খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, নয়াদিল্লিঃ করোনা সংক্রমণের বিভিন্ন দিক এবং কোভিড-১৯ মহামারী সম্পর্কে জনগণকে প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান এবং সে বিষয়ে বিশ্লেষণ ও দৃষ্টিভঙ্গী ভাগ করে নিয়ে সাধারণ মানুষের ক্ষমতায়ণের জন্য গণমাধ্যম যে ভূমিকা পালন করেছে তার জন্য উচ্ছসিত প্রশংসা করেছেন উপরাষ্ট্রপতি তথা রাজ্যসভার চেয়ারম্যান শ্রী এম ভেঙ্কাইয়া নাইডু। এই মহামারীর বিরুদ্ধে চলমান লড়াইয়ে গণমাধ্যম যেভাবে সাধারণ মানুষের সামনে তৃণমূলস্তর থেকে নানা তথ্য তুলে ধরেছে তারজন্য গণমাধ্যম কর্মীদেরকে “সামনের সারির যোদ্ধা” হিসেবে অভিহিত করেছেন তিনি।
‘গণমাধ্যম : করোনার সময় আমাদের অংশীদার’ শীর্ষক এক ফেসবুক পোস্টে করোনা সংক্রমণের পরে গত কয়েক মাস ধরেই গণ মাধ্যম যে ভূমিকা পালন করে চলেছে সে সম্পর্কে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে আজ শ্রী নাইডু বলেন, ‘গণমাধ্যম এবং গণমাধ্যমের কর্মীরা যেভাবে তাদের কাজ করেছে তা প্রশংসনীয়।’ মহামারী মোকাবিলা করার জন্য সাধারণ মানুষকে অবহিত করা, শিক্ষিত করা এবং তাদের ক্ষমতায়ণ ও বিশ্বস্ত অংশীদার হিসেবে এই সংকটের সময় জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হয়ে উঠেছে গণমাধ্যম। তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ যখন বিপদে পড়ে তখন তারা এর কারণ ও পরিণতি এবং তার সময়কাল ও মোকাবিলার উপায় সম্পর্কে নানা তথ্য অনুসন্ধান করেন। তখন সাধারণ মানুষকে সে বিষয়ে তথ্য প্রদান করার দায়িত্ব কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার এবং গণমাধ্যমের ওপর এসে বর্তায়।
উপরাষ্ট্রপতি উল্লেখ করেন যে, ভাইরাসের বিস্তার রোধ ও এই রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য গণমাধ্যম একটি গুরুত্বপূর্ণ বাহক হয়ে ওঠেছে। এর পাশাপাশি মহামারীর ব্যাপারে দৃষ্টিভঙ্গী এবং তার মোকাবিলার প্রস্তুতি সম্পর্কে সাধারণ মানুষ ও সরকারের মধ্যে তথ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে গণমাধ্যম সেতু বন্ধনের কাজ করে চলেছে। তিনি আরও বলেন, এই মহামারীর বিভিন্ন দিক এবং সমাজের বিভিন্ন অংশে এর প্রভাব সম্পর্কে বিশ্লেষণাত্মক অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে সংসদীয় প্রতিষ্ঠানের সামনে এক বিতর্কের অ্যাজেন্ডা স্থির করে দিয়েছে।
মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ববিধি মেনে চলা, ঘন ঘন হাত ধোয়া, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত শরীরচর্চা ইত্যাদির মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধ গড়ে তোলার বিষয়ে গণমাধ্যম যেভাবে প্রচার চালিয়েছে সেকথাও উল্লেখ করেন তিনি।
এই কঠিন সময় সত্বেও জনগণ যেভাবে গণমাধ্যমের ওপর ভরসা রেখেছে তারও প্রশংসা করেন শ্রী নাইডু। বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কারণে অনেক ক্ষেত্রেই সংবাদ মাধ্যমের কর্মীদের বেতন ছাঁটা হয়েছে। তা সত্বেও গণমাধ্যমের কর্মীরা জনগণের ক্ষমতায়ণের লক্ষ্যে অটুট থেকেছে। তিনি বলেন, অনেক ক্ষেত্রেই খবরের কাগজ ঠিক মতো বন্টন ও বিক্রি না হওয়ার ফলে সংবাদ মাধ্যমের কর্মীদের সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছে। মুদ্রণ মাধ্যম সম্পর্কে শ্রী নাইডু বলেন, মুদ্রণ মাধ্যম নিবিড়ভাবে অনুসরণ করেন তিনি। এই মুদ্রণ মাধ্যমের বেশিরভাগ পাতা জুড়েই করোনা ভাইরাস মহামারী বিষয়ে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে সংবাদ পরিবেশনের বিষয়ে লক্ষ্য করা গেছে। আগ্রহী পাঠকদের তথ্য সরবরাহের জন্য রোগের বিভিন্ন দিক এবং এর প্রভাবগুলি সম্পর্কে বিশ্লেষণধর্মী লেখা এখনও অব্যাহত রয়েছে বলেও তিনি জানান। শ্রী নাইডু টেলিভিশনের কয়েকটি অনুষ্ঠানের বিষয় সম্পর্কে সতর্ক করে দেন। তিনি বলেন, বেশ কয়েকটি বৈদ্যুতিন মাধ্যম যেভাবে মানুষের মধ্যে উত্তেজনা, উদ্বেগ এবং আতঙ্ক সৃষ্টি করেছিল তা এড়ানো যেতে পারতো। এতে মানুষকে আরও বেশি অস্থির করে তুলবে। এই রোগ সম্পর্কে এবং এর নিরাময়ের বিষয়ে কোন তথ্য প্রমান ছাড়াই যেভাবে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন ভুয়ো খবর ছড়িয়ে পড়েছে এবং নেটিজেনরা বিভিন্ন বিভ্রান্তকর কাল্পনিক তথ্যের প্রচার চালাচ্ছেন তা এড়িয়ে যাওয়ারও পরামর্শ দেন তিনি।
শ্রী নাইডু মাস্ক পরে খবর পরিবেশন বা সংবাদ সংগ্রহ এবং পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি ফেরার কষ্টের মতো বাস্তব বিষয়টিকেও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, অনেকই এরজন্য প্রাণও হারিয়েছেন। গণ মাধ্যমের কর্মীকে সামনের সারির যোদ্ধা হিসেবে আখ্যা দিয়ে মিডিয়া ব্যক্তিত্বদের প্রতি শ্রদ্ধা এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান তিনি। উপরাষ্ট্রপতি বলেন, গণ মাধ্যম সংসদীয় প্রতিষ্ঠানের সামনে মহামারী মোকাবিলায় বিষয়ে বিতর্ক ও আলোচনার অ্যাজেন্ডা তৈরি করেছে। মহামারী মোকাবিলার বিষয়ে সংসদ প্রতিনিয়ত নজর রেখে চলেছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। শ্রী নাইডু উল্লেখ করেন বাজেট অধিবেশন শেষ হওয়ার বেশ কয়েকদিন আগে ২৩ মার্চ অধিবেশন স্থগিত রাখতে হয়। শ্রী নাইডু বলেন, তিনি এবং লোকসভার অধ্যক্ষ শ্রী ওম বিরলা সংসদীয় কমিটির সভা ও সংসদের বাদল অধিবেশন পরিচালনার বিষয় নিয়ে দফায় দফায় আলোচনা করেছেন। করোনা পরিস্থিতিতে কিভাবে সাংসদরা দূরত্ববিধি মেনে সংসদের ভিতরে সাংসদরা বসবেন সেবিষয়ে বিশদে আলোচনা ও পরিকল্পনা করার প্রয়োজন রয়েছে বলেও রাজ্য সভার চেয়ারম্যান জানান। সূত্র – পিআইবি।