খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, ওয়েবডেস্কঃ ঘড়ির কাঁটার সাথে তাল মিলিয়ে চলত জীবন। কিন্তু এই মারণরোগ করোনার প্রকোপে সবটাই যেন থমথমে। মানুষের সাথে শহরের যেন বিচ্ছেদ ঘটেছে। সদাব্যস্ত জীবনের ছবি অতটা দেখা না গেলেও একেবারে বিরতি কিন্তু হয়নি। বাড়িতে বসেই চলছে ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’. আর এই ওয়ার্ক ফ্রম হোম আপনার অজান্তেই ইনসমনিয়ার কারণ উঠছে। একে তো করোনা ভাইরাস নিয়ে দুশ্চিন্তা, তার উপর বাড়ির যাবতীয় কাজ।
সাথেই পাল্লা দিয়ে চলছে আপনার কর্মক্ষেত্রের কাজও। বাড়িতে থেকেও বিশ্রামের সময় মিলছে না। কিন্তু এই কায়িক পরিশ্রম কখনোই আপনার আগের কর্মব্যস্ত জীবনকে পাল্লা দিতে পারবে না। একটা দিনের সমস্তটা যখন একটা নির্দিষ্ট রুটিন মেনে হয় তখন জীবনটাও সহজ হয়, সাথে দূর হয় ইনসমনিয়াও। কিন্তু এখনকার এই অগোছালো দিনগুলো সবকিছু যেন আরো কঠিন করে দিচ্ছে। তাই সবার আগে উচিত- নিজের পুরানো রুটিন মেনে চলা। যে কাজ যে সময়ে করতেন তা এখনো সেই ভাবেই করা। দুপুরে ঘুমের অভ্যাস ত্যাগ করা। সাথে খাবার ও রাতের ঘুমের সময় ধার্য করা। যাঁরা ওয়ার্ক ফ্রম হোম করছেন, তাদের ক্ষেত্রে রাতে ঘুম না আসার এক প্রবল প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। ১০ জনের মধ্যে ৭ জন ভুগছেন নিদ্রাহীনতায়। স্লীপ সিডিউল পাল্টানোর সাথে সাথে শুরু করতে পারেন এক্সারসাইজ। আর যদি আর্লি টু বেড, আর্লি টু রাইজ-এর ফর্মুলা মেনে যদি পারেন এবং সকালের রোদ গায়ে মেখে ব্যায়াম করতে পারেন তাহলে তো কথাই নেই ! সম্ভব হলে ব্যালকনি বা ছাদে করতে পারেন এক্সারসাইজ। ভোরের রোদ আমরা অনেকেই ভুলে গেছি আজ, কিন্তু এই রোদ আমাদের শরীরে মেলাটোনিন হরমোন লেভেল বজায় রাখে। আর তা আমাদের ঘুমকে করে স্বাভাবিক।
ক্যালোরি বার্ন হওয়ার সাথে সাথে রৌদ্রোজ্জ্বল দিন আপনার মুডকেও করবে ফ্রেশ। আর বাড়িতে বসে কাজের ক্ষেত্রে একটা বিষয় মাথায় রাখা খুব জরুরি, আর সেটা হল ওয়ার্কপ্লেস। এমন অনেকেই আছেন যাঁরা বিছানায় বসে কাজ করেন, কিন্তু তাঁরা হয়তো এটা জানেন না আমাদের মস্তিস্ক বিছানার সঙ্গে ঘুমের সম্পর্ক আছে বলেই মনে করে। অবসাদ দূরে রেখে কাজে মনোনিবেশ করার অব্যর্থ উপায় হল বিছানা ছেড়ে ঘরের অন্য কোনো অংশে ওয়ার্ক কর্নার তৈরী করা। একেই করোনা আতংকে মানুষ চিন্তিত তার মধ্যে যদি ঘুম চিরবিদায় চায় তবে তো অসুস্থতা আসবেই। তাই কাজ ও ঘুমের জায়গা না গুলিয়ে আলাদাভাবে করুন, এতে মস্তিস্কও বিভ্রান্ত হবে না, মানুষও না! স্ট্রেস ফ্রি লাইফ এখন সোনার পাথরবাটির মতোই কাল্পনিক। স্ট্রেস তো থাকবে কর্মজীবনে, কিন্তু ঘুমোতে যাওয়ার আগে মানুষের উচিত স্ট্রেসকে যতটা সম্ভব কম সঙ্গে করে নিয়ে যাওয়া। দুশ্চিন্তা নয়, রিল্যাক্স হয়ে ঘুমোতে যান। আর ঘুমোনোর আগে কিছু ব্রিদিং এক্সারসাইজ ঘুম আসতে সাহায্য করবে, করতে পারেন নিয়ম করে। ত্যাগ করতে হবে গ্যাজেট নির্ভরশীলতা। রাত জাগার অভ্যাস উল্টে ঘুম না আসার কারণ হয়ে যায়। এই লকডাউনের সময় প্রত্যেকের উচিত নিজেদের শরীরের খেয়াল রাখা। ল্যাপটপ ছাড়া প্রায় সব মানুষেরই এখন সারাদিনের সঙ্গী মোবাইল ফোন, টেলিভিশন। ঘুমোতে যাওয়ার আগে ফোনের ব্যবহার যথেষ্ট ক্ষতিকারক।