কলকাতা পুরভোট নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করল নির্বাচন কমিশন। আগামী ১৯শে ডিসেম্বর কলকাতায় হতে চলেছে পুরভোট। কলকাতার মোট ১৪৪টি ওয়ার্ডে হবে ভোটগ্রহণ। গণনা হবে ডিসেম্বরের ২১ তারিখ। নির্বাচনী আদর্শ আচরণবিধি জারি করা হয়েছে বৃহস্পতিবার থেকেই। তবে কলকাতা পুরভোট নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি হলেও হাওড়া পুরভোট নিয়ে এখনও কোনো বিজ্ঞপ্তি জারি করেনি কমিশন। মূলত, হাওড়া কর্পোরেশন থেকে বালি পুরসভাকে আলাদা করার জন্য পেশ করা বিলে এখনও স্বাক্ষর করেনি রাজ্যপাল। ফলে হাওড়ার পুরভোট এখনও অনিশ্চয়তার মুখে।
কমিশন সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার থেকেই মনোনয়ন পেশ করতে পারবেন প্রার্থীরা। মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ১লা ডিসেম্বর। ২রা ডিসেম্বর হবে স্ক্রুটিনি। প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করার শেষ দিন ৪ঠা ডিসেম্বর। ১৯শে ডিসেম্বর সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলবে ভোটগ্রহণ। ২১ ডিসেম্বর হবে গণনা। নির্বাচনী প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে ২২শে ডিসেম্বরের মধ্যেই।
সরকারের তরফে পুরভোটের প্রস্তাব পেশের পর থেকেই তীব্র বিরোধিতা শুরু করে বিজেপি। সোমবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে এই প্রসঙ্গে এক চিঠি দিয়ে বিজেপি প্রশ্ন তোলে, কেন সমস্ত পুরসভার বকেয়া নির্বাচন একসাথে হবে না? এমনকি, রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে তাঁরা জানান, শাসকদল নিজেদের ইচ্ছা মতো নির্বাচন করে মানুষের অধিকার নিয়ে খেলা করছে। দাবি মানা না হলে আইনি পথে যাওয়ার হুঁশিয়ারিও দেয় গেরুয়া শিবির। ফলত ইতিমধ্যেই হাইকোর্টের দ্বারস্থ রাজ্যের বিরোধী দল। এই প্রসঙ্গে প্রাক্তন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, “গোটা রাজ্যে ৪০% জায়গায় এই নির্বাচন হওয়ার কথা। কিন্তু সেই সব জায়গা বঞ্চিত করে রেখে শুধু কলকাতায় কেন? সব জায়গায় ভোট হওয়া দরকার। মানুষকে প্রতিনিধি নির্বাচনের সুযোগ দেওয়া হোক, যাতে উন্নয়ন ঠিকঠাক হয়”।
পুরভোট প্রসঙ্গে কংগ্রেস সাংসদ তথা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী জানান, “নির্বাচন যেন নির্বাচনের মতো হয়। নির্বাচন যেন প্রহসনে না পরিণত হয়। মানুষ যেন ভোট দিতে পারে। বিনা ভয়ে, বিনা ভীতিতে, বিনা সন্ত্রাসে। সরকারের কাছে এটাই আবেদন”। CPM নেতা সুজন চক্রবর্তীর এই প্রসঙ্গে বক্তব্য, “এটার যুক্তিটা কী? পাগলা দাশুর রাজত্ব চলছে। বাকিগুলোতে ভোট ঘোষণা করল না কেন? এই প্রশ্ন থাকবেই। নির্বাচন হবে আমরা লড়ব। লড়াইয়ের মতো পরিস্থিতি যেন থাকে”।
প্রসঙ্গত, নানা কারণের জেরে যথাসময়ে পুরভোট হয়নি রাজ্যে। তাই কলকাতার ১৪৪টি ওয়ার্ডে মেয়াদ শেষের পরেও কাউন্সিলরদেরই পুর-প্রশাসক পদে রাখা হয়। কলকাতা পুরসভার পুরপ্রশাসক পদে বর্তমানে রয়েছেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। মূলত, কোভিড পরিস্থিতি এবং বিধানসভা নির্বাচনের কারণে পুরভোটে আরও বিলম্ব হয়। এরপরেও পুরভোট নিয়ে বেশ কিছু জটিলতার সৃষ্টি হয়।