মীর (Mir Afsar Ali) আক্ষেপ করেন, এত যুগ পরেও মানুষকে বোঝানো গেল না, ধর্ম যার যার নিজের কিন্তু উৎসব সকলের।
দুর্গাপুজো নিয়ে মুখ খুলে বারবার ধর্মীয় গোঁড়ামির শিকার হয়েছেন মীর। তিনি শৈশবের দুর্গাপুজোর অভিজ্ঞতার কথা সকলের সাথে শেয়ার করতেই তৈরি হয়েছে বিতর্ক। শৈশবের দুর্গাপুজো নিয়ে নস্টালজিক একটি ভিডিও শেয়ার করেছিলেন মীর। তাঁর মনে হয়েছিল, তাঁর এই ভাবনা অন্যান্য মানুষের মন ছুঁয়ে যাবে। তাঁরাও তাঁদের মা-বাবাদের সঙ্গে শৈশবের স্মৃতি রোমন্থন করবেন। কিন্তু সবকিছুই কেমন অন্যরকম হয়ে গেল। নিজের শেয়ার করা ভিডিওতে মীর বলেছিলেন, তাঁর শৈশবে নুন আনতে পান্তা ফুরোত।
কিন্তু তার পরেও প্রতি বছর পুজোয় তাঁর মা-বাবা নতুন জামা কিনে দিতেন তাঁকে। কিন্তু নিজেদের জন্য তাঁরা নতুন জামা কিনতে না। মীরের মনে প্রশ্ন জাগত, কেন প্রতি বছর শুধু তাঁর নতুন জামা হবে , কিন্তু বাবা-মার হবে না। মীরের বাবা সেদিন মীরকে বুঝিয়েছিলেন, মীর বড় হচ্ছেন, দৈর্ঘ্য-প্রস্থে বাড়ছেন। তাই তাঁর জন্য নতুন জামা কেনা হচ্ছে। কিন্তু মা-বাবার বৃদ্ধি আর হবে না। তাই তাঁদের নতুন জামা কেনার প্রয়োজন নেই। পরে বড় হতে হতে মীর উপলব্ধি করেছিলেন, একসঙ্গে তিন জনের পোশাক কেনার সামর্থ্য তাঁদের ছিল না। কিন্তু উৎসবের দিনগুলিতে তাঁকে বঞ্চিত করতে চাইতেন না তাঁর মা-বাবা।
মীরের শৈশবের পুজোর দিনের কথা জানতে পেরে তাঁর অনুরাগীরা নস্টালজিয়ায় ভেসে গেলেও কিছু মানুষ বা বলা যায় মানুষের চামড়াধারী প্রাণী তাঁকে ট্রোল করতে শুরু করেছিলেন। তাঁরা মীরের ধর্ম ও হিন্দুদের উৎসব নিয়ে কটাক্ষ করতে শুরু করেছিলেন। মীর বলেছেন, কিছু বিজ্ঞ মানুষ ধর্মের নামে জ্ঞান ফলাতে চলে এসেছেন। তাঁদের কাছ থেকে মীর একটিই শিক্ষা গ্রহণ করেছেন, তিনি মুসলমান। এছাড়া তাঁর অন্য কোনো পরিচয় নেই। মীরের মনে হচ্ছে, নিজের শৈশবের স্মৃতি সকলের সাথে ভাগ করে তিনি ভুল করেছেন। মানুষের উপর থেকে ধীরে ধীরে তাঁর বিশ্বাস সরে যাচ্ছে। মীরের এই বক্তব্য জানার পর এটাই জিজ্ঞাসা করতে ইচ্ছা করে, যাঁরা মীরের মতো মানুষকে কটাক্ষ করেছেন, তাঁরা কি সত্যিই ধর্মসহিষ্ণু দেশ ভারতবর্ষের অধিবাসী?