষিণায়ন শুরু হয়৷ তাই আস্তে আস্তে তাপমাত্রা কমতে থাকে, শুরু হয় শীতের আমেজ।আবার পৌষ মাসের শেষ দিন মানেই বঙ্গজীবনে ফের উষ্ণতা বৃদ্ধির সূচনা।পৃথিবীর উত্তরায়ণ শেষ হলে দিন বড় হতে থাকে ছোট হতে থাকে রাত।মকর সংক্রান্তি চলে যাওয়া মানেই বিজ্ঞানের ভাষায় সূর্যের উত্তরায়ন শুরু৷