শিয়ালদহ লোকাল ট্রেনে বড় সুখবর, ভিড় কমাতে আসছে একাধিক আধুনিক সুবিধা।
ঘণ্টার পর ঘণ্টা গাদাগাদি করে ট্রেনে উঠতে হয়—এই অভিজ্ঞতা কলকাতার লোকাল ট্রেনযাত্রীদের কাছে নতুন কিছু নয়। তবে সেই ক্লান্তিকর দৃশ্য এবার অতীত হতে চলেছে। ভারতীয় রেল জানিয়েছে, শিয়ালদহ সহ দেশের একাধিক ব্যস্ত লোকাল রুটে ভিড় কমাতে আনা হচ্ছে চমকে দেওয়া আধুনিক পরিষেবা।
কী থাকছে নতুন ব্যবস্থায়?
ভারতীয় রেলের তরফে জানানো হয়েছে, পরীক্ষামূলকভাবে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি রেল জোনে নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপগুলি হল—
• যাত্রীচাপ বেশি এমন রুটে ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো
• পিক-আওয়ারে চালু হচ্ছে বিশেষ লোকাল ট্রেন
• বাড়ানো হচ্ছে ট্রেনের ফ্রিকোয়েন্সি
• অতিরিক্ত কোচ সংযুক্ত করা হচ্ছে লোকাল ট্রেনে
• বড় করা হচ্ছে প্ল্যাটফর্ম ও নির্মাণ হচ্ছে নতুন ফুট ওভারব্রিজ
• উন্নত প্রযুক্তির সিগন্যালিং সিস্টেমে আপগ্রেড।
রেলের তরফে জানানো হয়েছে, এই ব্যবস্থাগুলি চালুর ফলে ইতিমধ্যেই কিছু অঞ্চলে প্রায় ২০–৩০ শতাংশ পর্যন্ত যাত্রীর ভিড় কমানো সম্ভব হয়েছে।
ফলাফল: কমেছে অপেক্ষা, বেড়েছে আরাম
প্রাথমিক ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, এই নতুন ব্যবস্থায় যাত্রীরা তুলনামূলক কম সময় অপেক্ষা করছেন ট্রেনের জন্য। সময়ানুবর্তিতাও আগের চেয়ে অনেক উন্নত হয়েছে। পাশাপাশি যাত্রা হয়েছে অনেক বেশি আরামদায়ক।
একটি জাতীয় পর্যবেক্ষক কমিটি এই প্রকল্পের কার্যকারিতা পর্যবেক্ষণ করছে। ফল ভাল হলে দেশজুড়ে ধাপে ধাপে এই মডেল রূপায়ণ করা হবে।
ভবিষ্যতের রেল পরিষেবা আরও আধুনিক
রেল দফতর শুধু ট্রেন বাড়ানোর দিকেই মন দিচ্ছে না। পাশাপাশি ডিজিটাল টিকিটিং, স্মার্ট ডিসপ্লে বোর্ড, CCTV-সহ নিরাপত্তা ব্যবস্থাতেও আনা হচ্ছে বড় আপগ্রেড। ভবিষ্যতে দেশের প্রায় সব মেট্রোপলিটন শহরের উপনগর রেল নেটওয়ার্কেই এই সুবিধা পাওয়া যাবে।
যাত্রীদের সাধারণ কিছু প্রশ্নের উত্তর
➤ এই ব্যবস্থা কবে চালু হচ্ছে?
ইতিমধ্যেই কিছু রুটে চালু হয়েছে। ধাপে ধাপে আরও জায়গায় চালু হবে।
➤ কোন কোন রুটে পাওয়া যাবে এই পরিষেবা?
সফল পরীক্ষার পর খুব শীঘ্রই কলকাতা, মুম্বই, চেন্নাইয়ের মত শহরেও আসছে এই পরিষেবা।
➤ এতে যাত্রীদের লাভ কী?
কম ভিড়ে আরামে যাতায়াত, সময় বাঁচবে, বেশি ট্রেনের সুবিধা মিলবে।
➤ নতুন ট্রেন ও কোচ কোথা থেকে আসবে?
নতুন ট্রেন তৈরির বরাত ইতিমধ্যেই দেওয়া হয়েছে। পুরনো কোচগুলিও আধুনিকীকরণ হচ্ছে।
➤ এই প্রকল্পে খরচ কত?
এখনও নির্দিষ্ট বাজেট জানানো হয়নি। তবে এটি একটি বহু পর্যায়ে বিনিয়োগকেন্দ্রিক প্রকল্প।
রেলের এই উদ্যোগ যে দীর্ঘদিনের ভোগান্তির অবসান ঘটাতে চলেছে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। নতুন এই ব্যবস্থা সত্যিই যাত্রীদের হাঁফ ছাড়ার মতো স্বস্তি দেবে বলেই আশা করা হচ্ছে।