টুঙ্কা সাহা, আসানসোলঃ এবারের জল সমস্যা নিয়ে বিক্ষোভ অবরোধ করতে থাকা বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ল পঞ্চায়েতের উপপ্রধান।
রানীগঞ্জের বল্লভপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে বুধবার কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোর দিন এই বাড়ীর গৃহ লক্ষী রা বাড়ির লক্ষ্মী পূজোর আয়োজন কে সিকেয় তুলে জলের দাবিতে তিন ঘন্টা ধরে পথ অবরোধ কর্মসূচিতে শামিল হন। দুপুর 12 টা থেকে দুটো পর্যন্ত লাগাতার বিক্ষোভ অবরোধ চলতে থাকে শেষমেষ পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিক্ষোভকারীদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা চালালেও বিক্ষোভকারীরা তাদের বিক্ষোভ অনড় থাকেন, অবস্থা বেগতিক দেখে পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ওই এলাকায় জলের ট্যাঙ্কার নিয়ে জল পরিষেবা প্রদান করতে গেলে ট্যাংকারে করে আসা জল অপরিশোধ্য ও পর্যাপ্ত নয় নোংরা কালো জল বলে দাবি করে পঞ্চায়েতের উপপ্রধান এর দিকে ছুড়ে দিলে পঞ্চায়েতের উপপ্রধান বিক্ষোভকারীদের দিকে এগিয়ে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন, শেষমেষ পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপে স্বাভাবিক হয় পরিস্থিতি। বুধবার দুপুরে এই ঘটনাটি লক্ষ্য করা যায় রানীগঞ্জের বল্লভ পুর পঞ্চায়েতের নুপুর গ্রাম এলাকায়।
ঘটনা প্রসঙ্গে জানা যায় ঘূর্ণিঝড় গুলাব আসার পরপরই রাজ্যের অন্যান্য অংশের সাথেই খনি অঞ্চলের গ্রাম অঞ্চলে বেশ কয়েকটি অংশবিশেষ ভাবে প্রবাহিত হয় তারমধ্যে বল্লভপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নুপুর গ্রাম অন্যতম। এই গ্রামে প্রায় এক মাসের মত সময় কাল ধরে অপর্যাপ্ত জল আস্তে থাকায় গ্রামের ঠিকভাবে জলা আপূর্তি হয়নি এর ফলে বহু সমস্যায় পড়ে নুপুর এলাকার গ্রামীণেরা, লক্ষ্মী পুজোর দিনে সেই বিক্ষোভ চরম আকার নেয় পুজোর ব্যবস্থার আয়োজন করলেও জল পর্যাপ্ত না থাকায় ব্যাপক দূর্ভোগে পড়তে হয় এলাকার মানুষদের আর এই দুর্ভোগ চরমে ওঠায় নুপুর বাউরী পাড়া এলাকায় বল্লভপুর থেকে মদনপুর যাওয়ার রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে গ্রামীণেরা, তাদের এই বিক্ষোভের জেরে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে যাতায়াতের পথ।
আটকে পড়ে ওই রাস্তা দিয়ে যাত্রী পরিবহণ গাড়ি বাস। এই বিষয়ের খবর বল্লভপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান এর কাছে গেলে উপপ্রধান তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিক্ষোভকারীদের আশ্বস্ত করতে যান। বিক্ষোভকারীরা নুপুর কলোনি এলাকায় পর্যাপ্ত জল দেওয়া হচ্ছে ট্যাংকারে করে অথচ তাদের দেওয়া হচ্ছে না কেন এই দাবিতে সোচ্চার হলে পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ট্যাংকারে করে জল সরবরাহের উদ্যোগ নেন, তবে যে জল নিয়ে সরবরাহের উদ্যোগ নেয়া হয় তা অপরিশুদ্ধ অন্যরা রয়েছে এই দাবি করে ক্ষোভে ফেটে পড়ে তারা, কয়েকজন বিক্ষোভকারী গ্রামবাসী জল নিয়ে পঞ্চায়েতের উপপ্রধান এর দিকে ছুড়ে দিলে উপপ্রধান মুহূর্তে রাগ সংবরণ করতে না পেরে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। তবে ঘটনাস্থলে পুলিশের বিশাল বাহিনী মোতায়েন থাকায় মুহূর্তে সামাল দেওয়া হয় পরিস্থিতি। যদিও পঞ্চায়েতের উপপ্রধান বিষয়টি নেহাতই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ বলে নিজের দায় সেরেছেন, তার দাবি একটা ট্যাংকারে নোংরা জল চলে এসেছিল যা দেখেই উত্তেজনা ছড়ায় পরবর্তীতে জল খতিয়ে দেখে সরবরাহ করা হবে বলেই জানিয়েছেন উপপ্রধান সিধান মণ্ডল।
গ্রামবাসীদের দাবি দীর্ঘ একমাস জল না আসায় তাদের অসহায় অবস্থায় দিন গুজরান করতে হচ্ছে অবিলম্বে জল সরবরাহ স্বাভাবিক না হলে তারা আগামীতে আরও বৃহত্তর আন্দোলনে যাবেন বলেই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন এদিনের এই বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে। তবে এদিন বেলা আড়াইটে নাগাদ প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে পর্যাপ্ত জল গ্রামীণদের প্রদান করা হলে তাদের ক্ষোভ অনেকটাই প্রশমিত হয়।