Bajaj Platina 135: বাজাজ প্লাটিনা ১৩৫, অতীতের জনপ্রিয় মডেলের স্মৃতিচারণ।
ভারতের ব্যস্ত সড়কগুলিতে দুই চাকার যানবাহনের আধিপত্যে একসময় বাজাজ প্লাটিনা ১৩৫ নিজের জন্য বিশেষ জায়গা তৈরি করেছিল। সাধারণ কমিউটার বাইকের তুলনায় কিছুটা বড় ইঞ্জিনের সংযোজন, কার্যকারিতা এবং গতির মধ্যে এক নতুন সমন্বয় গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছিল এই মডেল।
উত্থান: শক্তিশালী কমিউটারের প্রয়োজন
২০০০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে, পালসার সিরিজের সাফল্যের পর বাজাজ একটি শক্তিশালী কমিউটার বাইকের চাহিদা অনুভব করে। সেই ধারাবাহিকতায়, ১৩৪.৬ সিসি ইঞ্জিন সমৃদ্ধ প্লাটিনা ১৩৫ বাজারে আসে, যা পারফরম্যান্স এবং জ্বালানি দক্ষতার মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করেছিল।
প্রযুক্তির সংযোজন
প্লাটিনা ১৩৫-এ বাজাজের উন্নত DTS-i (ডিজিটাল টুইন স্পার্ক ইগনিশন) প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছিল, যা জ্বালানি দক্ষতা বাড়িয়ে দূষণ কমাতে সাহায্য করেছিল। এছাড়াও, এক্সহসটেক প্রযুক্তি শহরের ব্যস্ত ট্রাফিকে স্মুথ রাইডিংয়ের সুবিধা দিয়েছিল, যা চালকদের জন্য ছিল বেশ উপযোগী।
আরামের প্রতিশ্রুতি
প্লাটিনা ১৩৫-এর অন্যতম আকর্ষণ ছিল এর আরামদায়ক রাইডিং অভিজ্ঞতা। স্প্রিং-ইন-স্প্রিং (SNS) সাসপেনশন, প্রশস্ত আসন এবং খাড়া রাইডিং পজিশনের কারণে এটি দীর্ঘ ভ্রমণের জন্য আদর্শ ছিল। শহর কিংবা হাইওয়ে – সবখানেই এটি স্বাচ্ছন্দ্য এনে দিয়েছিল।
বাজার প্রতিক্রিয়া ও প্রতিযোগিতা
প্রথম দিকে প্লাটিনা ১৩৫ বেশ ভালো জনপ্রিয়তা পায়। তবে, বাজাজের নিজস্ব ডিসকভার সিরিজ এবং হোন্ডা-হিরোর ১২৫ সিসি বাইকগুলোর প্রতিযোগিতায় এটি কিছুটা পিছিয়ে পড়ে। পাশাপাশি, ভারতীয় বাজারে স্কুটারের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাওয়ায় এই মডেলের চাহিদা কমতে শুরু করে।
অবসানের পথে
বাজারের পরিবর্তনের সাথে তাল মিলিয়ে বাজাজ তাদের ছোট প্লাটিনা মডেল এবং পালসার সিরিজের উন্নয়নে মনোযোগ দেয়। এর ফলে, ধীরে ধীরে প্লাটিনা ১৩৫ উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায় এবং ২০২০ সালের মধ্যে এটি সম্পূর্ণরূপে বাজাজের লাইনআপ থেকে বাদ পড়ে।
ভবিষ্যতের সম্ভাবনা
বর্তমানে বৈদ্যুতিক যানবাহনের যুগে প্রশ্ন জাগে – বাজাজ কি ভবিষ্যতে বৈদ্যুতিক প্লাটিনা ১৩৫ নিয়ে আসবে? যদি কখনো এই মডেল ফিরে আসে, তবে কি এটি তার পূর্বসূরির সাফল্য ধরে রাখতে পারবে?
যদিও বাজাজ প্লাটিনা ১৩৫ এখন আর বাজারে নেই, এটি ভারতীয় মোটরসাইকেল শিল্পের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হয়ে থাকবে। যারা এটি চালিয়েছেন, তাদের কাছে এটি শুধু একটি কমিউটার বাইক নয়, বরং এক অনন্য অভিজ্ঞতার স্মারক।